‘ভ্যাকসিন প্রয়োজন হলে জাফরুল্লাহ সাহেব অগ্রাধিকার পাবেন’
২৪ জানুয়ারি ২০২১ ২২:০০
ঢাকা: ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ভ্যাকসিন চাইলে তাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। মন্ত্রী বলেন, ভ্যাকসিনের বিষয়ে অনেক কথাবার্তাই হয়। ভ্যাকসিন নেওয়াটা কিন্তু মানুষের ব্যক্তিগত স্বাধীনতা। এক্ষেত্রে কাউকে জোর করে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হবে না। জাফরুল্লাহ সাহেব কী বলল সেটা তার ব্যক্তিগত বিষয়। তার যদি ভ্যাকসিন প্রয়োজন হয় তবে আমরা দেওয়ার জন্য অগ্রাধিকার দেবো।
রোববার (২৪ জানুয়ারি) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী। উল্লেখ্য, সম্প্রতি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বাংলাদেশে করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন কার্যক্রমের শুরুতে তা প্রধানমন্ত্রীকে নেওয়ার আহ্বান জানান। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর এমন মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলনে ভ্যাকসিন কার্যক্রম সম্পর্কে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দিকনির্দেশনা অনুযায়ী আমরা আগে ফ্রন্টলাইনারদের ভ্যাকসিন দেব। পর্যায়ক্রমে যাদের ভ্যাকসিন লাগবে তাদের সবাইকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই আমাদের দেশে ২০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন এসেছে। আগামীকাল আমাদের আরও ৫০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন আসবে বলে আশা করছি।
ভ্যাকসিন নিয়ে কোনো রকম রাজনীতি বা ব্যাঙ্গ করার বিষয় নেই উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, জাফরুল্লাহ সাহেব কী বললো সেটা উনার ব্যক্তিগত বিষয়। উনার যদি ভ্যাকসিন প্রয়োজনও হয় তবে আমরা উনাকে দেওয়ার জন্য অগ্রাধিকার দেবো। ভ্যাকসিন কে কখন নেবে সেজন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটা গাইডলাইন তৈরি করা হয়েছে। সেই গাইডলাইন অনুযায়ী আমরা ভ্যাকসিন দেবো। কাজেই আমরা মনে করি ভ্যাকসিন দেওয়া নিয়ে কারো বিদ্রূপ করা ঠিক নয়। মানুষের জীবন রক্ষার্থে আমরা এই ভ্যাকসিনটা দিচ্ছি। এখানে কোনো রাজনীতি বা ফান করার বিষয় নাই।
মন্ত্রী জানান, এ মাসের ২৭ তারিখ প্রধানমন্ত্রী ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন। তিনি বলেন, আমাদের যে ভ্যাকসিনটি আছে সেটি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি। এটির শুধুমাত্র প্রোডাকশন হচ্ছে ভারতে। এই ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া খুবই সামান্য। ভারত ও যুক্তরাজ্যে অনেক লোককেই এই ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে।
যাদের শুরুতে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে তাদের তালিকা করা হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তালিকা ছাড়াও আমাদের হাতে অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের তালিকাও চলে এসেছে। আমরা সকলের সহযোগিতা আশা করছি।
ভ্যাকসিন করোনাভাইরাস নির্মূলের উদ্দেশ্যে, তাই তা গ্রহণ করে ভালো থাকার আশাবাদ ব্যক্ত করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ভ্যাকসিন মানুষের উপকারের জন্য। আমরা প্রত্যেক বছরই শিশুদের নয় ধরণের ভ্যাকসিন দেই। ভ্যাকসিন নিয়ে কিন্তু আমরা ভালো আছি। আশা করছি এই ভ্যাকসিন নিয়েও ভালো থাকবো।
তিনি আরও বলেন, এখনও বেসরকারিভাবে ভ্যাকসিন আনার কোনো অনুমোদন দেওয়া হয়নি। ফাইজারের ভ্যাকসিন বিষয়ে আমাদের কাছে কোভ্যাক্সের থেকে প্রস্তাবনা এসেছিল। আমরা সম্মতি দিয়েছি। সরকারিভাবে দেওয়ার কোনো পর্যায়ে যদি প্রয়োজনও হয় তবে আমরা বেসরকারিভাবে ভ্যাকসিন দেওয়ার চিন্তাভাবনা করতে পারি। এ মাসে আর কোনো লটের ভ্যাকসিন আসবে না, আগামী মাসে পরবর্তী লটের ভ্যাকসিন পাওয়ার আশা করতে পারি বলেও মন্তব্য করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
এ সময় অন্যান্যদের পাশাপাশি স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আলী নূর উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/এসবি
জাফরুল্লাহ জাহিদ মালেক ভ্যাকসিন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যান মন্ত্রী জাহিদ মালেক