‘ভেজাল ভ্যাকসিন দিয়ে দেখবে বিএনপি মরে না বাঁচে’
২৫ জানুয়ারি ২০২১ ২০:২৯
ঢাকা: ভারত থেকে উপহার হিসেবে পাঠানো ২০ লাখ ভ্যাকসিনকে ‘ভেজাল ভ্যাকসিন’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেছেন, ‘গুম, খুন, বিচারবর্হিভূত হত্যা, ক্রসফায়ার করেও ওদের (ক্ষমতাসীন দল) মনের স্বাদ মিটছে না। এখন ভেজাল ভ্যাকসিন দিয়ে দেখবে বিএনপি মরে না বাঁচে। তার পরে তারা নেবে।’
সোমবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুরে নয়াপল্টনে আয়োজিত এক স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আরাফাত রহমান কোকোর ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ স্মরণ সভা আয়োজন করা হয়।
ভ্যাকসিন নিবন্ধন প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘সরকার আরেকটা জালিয়াতির সার্টিফিকেট চালু করেছে। যারা ভ্যাকসিন নেবে তাদের একটি সম্মতিপত্র বা অঙ্গীকারনামা দিতে হবে। তার নাম, তার বাবার নাম, মায়ের নাম, আইডি নম্বর—এটা দিয়ে দিতে হবে যে, ভ্যাকসিন নিয়ে পরে কিছু হলে সরকার দায়ী না।’
‘এখানেই তো সন্দেহ আরও ঢুকিয়ে দেওয়া হলো। একটা ভ্যাকসিন দেবেন সেই ভ্যাকসিন সকল গবেষণায় উত্তীর্ণ হবে যে, ভ্যাকসিন নেওয়ার পর এই করোনাভাইরাস আমাকে আক্রমণ করবে না। সেখানে অঙ্গীকারনামা কেন? সেখানে সম্মতিপত্র কেন? সেখানে সই দেবে কেন? জনগণ তো আরও সন্ত্রস্ত হল যে, ওখানে ডাল ম্যা কুঁচ কালা হে’— বলেন রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘ভারত নিজে তাদের দেশের লোককে এই করোনার ভ্যাকসিন দিচ্ছে না। মার্চ মাসে ট্রায়াল করবে। আমরা কী তেলাপোকা, আমরা কী ব্যাঙ, আমরা কী গিনিপিগ? এখন ভারতের যে ভ্যাকসিন সেটা বাংলাদেশের মানুষের ওপর প্রয়োগ করা হবে। প্রয়োগ করে ওরা দেখবে যে, এরা বাঁচে না মরে, এরা অসুস্থ হচ্ছে না সুস্থ হচ্ছে। সেটা দেখে তারপর নিশ্চিত হবে। এরপরে ভিআইপিরা দেবেন, এরপরে রাষ্ট্রপতি দেবেন, এরপরে প্রধানমন্ত্রী দেবেন।’
‘কত বড় নিষ্ঠুর তামাশা, কত বড় রসিকতা। যে দেশ নিজের দেশের ওপর এটা প্রয়োগ করেনি। তারা মার্চ মাসে ট্রায়াল করবে। আর আমাদের দিচ্ছে ট্রায়াল করার জন্য। এটা আমার কথা নয় বা বাংলাদেশের মিডিয়া এটা বলেনি। আন্তর্জাতিক মিডিয়া রয়টার্স বলেছে যে, ট্রায়াল হিসেবে এটা দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশে’— বলেন রিজভী।
তিনি বলেন, ‘যে সরকার মানুষের জীবন নিয়ে তামাশা করে, মানুষের বাঁচা-মরা নিয়ে তামাশা করে, সেই সরকার জনগণের সরকার নয়। এটা আমরা বার বার বলেছি। শুধু ভোটের ক্ষেত্রে নয়, মানুষের জীবন বাঁচানোর ক্ষেত্রেও ওরা তাচ্ছিল্য করেছে, ওরা উপহাস করেছে।’
রিজভী বলেন, ‘যখন লকডাউন দেওয়ার কথা লকডাউন দেয়নি। করোনায় শত শত মানুষ মারা গেছে। তার পরও তারা ভ্রুক্ষেপ করেনি। করোনার সরঞ্জামের জন্য যেসমস্ত পদক্ষেপ নেওয়া দরকার, সেটা নেয়নি। না আছে ভেন্টিলেটর, না আছে অক্সিজেন। বাংলাদেশের অর্ধেক হাসপাতালে ভেন্টিলেটর ও অক্সিজেনের কোনো সুবিধা নেই্।’
গতকাল সংসদে দেওয়া শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির বক্তব্যের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘কোয়ালিটি এডুকেশন তো শেষ। জিপিএ ফাইভ পেয়েছে এসএসসি-এইচএসসিতে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে গেছে খাতায় কিছুই লেখতে পারেনি।’
বিএনপির ক্রীড়া সম্পাদক আমিনুল হকের সভাপতিত্বে ও কৃষক দলের সদস্য জাহাঙ্গীর আলমের পরিচালনায় আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আাবদুস সালাম আজাদ, খন্দকার মাশুকুর রহমান মাশুক, কৃষক দলের সহস্য সচিব হাসান জাফির তুহিন প্রমুখ।
সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম