ইউরোপে পাঠানোর প্রলোভন, জাল ভিসায় ভারতে নিয়ে সর্বস্ব লুট
১৯ জানুয়ারি ২০২১ ১৭:৫৩
ঢাকা: জনশক্তি কর্মসংস্থানের অনুমতি ছাড়াই জাল ভিসা দিয়ে ইউরোপে লোক পাঠানোর প্রলোভন দেখাত একটি চক্র। ইউরোপ যেতে ইচ্ছুক আগ্রহী ব্যক্তিদের চক্রটি জাল ভিসা দিয়ে ভারতের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে সাধারণ মানুষদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিত। এমনই একটি চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতারের পর এসব তথ্য জানতে পারে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে সিআইডি সদর দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক।
তিনি জানান, চাকরি দিয়ে ইউরোপে পাঠানোর নামে প্রতারণার অভিযোগে দুইজন মানবপাচারকারীকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। গ্রেফতার সদস্যরা হলেন— মো. আব্দুল আলিম ও কবির আহম্মেদ।
সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক বলেন, একটি আন্তর্জাতিক মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যরা দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে বিদেশে যেতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাঠানোর কথা বলে লোক সংগ্রহ করত। এই চক্রের মূলহোতা পর্তুগালে অবস্থান করে বিভিন্ন লোকজনকে ইউরোপের ভুয়া কাগজপত্র পাঠাত। জনশক্তি কর্মসংস্থানের অনুমোদন ছাড়াই কাজ করত চক্রটি। তাদের কোনো রিক্রুটিং এজেন্সি বা লাইসেন্স নেই।
তিনি বলেন, তারা চাকরির জাল ভিসায় চেক রিপালিকসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে নেওয়ার কথা বলে প্রথমে ভারত নিয়ে যেত। পরে ভারতে নেওয়ার পর লোকজনদের কাছ থেকে পাসপোর্ট , ডলার ও রুপি কেড়ে নিত। এরপর এদের ভারতীয় চক্রের সদস্যরা ভিসা ইউন্টারভিউয়ের বিভিন্ন তারিখের কথা বলে ঘোরাতে থাকে। পরে এসব ভুক্তভোগীরা প্রতারিত হচ্ছে বুঝতে পেরে চেক রিপালিক অ্যাম্বেসিতে যোগাযোগ করতে জানতে পারেন, তারা কোনো ভিসা দিচ্ছে না।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে দু’জনকে গ্রেফতার করে সিআইডি। সেই সঙ্গে এ ঘটনায় ডিএমপির শাহজাহানপুর থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। পাশাপাশি এসব ঘটনায় জড়িত দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রের সদস্যকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
অন্যদিকে, সমবায় সমিতির নামে ক্ষুদ্র আয়ের লোকজনদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে মো. সাইফুল ইসলাম ও মো. শাহ আজীজুর রহমান শাকিল নামের আরও দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি।
সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির কর্মকর্তা শেখ ওমর ফারুক বলেন, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকায় রুপসী বাংলা শ্রমজীবী সমিতি লিমিটেড নামের একটি সমিতি চালু করা হয়। পরে এই চক্রের সদস্যরা নিম্ন আয়ের লোকজনদের বেশি লাভ দেওয়ার কথা বলে শতাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে প্রায় দুই কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। এই চক্রের সদস্যরা লোকজনদের বিশ্বস্ততা অর্জনের জন্য প্রথম দিকে কিছু লাভ দিয়েছে। পরে টাকা সংগ্রহের পরিমাণ বেড়ে গেলে তা আত্মসাৎ করে পালিয়ে যায়।
এঘটনায় ভুক্তভোগীদের অভিযোগ পেয়ে তদন্ত করে সত্যতা পেয়ে মূল হোতা দু’জনকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানান সিআইডির কর্মকর্তা। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান তিনি।
সারাবাংলা/এসএইচ/টিআর