নেতাকর্মীদের মুক্তি চান শাহাদাত, মাঠে থাকবেন শেষপর্যন্ত
২৫ জানুয়ারি ২০২১ ১৬:৩২
চট্টগ্রাম ব্যুরো: নির্বাচনকালীন সময়ে গত সাতদিনে দায়ের সব মামলা ও গ্রেফতার বিএনপির সব নেতাকর্মীকে ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন দলটির মেয়র প্রার্থী শাহাদাত হোসেন। তবে সব প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে তিনি শেষপর্যন্ত নির্বাচনের মাঠে থাকবেন বলে জানিয়েছেন।
সোমবার (২৫ জানুয়ারি) সকালে রিটার্নিং অফিসার মুহাম্মদ হাসানুজ্জামানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে গ্রেফতার হওয়া ২০ জনের তালিকা হস্তান্তর করেন শাহাদাত। এসময় হাসানুজ্জামান তাদের বিষয়টি দেখবেন বলে আশ্বস্ত করেন।
রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে বেরিয়ে শাহাদাত হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা রিটার্নিং অফিসারকে বলেছি যে, কাল্পনিক মামলা সাজিয়ে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের ছেড়ে দিতে হবে। গত একরাতে আমাদের ২০ জন নেতাকর্মী, যারা এজেন্ট হবেন, তাদের ধরে নিয়েছে পুলিশ। দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাদের ছেড়ে দিতে বলেছি। নির্বানকালীন সময়ে যে মামলাগুলো হয়েছে গত সাতদিনে, সেগুলো যেন প্রত্যাহার করা হয় এবং এই মামলার কোনো আসামিকে যেন গ্রেফতার করা না হয়, তারা যেন নির্বাচনে ভোট দিতে পারে সেটা বলেছি। ভোটারদের কেন্দ্রে ঢোকার পর থেকে ভোট দেওয়া এবং ভোট দিয়ে বাড়ি ফেরা পর্যন্ত নিরাপত্তা দেওয়ার দাবি করেছি। উনি আমাকে আশ্বস্ত করেছেন।’
নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করে ফেলা হয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘পুলিশ প্রশাসন ধারাবাহিকভাবে এ কাজ করেছে। আজ রাতে ও আগামীকাল রাতে পুলিশ আরও ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করবে বলে আমাদের ধারণা। তবে তারা যা-ই করুক, নির্বাচন বর্জন করার ইচ্ছা আমাদের নেই। আমরা পর্যন্ত দেখব ইনশল্লাহ।’
গত সাতদিনে বিএনপির ৭৬ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন শাহাদাত।
পরে এ বিষয়ে জানতে চাইলে রিটার্নি অফিসার মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা ওনার অভিযোগ খতিয়ে দেখব। যাদের আটকের কথা বলা হয়েছে তারা কোনো ফৌজদারি মামলার আসামি নাকি বিনা কারণে আটক করা হয়েছে সেটা আমরা দেখব। আটক-গ্রেফতার যে শুধু একজন প্রার্থীর লোকজন হয়েছে সেটা নয়, বিভিন্ন কারণে অনেক প্রার্থীর লোকজনই আটক হয়েছে। আমরা সার্বিক বিষয়ই খতিয়ে দেখে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেব।’
এর আগে, সকালে নগরীর নাসিমন ভবনের বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে সংবাদ সম্মেলন করেন শাহাদাত। প্রচারণার শেষদিনে নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি জানাতে ডাকা এ সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নগরীতে জড়ো করেছে।
‘তারা কখনও রাউজান, কখনও বান্দরবান, ফেনী ও নোয়াখালীর লোকদের সাথে বৈঠক করে। আর আমরা শুধু নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডে মিটিং করেছি। আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সাথে বৈঠকে রাউজানবাসী প্রতি কেন্দ্রে কেন্দ্রে থাকার ঘোষণা দিয়েছে অভিযোগ করে শাহদাতের প্রশ্ন কীভাবে তারা (রাউজানবাসী) এ ধরনের কথা বলে?’
শাহাদাত বলেন, ‘আমাদের গণসংযোগ জনসমাবেশে রূপ নিয়েছে। ভোটের জোয়ার উঠেছিল। কিন্তু প্রশাসন ও পুলিশ মিলে এখন এটিকে প্রহসনের নির্বাচনে পরিণত করার চক্রান্ত করছে।’ কিছু ‘অতি উৎসাহী’ পুলিশ কর্মকর্তা এ পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ করেন মেয়র প্রার্থী শাহাদাত।
তবে প্রতিকূলতার মধ্যেও শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়ে নগর বিএনপির সদস্য সচিব শাহাদাত বলেন, ‘ডাক্তার শাহাদাত কাউকে ভয় করে না। শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও মাঠে থাকব।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, দক্ষিণ জেলা কমিটির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, নগর কমিটির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, উত্তর জেলার নাজিম উদ্দিন, পেশাজীবী নেতা জাহিদুল করিম কচি উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/আরডি/এমও