ঠাকুরগাঁওয়ে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আলু চাষ, দাম নিয়ে শঙ্কায় কৃষক
১৯ জানুয়ারি ২০২১ ০৮:৩৯
ঠাকুরগাঁও: গতবছর বাজারে দাম বাড়ায় এবার চাষিরা ঝুঁকেছেন আলু চাষে। ফলে অন্য যেকোনো বছরের তুলনায় এবছর ঠাকুরগাঁওয়ে ব্যাপক আলুর চাষ হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রাও ছাড়িয়ে গেছে— ফলে মৌসুমে আলুর দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকেরা।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, অতীতে ঠাকুরগাঁও জেলায় ৬-৭ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে আলু আবাদ হয়নি। তবে গতবছর ২৫ হাজার ১২৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছিল। এবার জেলায় লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২৫ হাজার ৫৯১ হেক্টর। তবে কৃষক যে হারে আলুর চাষ করেছেন তাতে আলুর আবাদ ৩০ হাজার হেক্টর ছাড়িয়ে গেছে।
এখন আলু ক্ষেতের পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষীরা। গত বছর যে জমি ৬ হাজার টাকায় কন্ট্রাক নেওয়া যেতো, সে জমি এবার ১৪ হাজার টাকা দিয়েও মিলছে না।
আক্চা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা দত্তেশ্বর রায় বলেন, ‘গত বছর আলুর আবাদ করেছিলাম তিন বিঘা জমিতে। লাভও হয়েছিল ৩ গুণ। এবার আলু লাগিয়েছি ৪ বিঘা ১০ কাঠা জমিতে। আলুচাষের জন্য আবহাওয়াও ভালো রয়েছে। আশা করা যাচ্ছে উৎপাদনও ভালো হবে।’ তবে চাষ বেশি হওয়ায় মৌসুমে আলুর দাম নিয়ে শঙ্কার কথাও জানান তিনি।
একই কথা জানান পীরগঞ্জ জাবরহাট এলাকার রমজান আলীসহ অনেকে। কৃষি শ্রমিক আব্দুল হাকিম বলেন, ‘আলুর দাম বেশি থাকায় কৃষক জমি কন্ট্রাক না দিয়ে নিজেই আলুর আবাদ করছেন। যে জমি গত বছর বিঘা প্রতি ৬-৭ হাজার টাকায় কন্ট্রাক পাওয়া যেত কিন্তু সে জমি এবার ১৩-১৪ হাজার টাকা দিয়েও পাওয়া যায়নি।’
রুহিয়া থানার ঢোলারহাট এলাকার কন্ট্রাক গ্রোয়ার্স মীর জাহিদ বলেন, ‘গত বছর দেড়শ বিঘা জমিতে আলুর আবাদ করেছিলাম। ফলনও ভালো হয়েছিল এবং দামও পেয়েছিলাম ভালো। কিন্তু এবার বীজের দাম বেশি, প্রচুর মানুষ আলুর আবাদ করেছে।’ তাই বাজার ব্যবস্থা ঠিক রাখতে না পারলে কৃষক আলুর দাম ঠিকমত পাবে না, লসে পড়বে বলেও আশঙ্কার কথাও জানান তিনি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আফতাব হোসেন জানান, ঠাকুরগাঁও জেলায় এবার ২৭-২৮ হাজার হেক্টর জমিতে আলুর চাষ হয়েছে। গত বছরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৪ হাজার ৫০০ হেক্টর। সে তুলনায় ৩ থেকে সাড়ে ৩ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। আলুর ভালো জাত এবং উৎপাদন পদ্ধতি কৃষকদের হাতে কলমে শিখিয়ে দিচ্ছি। বাজার মূল্য অনুকূল থাকায় কৃষকরা আলু চাষে উৎসাহিত হয়েছে।
তবে দাম পাওয়া নিয়ে কৃষকদের শঙ্কা ভিত্তিহীন বলে জানান তিনি। বরং উৎপাদিত আলু এলাকার চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব বলেও মনে করছেন এই কৃষি কর্মকর্তা।
সারাবাংলা/এমও