Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জুনের মধ্যে নিলামে উঠবে ১২ উড়োজাহাজ

শেখ জাহিদুজ্জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৩ জানুয়ারি ২০২১ ১১:২২

ঢাকা: হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পরিত্যক্ত অবস্থায় কয়েকবছর ধরে পড়ে আছে ১২টি উড়োজাহাজ। উড়োজাহাজের মালিকানা প্রতিষ্ঠানগুলো এরইমধ্যে তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে। কিন্তু উড়োজাহাজগুলো বন্দর এলাকা থেকে সরিয়ে নেয়নি। এ বিষয়ে সিভিল অ্যাভিয়েশনের পক্ষ থেকে তাগাদা দিয়েও কোনো লাভ হয়নি। তাই জুনের মধ্যে পড়ে থাকা বিমানগুলো নিলাম কিংবা বাজেয়াপ্ত করতে চায় সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষ।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) এবং বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। পড়ে থাকা উড়োজাহাজগুলোর মধ্যে রয়েছে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের ৮টি, জিএমজি এয়ারলাইন্সের ১টি, রিজেন্ট এয়ারওয়েজের ২টি, অ্যাভিয়েনা এয়ারলাইন্সের ১টি উড়োজাহাজ।

উড়োজাহাজগুলো বিমানবন্দর থেকে সরিয়ে নিতে বিমান কোম্পানিগুলোকে ৩-৪ বছর ধরে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ তথা সিভিল অ্যাভিয়েশন থেকে চিঠি দিলেও বিমান কোম্পানিগুলোর কোনো সাড়া মেলেনি। ফলে বিমান কোম্পানিগুলোর কাছে হ্যান্ডেলিং চার্জ হিসেবে বিপুল পরিমাণ অর্থ পায় সিভিল অ্যাভিয়েশন। আদায় হচ্ছে না উড়োজাহাজগুলোর পার্কিং ভাড়াও।

এদিকে উড়োজাহাজগুলো পড়ে থাকায় বিমানবন্দরের সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে। শুধু তাই নয়, রফতানি পণ্য নিতে আসা কার্গো বিমানগুলোকে জায়গা দিতেও হিমশিম খেতে হয় সিভিল অ্যাভিয়েশনকে।

সিভিল অ্যাভিয়েশন সূত্র জানিয়েছে, বিমানবন্দরের ভেতরে যে বিমানগুলোকে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে সেগুলো দ্রুতই নিলাম বা বাজেয়াপ্ত করা হবে। এরপর বিমানবন্দর থেকে পরিত্যক্ত উড়োজাহাজগুলো সরিয়ে ফেলা হবে। চলতি বছরের জুনের মধ্যে নিলাম বা বাজেয়াপ্ত করার কাজ শেষ করা হবে।

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নির্মিত হচ্ছে অত্যাধুনিক তৃতীয় টার্মিনাল। আর সে জন্য বিমানবন্দরের অনেক কিছুতেই পরিবর্তন আনা হচ্ছে। এ ছাড়া বিমানবন্দরের উত্তর দিকে নতুন করে ট্যাক্সিওয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। বিমানবন্দরের মূল পার্কিং জোনে আমদানি-রফতানির মালামাল উড়োজাহাজে তোলা এবং নামানো হয়। এতে যাত্রীবাহী উড়োজাহাজগুলোকে পার্কিংয়ের জায়গা দিতে সংকটে পড়তে হচ্ছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে। তাই সাময়িকভাবে উড়োজাহাজগুলোকে রফতানি কার্গো ভিলেজের সামনে থেকে সরিয়ে আরও উত্তর দিকে অবস্থিত বে-তে রাখা হয়েছে। আর বিমানগুলোর রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ শেষ হলে ডি-রেজিস্ট্রেশন করা হবে।

এরইমধ্যে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের আটটি ও জিএমজি এয়ারলাইন্সের ১টি বিমানের ডি-রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে। বাকি বিমানগুলোর ডি-রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হলে বিমানগুলো সরাতে আইনি নোটিশ দেওয়া হবে। এরমধ্যে সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্স সরিয়ে না নিলে সেগুলো নিলামে বিক্রি করে দেওয়া হবে তথা বাজেয়াপ্ত করা হবে।

পড়ে থাকা উড়োজাহাজগুলো সরিয়ে নিতে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে কি না জানতে চাইলে রিজেন্ট এয়ারওয়েজের সিইও ইমরান আসিফকে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন কল রিসিভ করেননি।

গত বছর করোনার আগেই বন্ধ হয়ে গেছে রিজেন্ট এয়ারওয়েজ।

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এএইচএম তৌহিদ উল আহসান সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা বিমানগুলোকে সরিয়ে অন্যত্র নিয়েছি। রফতানি কার্গো ভিলেজের সামনে ১২টি বিমান রাখা ছিলো দীর্ঘদিন ধরে। বিষয়টি নিয়ে আমি বিমানবন্দরের পরিচালক হওয়ায় সিভিল এভিয়েশনকে চিঠি দিয়েছি। এখন আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে বিমানগুলো হয় নিলাম করা হবে নয়ত বাজেয়াপ্ত করে সরিয়ে ফেলা হবে।’

সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যান এয়ারভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘যেখানে বিমানগুলো রাখা ছিলো সেখানে আমাদের সমস্যা হচ্ছিল কাজ করতে। রফতানি প্রক্রিয়া শেষ করতে বা রফতানি পণ্য নিতে আসা বিমানগুলোকে আমরা জায়গা দিতে পারতাম না। সেজন্য এখন পরিত্যক্ত বিমানগুলো সরিয়ে পাশা রাখা হয়েছে। এগুলো আমরা জুনের মধ্যেই নিলাম বা বাজেয়াপ্ত করে বিমানবন্দর থেকে সরিয়ে ফেলা হবে।’

সারাবাংলা/এসজে/একে

উড়োজাহাজ টপ নিউজ সিভিল অ্যাভিয়েশন


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর