Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সিলেটের বিশ্বনাথে ঐতিহ্যবাহী ‘পলো বাওয়া’ উৎসব

হাবিবুর রহমান, সিনিয়র ফটোকরেসপন্ডেন্ট
১৭ জানুয়ারি ২০২১ ২১:০১

সিলেট থেকে ফিরে: মাঘের শুরুতে বিলের পানি কমে গেলে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার বিভিন্ন বিলে ঘটা করে আয়োজন করা হয় ‘পলো বাওয়া’ উৎসবের। শনিবার (১৬ জানুয়ারি) জেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের গোয়াহরি গ্রামের দক্ষিণের বিলে এ ‘পলো বাওয়া’ উৎসবের আয়োজন করা হয়।

পানিতে নামার আগে

এদিন শীত উপেক্ষা করে শত শত মানুষ বাঁশ আর বেতের তৈরি পলো, উড়াল, চিটকি ও ঠেলাজাল নিয়ে মাছ শিকারে নেমে পড়েন। একসঙ্গে মাছ ধরার প্রস্তুতি থেকে শিকারে শেষে ফিরে যাওয়া পর্যন্ত চলে উৎসবের আমেজ। যা তাদের দীর্ঘদিনের সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যের অংশ হয়ে গেছে।

চলছে মাছ ধরার প্রতিযোগিতা

উৎসবের দিন সকাল থেকেই পড়ে যায় সাজ সাজ রব। নির্ধারিত স্থানে সমবেত হতে থাকেন শখের মৎস্য শিকারীরা। শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধরাও অংশ নেন মাছ ধরার উৎসবে।

অপেক্ষা

সবাই হাজির হলে, পলো নিয়ে একযোগে পানিতে নেমে পড়েন শিকারীর দল। এরপর ঝপ ঝপ শব্দের তালে চলতে থাকে মাছ শিকার। দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা ধরে চলে পলো বাওয়া। অনেকে উৎসুক জনতাও সেখানে হাজির হন শুধু মাছ ধরা দেখতে।

সৌখিন শিকারীদের পলোতে ধরা পড়ে বোয়াল, রুই, কাতল, শোল, গজার ও কালবাউশ। অনেকে আবার জাল দিয়ে ধরে ঘোলা জলের ওপরে ভেসে ওঠা টেংরা-পুঁটি।

মাছ শিকারে খুশি দুই বন্ধু

গ্রামবাসীরা জানান, গোয়াহরি গ্রামের একটি ঐতিহ্য পলো বাওয়া উৎসব। অনেক বছর আগে থেকে এই উৎসব পালন করে আসছেন গোয়াহরি গ্রামবাসী। এলাকার সম্মিলিত সিদ্ধান্তে পুরো একবছর বিল থেকে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকে। এর ফলে সেখানে বিভিন্ন জাতের মাছ জন্মে। কয়েক মাসে সেগুলো আরও বড়ো হওয়ার সুযোগ পায়।

পলো ছাড়াও ঠেলাজাল নিয়ে মাছ ধরতে নামেন অনেকে

পলো উৎসবের এক সপ্তাহ আগে পঞ্চায়েতের সভা ডেকে সৃঙ্খলা রক্ষায় নেওয়া হয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। সভার পরপরই উসৎসবের মতো করে গ্রামের ঘরে ঘরে পলো তৈরি, মেরামত ও সংগ্রহের কাজ শুরু হয়। এরপর নির্ধারিত দিনে আনুষ্ঠানিকভাবে একসঙ্গে মাছ শিকারে নামেন এলাকাবাসী।

বাড়ি ফেরা…

এবারের পলো বাওয়া উৎসবকে কেন্দ্র করেও গোয়াহরি গ্রামে গত কয়েকদিন ধরে উৎসবমূখর পরিবেশ রিবাজ করছিল। আগামী পনের দিন প্রতি রবি ও বৃহস্পতিবার বিলে হাত দিয়ে মাছ ধরা চলবে। তবে কেউ চাইলে ছোট ছোট জাল (হাতা জাল) দিয়েও মাছ ধরতে পারবেন।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলায় এটিই সবচেয়ে বড় পলো বাওয়া উৎসব। যুগযুগ ধরে সেখানে এ পরম্পরা চলে আসছে। সামনেও বহু বছর এই পলো বাওয়া উৎসব টিকে থাকবে, সেই প্রত্যাশাও গ্রামবাসীর।

সারাবাংলা/এমআই

টপ নিউজ পলো বাওয়া উৎসব মাছ ধরা


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর