Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আপাতত ‘চুপচাপ’ কাদের সিদ্দিকীর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ

আজমল হক হেলাল স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৪ জানুয়ারি ২০২১ ১৩:০৯

ঢাকা: ২০১৮ সালের নির্বাচনে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগ দেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। রাজনৈতিক মাঠে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের এটাই ছিল দৃশ্যমান শেষ সক্রিয়তা। এরপর থেকেই চুপচাপ দলটি। দলের কার্যক্রমে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। নেতাকর্মীরাও নিষ্ক্রিয়। আপাতত নেই সাংগঠনিক কার্যক্রমও। এমনকি করোনা মহামারির সময়ও দলটির নেতৃবৃন্দকে দেখা যায়নি জনগণের পাশে।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, রাজনৈতিক মাঠের অবস্থা বুঝে পদক্ষেপ নেওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন দলটির সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। স্বাধীনতার স্বপক্ষের কোনো জোট কিংবা মোর্চা গঠন হলে সেখানে যোগ দেবেন তিনি। আপাতত দলটি কোনো রাজনৈতিক জোটের সঙ্গেও নেই।

দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে জানা গেছে, সম্প্রতি কাদের সিদ্দিকী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আগামী মার্চ মাসে জনসমর্থনের জন্য যে কোনো একটি জাতীয় ইস্যু নিয়ে মাঠে নামবেন তিনি। সেই ইস্যুটি কী হতে পারে সেসম্পর্কে নেতাকর্মীদের কাছেও মুখ খোলেননি তিনি। আপতত দলটির গুটিকয়েক নেতাকর্মী জাতীয় দিবসগুলো পালন করছেন। আর বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী প্রতি মঙ্গলবার একটি জাতীয় পত্রিকায় রাজনৈতিক কলাম লিখে যাচ্ছেন। নেতাকর্মীদের মতে, বঙ্গবীর কলাম লিখে জনসমর্থন বাড়াতে চাচ্ছেন। একইসঙ্গে দলের নেতাকর্মীদের চাঙ্গা রাখার চেষ্টাও করছেন।

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী মুক্তিযুদ্ধের আগে ও পরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকলেও ১৯৯৯ সালে গঠন করেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ। তিনি এই দলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্বপরিবারে নিহত হলে তার প্রতিবাদে কাদের সিদ্দিকী ভারত চলে যান। ১৯৯০ সালে দেশে প্রত্যাবর্তনের পর তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি বাঘা সিদ্দিকী নামে পরিচিত ছিলেন। ১৯৯৬ সালে কাদের সিদ্দিকী আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সখিপুর ও বাসাইল থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৯৯ সালে দল থেকে বেরিয়ে উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী প্রয়াত শওকত মোমেন শাহজাহানের কাছে পরাজিত হন।

এ সব বিষয় নিয়ে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘করোনার কারণে আমাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম দৃশ্যমান হচ্ছে না। ঘরোয়াভাবে সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে মাঠে নামব।’

দলটির সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমরা আপতত চুপচাপ। কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের কার্যক্রম মূলত থেমে আছে। আনুষ্ঠানিকভাবে শুধু দিবসগুলো পালন করছি। টার্গেট আছে আগামী মার্চ মাসে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ রাজনৈতিক মাঠে তৎপর হবে। রাজনৈতিক অবস্থা বুঝে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

দলীয় নেতাকর্মীরা জানিয়েছে, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ প্রতিষ্ঠা করেছেন ঠিকই; কিন্তু দলটি রাজনৈতিক অঙ্গনে সাড়া জাগাতে পারেনি। সাংগঠনিক কার্যক্রমও নেই। ৩৫টি জেলায় দলটির কমিটি কাগজেকলমেই। কমিটিগুলো নিষ্ক্রিয়।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটবদ্ধভাবে অংশ নিতে ২০১৮ সালের ৮ নভেম্বর ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগদান করেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। ঐক্যফ্রন্টের প্রধান শরীক দল ছিল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। এ জোটের মাধ্যমে তার দল ও তিনি ধানের শীষ প্রতীকে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেন।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/এএম

কাদের সিদ্দিকী কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর