সরকারের কেনা ৫০ লাখ ডোজ করোনা ভ্যাকসিন আসছে আজ
২৫ জানুয়ারি ২০২১ ১১:২১
ঢাকা: নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ মোকাবিলায় অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি ৫০ লাখ ডোজ ‘কোভিশিল্ড’ ভ্যাকসিন আজ দেশে আসছে। সোমবার (২৫ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টায় এই ভ্যাকসিন দেশে এসে পৌঁছাতে পারে বলে জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে এ দিন বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস নিজেদের জন্য আলাদা চালানে আরও ১০ লাখ ডোজ টিকা আনছে বলেও জানানো হয়েছে।
রোববার (২৪ জানুয়ারি) পৃথক পৃথক স্থানে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ সব তথ্য জানানো হয়।
২৪ জানুয়ারি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘ইতোমধ্যেই উপহার হিসেবে ভারত সরকার ২০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পাঠিয়েছে বাংলাদেশে। ২৫ জানুয়ারি চুক্তি অনুযায়ী আরও ৫০ লাখ ভ্যাকসিন দেশে আসবে। এই ৭০ লাখ ভ্যাকসিন দেশে রাখা ও বিতরণের সব প্রস্তুতি এরই মধ্যে নেওয়া হয়েছে।’
এ দিন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মাতৃ, নবজাতক ও শিশুস্বাস্থ্য কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর ও কোভিড-১৯ টিকা বিতরণ কমিটির সদস্য ডা. শামসুল হক বলেন, ‘ভ্যাকসিন আসার পর সেটা গাজীপুরে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ওয়্যারহাউজে রাখা হবে।’
একইদিন সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানে নিজ বাসভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান পাপন বলেন, ‘ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে কেনা তিন কোটি করোনা ভ্যাকসিনের প্রথম চালান দেশে পৌঁছবে সোমবার। এয়ার ইন্ডিয়ার বিশেষ ফ্লাইটে প্রথম চালানে ৫০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন দুপুরের মধ্যে দেশে পৌঁছাবে। সরকার আমাদের ৬৪ জেলায় করোনার ভ্যাকসিন পৌঁছে দেওয়ার কথা বলেছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রথম লটের ভ্যাকসিন যেহেতু আসছে, আমি নিজেই যাবো, এয়ারপোর্টে রিসিভ করতে। ভারতের মুম্বাই থেকে এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট সকাল ৮টায় রওনা হবে। আমাদের এখানে সাড়ে ১১টায় পৌঁছাবে। এয়ারপোর্ট থেকে ভ্যাকসিনগুলো বেক্সিমকোর টঙ্গীর ওয়্যারহাউজে নেওয়া হবে। চালানটি গ্রহণ করে তা ল্যাবে পাঠানো হবে। ল্যাব পরীক্ষার পর যখন ক্লিয়ারেন্স পাব, তখন সরকার যে ৬৪টি জেলায় দিতে বলবে সেখানে পাঠাবো। শুধু পৌঁছালে হবে না, এটা প্রমাণ করতে হবে যে, এটার সবকিছু ঠিক আছে।’
ভ্যাকসিন সংরক্ষণের জন্য নতুন করে বিশেষভাবে ওয়্যারহাউজ তৈরি করা হয়েছে উল্লেখ করে নাজমুল হাসান পাপন বলেন, ‘বাংলাদেশে ভ্যাকসিন আনার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে বেক্সিমকো মধ্যস্থতা করছে। এতে সরকার অনেকটা ঝুঁকিমুক্ত। তবে সরকার যেসব শর্ত দিচ্ছে তা আগে জানলে বেক্সিমকো এই মধ্যস্থতায় যেত না। ভ্যাকসিন আমদানি করতে সারা বিশ্বের নিয়ম হলো, সরকার একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান থেকে ভ্যাকসিন নেবে। এক্ষেত্রে ওই প্রতিষ্ঠানের এজেন্ট বা অফিস থাকতে হবে ভ্যাকসিন সরবরাহকারী দেশে। ৬০টি দেশে বেক্সিমকোর এজেন্ট রয়েছে। সে কারণে ভারত থেকে বেক্সিমকোর মাধ্যমে সরকার নিজে ভ্যাকসিন আমদানি করছে।’
এর আগে, ৫ নভেম্বর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট এবং বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের মধ্যে একটি চুক্তি হয়। সিরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, বাংলাদেশ পর্যায়ক্রমে তিন কোটি ভ্যাকসিন পাবে। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি ভ্যাকসিন ভারতে উৎপাদন করছে সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া।
এর আগে, গত ২১ জানুয়ারি ভারত সরকারের উপহার হিসেবে পাঠানো ২০ লাখ চার হাজার ডোজ ভ্যাকসিন বাংলাদেশে পৌঁছায়। তেজগাঁওয়ে জেলা ইপিআই স্টোরে এসব ভ্যাকসিন সংরক্ষণ করা আছে।
সারাবাংলা/এসবি/এমও