৯টি স্থলবন্দরে রাসায়নিক পরীক্ষাগার বসছে— আদালতে প্রতিবেদন
১৭ জানুয়ারি ২০২১ ২৩:৪২
ঢাকা: দেশের ৯টি স্থলবন্দরের কাস্টমস স্টেশনে অবকাঠামোগত উন্নয়নের অংশ হিসেবে প্রতিটিতে একটি করে রাসায়নিক পরীক্ষাগার স্থাপনের কাজ চলছে বলে হাইকোর্টকে জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ফল আমদানিতে রাসায়নিকের মাত্রা পরীক্ষার জন্য বিভিন্ন বন্দরে রাসায়নিক পরীক্ষাগার ইউনিট (কেমিক্যাল টেস্টিং ইউনিট) বসাতে হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়নের বিষয়ে এনবিআরের দেওয়া এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের ৯টি স্থলবন্দরের কাস্টমস স্টেশনে এসব রাসায়নিক পরীক্ষাগার স্থাপনের বিষয়ে একমত হয়েছে এনবিআর ও এডিবি। বন্দরগুলো হলো— ভোমরা, বুড়িমারি, হিলি, বাংলাবন্ধা, সোনা মসজিদ, শ্যাওলা, তামাবিল, বিবিরবাজার ও টেকনাফ। এছাড়া ঢাকায় একটি কেন্দ্রীয় পরীক্ষাগার (সেন্ট্রাল ল্যাবরেটরি) তৈরির লক্ষ্যে গঠিত কমিটি ডিপিপি প্রণয়নের কাজ করছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে এডিবির টেকনিক্যাল টিমের যাতায়াত ছয়-সাত মাস বন্ধ ছিল। এতে তাদের ফিজিবিলিটি টেস্টের কাজ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। তবে বর্তমানে ফের পুরোদমে কাজ শুরু হয়েছে।
প্রতিবেদন পাওয়ার কথা রোববার (১৭ জানুয়ারি) নিশ্চিত করেছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
এর আগে, দেশের বিভিন্ন স্থল ও নৌবন্দরের মাধ্যমে বিভিন্ন রাসায়নিক কেমিক্যালযুক্ত ফল আমদানি রোধের জন্য ২০১০ সালে মনজিল মোরসেদ রিট পিটিশন দায়ের করেন। এ রিট পিটিশনের আলোকে ২০১২ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি দেশের সব স্থল ও নৌবন্দরে ছয় মাসের মধ্যে কেমিক্যাল টেস্ট ইউনিট স্থাপন এবং আমদানি করা সব ফলের কেমিক্যালমুক্ততা নিশ্চিত হয়ে দেশে প্রবেশের ব্যবস্থা করার জন্য এনবিআর চেয়ারম্যানকে নির্দেশনা দেন। এরপর আদেশের ধারাবাহিকতায় হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়নের বিষয়ে এনবিআরের কাছে ব্যাখ্যা জানতে চান আদালত। পরে সে অনুযায়ী এ প্রতিবেদন দেওয়া হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অধীনে দেশের ছয়টি কাস্টম হাউজ ও ১৪টি শুল্ক স্টেশনের মাধ্যমে ফল আমদানির সুযোগ রয়েছে। এগুলোর মধ্যে চট্টগ্রাম, ঢাকা ও বেনাপোল দিয়ে বেশিরভাগ ফল আমদানি করা হয়। এদিকে, চট্টগ্রাম ও বেনাপোলে রাসায়নিক পরীক্ষাগার রয়েছে। চট্টগ্রামে আমদানি করা ফল রাসায়নিক পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করা হয়ে থাকে এবং আমদানি নীতি আদেশ পালন করে চালান খালাস করা হয়। অন্যান্য কাস্টম হাউজগুলোতে আমদানি করা ফল কৃষি মন্ত্রণালয়ের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ অফিসের মাধ্যমে রাসায়নিক পরীক্ষা শেষে খালাস করা হয়।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় এ পরীক্ষা করতে এডিবির আর্থিক সহযোগিতায় ঢাকায় একটি সেন্ট্রাল ল্যাবরেটরি তৈরির প্রস্তাব রয়েছে। এ লক্ষ্যে গঠিত কমিটি ডিপিপি প্রণয়নের কাজ করছে। ডিপিপির কাজ শেষ হলে জমি অধিগ্রহণের প্রাথমিক কাজ শুরু হবে।
১৪টি স্থল কাস্টমস স্টেশনের মধ্যে ভোমরা, বুড়িমারি, হিলি, বাংলাবন্ধা, সোনা মসজিদ, শ্যাওলা, তামাবিল, বিবিরবাজার ও টেকনাফের মাধ্যমে ফল আমদানি হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ফরমালিন টেস্ট করা হয়। এই ৯টি স্টেমনে অবকাঠামোগত উন্নয়নে এডিবি অর্থায়নে রাজি হয়েছে। এর অংশ হিসেবে প্রতিটিতে একটি করে রাসায়নিক পরীক্ষাগার স্থাপন করা হবে।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
সারাবাংলা/কেআইএফ/টিআর
এনবিআর রাসায়নিক পরীক্ষাগার স্থলবন্দরে রাসায়নিক পরীক্ষাগার হাইকোর্টে প্রতিবেদন