Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নেত্রকোনায় গৃহহীনদের ঘর নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ

বিজয় দাস, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৪ জানুয়ারি ২০২১ ০৮:৫৪

নেত্রকোনা: ‘মুজিববর্ষে কেউ গৃহহীন থাকবে না’— সরকারের এই অঙ্গীকার বাস্তবায়নে নেত্রকোনায় ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে প্রশাসন থেকে ঘর নির্মাণের উদ্যোগ নিলেও তাতে অনিয়মের অভিযোগ করেছেন উপকারভোগী ও স্থানীয়রা। জেলার সীমান্তবর্তী কলমাকান্দার লেংগুড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পে এই অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

নিবন্ধিত উপকারভোগীদের অভিযোগ, লেংগুড়া ইউনিয়নের আশ্রয়ন প্রকল্পে ১৬টি ঘর নদী তীরবর্তী। আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে মেঝে নিচু হওয়ায় বন্যার সময় পানিতে এই ঘর ডুবে যাবে। এছাড়া ঘরে ইট, কাঠ ও সিমেন্ট যা ব্যবহার হয়েছে ও হচ্ছে সেসবও নিম্নমানের। অথচ সরকার মুজিববর্ষের ঘরে ভালো মানের ইট-সিমেন্ট ব্যবহার করার শর্তে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা ঘরপ্রতি বরাদ্দ দিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা যায়, নেত্রকোনায় জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধায়নে ১ হাজার ৩০ জন গৃহহীনকে ঘর বানিয়ে দেওয়ার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এরমধ্যে জেলার ১০ উপজেলায় বিভিন্ন শ্রেণিতে এসব উপকারভোগীর মাঝে সরকারি ঘর হস্তান্তর করার সব প্রক্রিয়াও প্রায় শেষ হয়েছে। এর মাঝে শুধুমাত্র কলমাকান্দায় ১০১টি ঘর নির্মাণ কাজ এখনও চলমান।

স্থানীয় বাসিন্দা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওয়াহাব বলেন, ‘ঘরগুলো উঁচু না করায় উপকারভোগীরা এটার শতভাগ সুবিধা পাবেন না। এসব বাড়ি নির্মাণে দরকারের চেয়ে বেশি পরিমাণে বালু ব্যবহার করা হচ্ছে, একে তো সিমেন্ট কম দেওয়া হয়েছে।’ তাছাড়া ভালো কোম্পানির সিমেন্টও ব্যবহার করা হয়নি বলেও জানান তিনি।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, নদীর তীর ঘেঁষে নিচু স্থানে মুজিববর্ষ উপলক্ষে এই বাড়িগুলো বানানো হয়েছে। ফলে পাহাড়ি ঢলে ঘরগুলো তলিয়ে যাওয়ার সমূহ আশঙ্কা রয়েছে। এর ফলে সরকারের মহৎ উদ্দেশ্য বৃথা যাবে। উপকারভোগী হয়ে উল্টো ক্ষতিগ্রস্ত হতে হবে ঘরের বাসিন্দাদের।

বিজ্ঞাপন

ঘরপ্রাপ্তির তালিকায় নাম থাকা এক নারী নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, “ঘরের মেঝে নিচু হয়েছে, এখানে পানি এলে ঘরে থাকা যাবে না এটা আমি টিএনও (ইউএনও) স্যারকে জানালে তিনি বলছেন, ‘পানি এলে রাস্তায় থাকবা, পরে সরকার আবার তোমাদের ত্রাণ দেবে।’ আমরা গরিব মানুষ কী আর বলবো। বেশি বললে যদি ঘর না পাই, তাই আর কিছু বলিনি।”

তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহেল রানা। তিনি বলেন, ‘কাউকেই রাস্তায় থাকার কথা বলা হয়নি। পাহাড়ি ঢল এলে উপজেলা সদরও পানিতে তলিয়ে যায়। আর ঘর নির্মাণের বাজেট মেঝে উঁচু করার আলাদা বরাদ্দ নেই। তাই মেঝে উঁচু করা হয়নি।’

নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক কাজী মো. আবদুর রহমান বলেন, ‘প্রথমদিকে ঘরে নিম্নমানের কাজের খবর পেয়েছিলাম। এরপর শুরুতেই ইটও পরিবর্তন করা হয়েছে।’ এরপর কোনও অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।

সারাবাংলা/এমও

গৃহহীন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর