Wednesday 20 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দেশপ্রিয়র বাড়ি রক্ষায় সহায়তার আশ্বাস হানিফের

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২১ জানুয়ারি ২০২১ ১৮:১৪

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের স্মৃতিবিজড়িত দেশপ্রিয় যতীন্দ্র মোহন সেন গুপ্তের বাড়ি রক্ষায় সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ।

বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) বিকেলে নগরীর রহমতগঞ্জে সম্প্রতি দখল করতে গিয়ে একাংশ ভেঙে ফেলা ঐতিহাসিক ভবনটি পরিদর্শনে গিয়ে মাহবুব-উল আলম হানিফ এ আশ্বাস দিয়েছেন।

এ সময় সংসদ সদস্য হানিফ বলেন, ‘রানা দাশগুপ্ত আমাকে এখানে আসতে বলেছেন। উনার কাছ থেকে ভবনটির অতীত ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পেরেছি। এখানে কোনো বক্তব্য দিতে আসিনি। দেখতে এসেছি। আমি শুধু একটি বিষয়ে আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই, সেটি হলো যে এটি একটি ঐতিহাসিক ভবন। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন এবং স্বাধীনতা আন্দোলনের স্মৃতি জড়িত আছে, ভবনটি ইতিহাসের অংশ। ভবনটি কেন হঠাৎ করে এরকম হলো আমার জানা নেই। দেখলাম এখানে কতগুলো নোটিশ টাঙানো আছে আদালতের।’

‘এটুকু আশ্বস্ত করে যাচ্ছি বিষয়টা আজকে পুরোপুরি জানলাম। আজকেই জেলা প্রশাসককে বলব ঘটনাটি যথাযথভাবে দেখতে। কেন কী কারণে ঘটনাগুলো ঘটেছে এবং আইনসম্মত মীমাংসা সেটি দ্রুত যেন হয়। আশা করি দ্রুত ঘটনাটি নিষ্পত্তি হবে। ভবনটি অতীত ঐতিহ্য ধারণ করে যাতে থাকতে পারে সে বিষয়ে আমাদের সহায়তা থাকবে’ বলেন হানিফ

এ সময় মাহবুব-উল আলম হানিফের সঙ্গে ছিলেন আওয়ামী লীগের দফর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী বিপ্লব বড়ুয়া।

হানিফের পরিদর্শনের আগে বাড়ির সামনে তাৎক্ষণিক অবস্থান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এতে মানবতাবিরোধী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘ভূমিদস্যুরা অপকৌশলে আদালতের একটি রায় এনেছে। জেলা প্রশাসন যেখানে অর্পিত সম্পত্তি হিসেবে এই সম্পত্তির কাস্টডিয়ান তাদেরকে সেখানে পক্ষভুক্ত করা হয়নি। শিশুবাগকেও মামলায় প্রতিপক্ষ করা হয়নি। জেলা প্রশাসনের সম্পূর্ণ অগোচরে কীভাবে তারা এই মামলায় রায় পেল? সেদিন মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান দিয়ে এই বাড়িটিতে হামলায় ভূমিদস্যুরা ঝাঁপিয়ে পড়েছে। ৭২ এ এভাবে দেশে বিভিন্ন স্থানে হামলা হয়েছিল। আজ চট্টগ্রামে আমরা এ পরিস্থিতি দেখতে পাচ্ছি।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘ভবনটি ভাঙার দায়িত্ব তাদের দিলো কে? সেদিন প্রশাসনের কর্মকর্তারা সব পক্ষের সামনে বলেছে, আপনারা চলে যান আমরা তালা দিয়ে দেব। তখন আমি বলেছিলাম, এর দায়িত্ব স্থানীয় সাবেক কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমনকে দিতে। প্রশাসন সম্মত হয়েছিল। আমরা চলে গিয়েছিলাম। কিন্তু দুঃখের বিষয় কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমনের হাতে চাবি আসেনি। কিন্তু দুষ্কৃতকারীরা এখানে এখনও থাকে। বাইরে থেকে তাদের জন্য খাবার আসে। পুলিশ তাদের বাধা দেয় না। ভেতরে তারা আলো আর সিসিটিভি ক্যামেরা লাগিয়েছে। সেগুলো কীভাবে হচ্ছে। এই প্রশ্ন আপনাদের কাছে রেখে পুরো পরিস্থিতি জানিয়ে গেলাম।’

অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি তাপস হোড়, ওয়ার্কার্স পার্টির চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক শরীফ চৌহান, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রাশেদ হাসান এবং চট্টগ্রাম ইতিহাস, সংস্কৃতি সংরক্ষণ কেন্দ্রের সভাপতি আলীউর রহমান।

গত ৪ জানুয়ারি এম ফরিদ চৌধুরী নামে একজন আদালতের কাছ থেকে মালিকানা সংক্রান্ত দখলী আদেশ পেয়েছেন দাবি করে তার পক্ষে কিছু লোক বুলডোজার নিয়ে যাত্রামোহন সেনগুপ্তের (যতীন্দ্র মোহনের বাবা) বাড়িটি ভাঙতে যান। এসময় পুলিশের উপস্থিতিতে স্কুলের শিক্ষকদের জোরপূর্বক সেখান থেকে বের করে দিয়ে ভবনটির একাংশ বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে মানবতা বিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর রানা দাশগুপ্ত স্থানীয়দের নিয়ে ভবনটির সামনে অবস্থান নেন। প্রতিরোধের মুখে তখন ভবন ভাঙা বন্ধ রাখা হয়।

৬ জানুয়ারি ওই বাড়ির দখল ও অবস্থানের উপর স্থিতাবস্থা জারি করেছে হাইকোর্ট। জনস্বার্থে করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। জেলা প্রশাসনের আবেদনের প্রেক্ষিতে চট্টগ্রামের প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালত থেকেও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। তবে আদালতের আদেশের পরও ওই জায়গায় এম ফরিদ চৌধুরীর লোকজন সার্বক্ষণিক অবস্থান করছেন।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন
ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রামের স্মৃতি স্থাপনা ভাঙার ওপর স্থিতাবস্থা
ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রামের স্মৃতি স্থাপনায় বুলডোজারের আঘাত

সারাবাংলা/আরডি/একে

টপ নিউজ দেশপ্রিয়র বাড়ি ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর