ঢাকা: নাট্যশিল্পীকে ধর্ষণ মামলা থেকে এটিএন বাংলার সাবেক প্রোগ্রাম ম্যানেজার আসলাম সিকদারকে খালাসের যাবতীয় নথি তলব করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তাকে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (২০ জানুয়ারি) খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল গ্রহণ করে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী। তিনি আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে সারাবাংলাকে বলেন, ‘ধর্ষণ মামলায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল থেকে খালাস পাওয়া আসামি আসলাম সিকদারের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল গ্রহণ করেছেন হাইকোর্ট। ওই মামলার যাবতীয় নথি তলব করেছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে একই ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
মামলার বিবরণে জানা যায়, গত ১৪ অক্টোবর ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৫*এর বিচারক সামছুন্নাহার আসামি আসলাম সিকদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় খালাসের আদেশ দেন। মামলাটিতে আসলাম সিকদার পলাতক রয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ধর্ষণের শিকার মেয়েটি একজন নাট্যশিল্পী। আসলাম সিকদার (৪২) এটিএন বাংলার প্রোগ্রাম ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সেই সুবাদে তারা পরিচিত হন। পরিচয়ের এক পর্যায়ে আসলাম মেয়েটিকে ভালোবাসেন বলে জানান। পরে তাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেন। একইসঙ্গে মেয়েটিকে আরও বড় নাট্যশিল্পী হিসেবে নিজ হাতে তৈরি করবেন বলে আশ্বাস দেন।
অভিযোগে বলা হয়, বিভিন্নভাবে আশ্বাস দিয়ে আসলাম মেয়েটিকে নাটকের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য তার দিলু রোডের নিজের অফিসে যেতে বলেন। ২০১৮ সালের ২৬ আগস্ট মেয়েটি সেখানে গিয়ে বুঝতে পারেন যে সেটি কোনো প্রশিক্ষণকেন্দ্র নয়। তিনি সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে চাইলে আসলাম তাকে বাধা দেন এবং সেখানে আটকে রেখে ধর্ষণ করেন। পরে মেয়েটি আইনের আশ্রয় নিতে চাইলে আসলাম তাকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে আরও অনেকবার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। পরে মেয়েটি বিয়ের কথা বললে আসলাম তাকে বিয়ে করবেন না বলে জানান এবং হত্যার হুমকি দেন।
এ ঘটনায় ২০১৮ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় মামলাটি দায়ের করেন ওই নাট্যশিল্পী।
মামলার তদন্ত করে ২০১৮ সালের ১৪ নভেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন হাতিরঝিল থানার পরিদর্শক মো. ইকবাল। ২০১৯ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করে আদালত। বিচার চলাকালে আদালত ১৩ সাক্ষীর মধ্যে ১২ জনের সাক্ষ্য নেন। পরে গত ১৪ অক্টোবর ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৫-এর বিচারক সামছুন্নাহার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় খালাসের আদেশ দেন।