ভ্যাকসিন সংরক্ষণের পরিকল্পনা জানাল স্বাস্থ্য অধিদফতর
১৯ জানুয়ারি ২০২১ ২২:২৯
ঢাকা: ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন দেশে আসার পরে তা সংরক্ষণের পরিকল্পনা জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। ভারত থেকে আসা এই ভ্যাকসিন সংরক্ষণের জন্য তিনটি বিকল্প স্থান ঠিক করে রাখার কথা জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম।
মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) স্বাস্থ্য অধিদফতরে স্বাস্থ্য মন্ত্রীর উপস্থিতিতে আয়োজিত এক বৈঠক শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম।
অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, ভারত থেকে আসা ভ্যাকসিন প্রাথমিকভাবে তিন স্থানে সংরক্ষণ করা হবে। কেন্দ্রীয় ঔষধাগার (সিএমএসডি), মহাখালীতে অবস্থিত সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির প্রধান কার্যালয় এবং তেজগাঁওয়ে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির নিজস্ব সংরক্ষণাগারে রাখা হবে ভ্যাকসিন। করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন ওয়াক-ইন-কুলে (ছোট ঘরের মধ্যে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় সংরক্ষণ) রাখা হয়। বর্তমানে ২৯টি জেলায় ওয়াক-ইন-কুল আছে। আরও ১৮টি জেলায় ভ্যাকসিন সংরক্ষণের জন্য ওয়াক-ইন-কুল তৈরি হচ্ছে। আরও বেশি ভ্যাকসিন আসার আগেই এগুলো তৈরি হয়ে যাবে বলে আশা করছি।
এ ছাড়া প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় আইএলআর (হিমায়িত বাক্সের মধ্যে ভ্যাকসিন সংরক্ষণের ব্যবস্থা) আছে। উপজেলায় আইএলআরে ভ্যাকসিন রাখা হবে। আলাদা হিমায়িত বাক্সে ভ্যাকসিন পরিবহন করা হবেও বলেও জানান স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক।
সরকারের কেনা তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিনের প্রথম চালান হাতে পাওয়ার পর সব জেলায় একইসঙ্গে টিকাদান কার্যক্রম শুরু করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলেও জানান স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক।
তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে স্বাস্থ্যকর্মীদের কিছু ভ্যাকসিন দিয়ে পর্যবেক্ষণ করা হবে। এক সপ্তাহ পর সব জেলায় শুরু করা হবে। এটাই আমাদের পরিকল্পনা। তবে ভ্যাকসিন প্রয়োগের বিস্তারিত পরিকল্পনা করতে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে একটি সভা হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানেই সব চূড়ান্ত হবে।
এর আগে, সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) আয়োজিত ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানান, ভারত থেকে ২৫-২৬ জানুয়ারি নাগাদ ভ্যাকসিনের প্রথম লট আসবে। এছাড়া ভারত সরকার কিছু ভ্যাকসিন উপহারও দেবে বাংলাদেশকে। পরে আজ মঙ্গলবার মন্ত্রী জানান, ভারত থেকে বাংলাদেশের জন্য উপহার পাঠানো করোনাভাইরাসের ২০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন আগামীকাল বুধবার (২০ জানুয়ারি) কিংবা বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) দেশে আসতে পারে বলে।
উল্লেখ্য, গত নভেম্বরে ভারতের সিরাম ইনস্টিউটের কাছ থেকে তিন কোটি ডোজ করোনা ভ্যাকসিন কিনতে একটি ত্রিপাক্ষিক চুক্তি সই হয়। ভারতের সিরামের সঙ্গে ওই চুক্তির দেশীয় দুই অংশীদার হলো বাংলাদেশ সরকার ও বেসরকারি ওষুধ উৎপাদনকারী কোম্পানি বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস।
চুক্তি অনুযায়ী, সিরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিন অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রেজেনেকার করোনা ভ্যাকসিন দেশে আমদানি করবে বেক্সিমকো ফার্মা। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদফতর জানিয়েছে, বেক্সিমকো এই ভ্যাকসিন দেশে আনার পর তাদের নিজেদের ওয়্যারহাউজে সংরক্ষণ করবে। এরপর দেশের নির্ধারিত জেলা ইপিআই কোল্ড স্টোরেজগুলোতে সেগুলো নিজ দায়িত্বেই পৌঁছে দেবে বেক্সিমকো। পরে সেসব ইপিআই কোল্ড স্টোরেজ থেকে ভ্যাকসিন সরকারি ব্যবস্থাপনায় পৌঁছে যাবে ভ্যাকসিনেশন সেন্টারগুলোতে।
সারাবাংলা/এসবি/টিআর