Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘বীর চট্টলার মানুষ কাপুরুষকে নয়, বীরকে ভোট দেবে’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৫ জানুয়ারি ২০২১ ১৬:২২

চট্টগ্রাম ব্যুরো: সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য বিএনপির চক্রান্ত জনগণ ভণ্ডুল করে দেবে বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন। তিনি বলেন, বীর চট্টলার মানুষ কোনো কাপুরুষকে নয়, একজন বীরকে ভোট দেবে। সেই বীরের নাম রেজাউল করিম চৌধুরী।

সোমবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীর পক্ষে নির্বাচনের সর্বশেষ পরিস্থিতি জানাতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

সভায় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আহমদ হোসেন বলেন, ‘আমরা জনগণের ক্ষমতায় বিশ্বাস করি। আওয়ামী লীগ মনে করে জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস, বন্দুকের নল নয়। আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটেই বারবার ক্ষমতায় এসেছে, বন্দুকের নল বা মধ্যরাতের ভোটে আসেনি। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচনেও আমরা মনে করি, ভোটাররা ভোট দিলে জিতব, না হলে জিতব না। কিন্তু আমরা একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। কিন্তু বিএনপি এই নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য নানা চক্রান্ত করছে। আমরা মনে করি, ২৭ জানুয়ারি চট্টগ্রামের জনগণ তাদের সেই চক্রান্ত ভণ্ডুল করে দেবে।’

নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগ ষড়যন্ত্র করছে- বিএনপির এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিএনপি ষড়যন্ত্রের পার্টি। তারা ঘুম থেকে উঠেই ষড়যন্ত্র দেখে। তাদের চোখ আলো দেখে না, জনগণ দেখে না। দেশের অন্যান্য জায়গায় যেসব নির্বাচন হয়েছে প্রথম আলোর মতো পত্রিকাও বলছে সেখানে ভোটার উপস্থিতি ভালো ছিল, নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। বিএনপিও বলছে নির্বাচন ভালো হয়েছে। চট্টগ্রামেও নির্বাচনের খুব সুন্দর পরিবেশ আছে, জনগণ ভোট দেওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে।’

বিএনপির প্রার্থী শাহাদাত হোসেনের নিরাপত্তায় পুলিশ মোতায়েনের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিএনপির প্রার্থী জনবিচ্ছিন্ন, তাই পুলিশ দিয়ে নিরাপত্তা দিতে হচ্ছে। আমাদের প্রার্থীর পাশে জনগণ আছে। এজন্য আমাদের প্রার্থীর কোনো নিরাপত্তার দরকার নেই। আমাদের প্রার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন ভোটাররা। ভোটাররাই নিরাপত্তার প্রাচীর গড়ে তুলবেন।’

একই প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, ‘চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ অনেক শক্তিশালী। চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ নেতারা প্রোটেকশন নিয়ে রাজনীতি করেন না। আমাদের প্রার্থী একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। উনার বিশ্বাস আছে চট্টগ্রামের জনগণ উনাকে ভালোবাসেন, আওয়ামী লীগকে ভালোবাসেন।’

মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীর ইশতেহারে সিটি করপোরেশনের আওতাবর্হিভূত প্রতিশ্রুতির বিষয়ে জানতে চাইলে আহমদ হোসেন বলেন, ‘চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন তো সরকার থেকে বিচ্ছিন্ন কিছু না। এটাও তো সরকারেরই অংশ। আমাদের প্রার্থীর মার্কা নৌকা। সরকারও নৌকার, প্রধানমন্ত্রী নৌকার, মন্ত্রী-এমপিরাও নৌকার। সুতরাং নৌকা মার্কার প্রার্থী মেয়র নির্বাচিত হলে সরকার এবং প্রধানমন্ত্রী অবশ্যই সহযোগিতা করবেন। পর্যাপ্ত ফান্ডও দেওয়া হবে।’

শেষ দিনে প্রচারণায় রেজাউলকে পাওয়া যাচ্ছে না এমন মন্তব্যের জবাবে এস এম কামাল হোসেন বলেন, ‘এটা বিএনপির কথা। আগামীকাল (মঙ্গলবার) নির্বাচনি প্রচার বন্ধ। মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী আজ ফজরের নামাজ পড়েই প্রচারে বেরিয়ে গেছেন। এজেন্টদের নিয়ে বৈঠক করেছেন কীভাবে বেশি ভোটার কেন্দ্রে আনা যায়। বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর সব ওয়ার্ডে মিছিল হবে। আজ মতবিনিময় সভায় আমাদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফও উপস্থিত থাকার কথা ছিল। কিন্তু সংসদ সদস্য হওয়ায় আচরণবিধির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি আসেননি।’

এর আগে বক্তব্যে আহমদ হোসেন বলেন, ‘পুরো দেশের চোখ এখন চট্টগ্রামের দিকে। শীতের আমেজ ম্লান হয়ে গেছে নির্বাচনি উত্তাপে। গোটা দেশবাসী তাকিয়ে আছে ২৭ জানুয়ারি চট্টগ্রামে কি হবে ? চট্টগ্রামবাসীর ম্যান্ডেট কোনদিকে যাবে? কারণ এই ম্যান্ডেট জাতীয় রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করবে। এই চট্টগ্রাম থেকে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা করেছিলেন হান্নান সাহেব, মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছিল। আমাদের বিশ্বাস, ২৭ জানুয়ারি এই চট্টগ্রাম থেকে নৌকার বিজয়ের মধ্য দিয়ে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করবে আওয়ামী লীগ। বীর চট্টলা কোনো কাপুরুষকে নয়, একজন বীর ‍মুক্তিযোদ্ধাকে ভোট দেবে। সেই বীরের নাম রেজাউল করিম চৌধুরী।’

নৌকার প্রার্থীকে বিপুল ভোটে রেজাউলকে বিজয়ী করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারা ম্যান্ডেট দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। আমরা প্রধানমন্ত্রীর ম্যাসেজ আপনাদের জানাতে এসেছি। আপনারা রেজাউল করিম চৌধুরীকে ভোট দিয়ে প্রমাণ করুন, চট্টগ্রামবাসী নৌকার পক্ষে আছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে আছে। জিয়াউর রহমান পঁচাত্তরের পর দেশকে পাকিস্তানি ভাবধারায় নিয়ে গিয়েছিল। তার স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী বানিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে পাকিস্তানি ভাবধারা থেকে মুক্তিযুদ্ধের ধারায় ফিরিয়ে এনেছেন। আজকের বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধাদের বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ। এটা রাজাকারের বাংলাদেশ নয়। আপনারা দেশকে আবারও পাকিস্তানি ভাবধারায় ফিরে যেতে দেবেন না।’

সাংবাদিকদের সহযোগিতা চেয়ে আহমদ হোসেন বলেন, ‘আপনারা মুক্তিযুদ্ধ, প্রগতি ও বুদ্ধিবৃত্তিক ধারার পক্ষে কলম দিয়ে লড়াই করুন। দেশ পাকিস্তানি ধারায় গেলে বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা বন্ধ হয়ে যাবে। আপনাদের লেখনিতে নৌকার পালে বাতাস লাগবে।’

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বক্তব্যে বলেন, ‘বিএনপি জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন, সাংগঠনিকভাবে একটি মেরুদণ্ডহীন দল। নির্বাচনকে বিতর্কিত করার জন্য বিএনপি ষড়যন্ত্র করছে। জামায়াত-শিবিরের সশস্ত্র সন্ত্রাসী, বিএনপি ক্যাডারদের চট্টগ্রাম শহরে এনে তারা নির্বাচনকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে। এ নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছে। বিএনপির অতীত ইতিহাস চট্টগ্রামবাসী জানে। বিএনপির আমলে চট্টগ্রাম ছিল ছিনতাই-চাঁদাবাজি, লুটপাটের শহর। আজ জননেত্রী শেখ হাসিনার আমলে চট্টগ্রামের মানুষ শান্তিতে আছে। চট্টগ্রামের সবচেয়ে বেশি উন্নয়ন হচ্ছে শেখ হাসিনার আমলেই। সুতরাং ২৭ জানুয়ারি চট্টগ্রামের মানুষ শেখ হাসিনার প্রার্থী নৌকা মার্কার রেজাউল করিম চৌধুরীকেই ভোট দেবে, এটা বিএনপিও জানে।’

মতবিনিময় সভায় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহজাদা মহিউদ্দিন ও সদস্য আবু সুফিয়ান, ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ ছিলেন।

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী কাপুরুষ চসিক নির্বাচন টপ নিউজ বীর চট্টলা বীরকে ভোট রেজাউল করিম সাংগঠনিক সম্পাদক


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

এখনো সালমানকে মিস করেন মৌসুমী
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭:৩৩

সালমান শাহ্‌কে হারানোর ২৮ বছর
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৬:৪৪

সম্পর্কিত খবর