রাবি’তে মানসিক সমস্যায় বেশি ভুগছেন ছাত্রীরা
২৬ জানুয়ারি ২০২১ ০৮:৩৩
রাবি: হতাশা, দুঃশ্চিন্তা ও বিষন্নতায় ভোগা শিক্ষার্থীদের মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বেশি। ছেলেদের সংখ্যা তুলনামূলক কম হলেও বাদ যাননি শিক্ষকরা। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের মানসিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এক পরিসংখ্যান থেকে বিষয়টি জানা গেছে।
মানসিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ওই পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত মোট ২৪০ জন মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত চিকিৎসা নিয়েছেন সেবাকেন্দ্রটি থেকে। মূলত পাঁচটি মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে হাজির হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
এর মধ্যে দুঃশ্চিন্তার কারণে ৭৯ জন, বিষন্নতার কারণে ৯৭ জন, ওসিডির জন্য ১৭, আতঙ্ক নিয়ে ১৪ জন, পার্সোনাল ডিসঅর্ডার নিয়ে ৩৩ জন সেবা নেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মানসিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিচালক ও মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আনওয়ারুল হাসান সুফী বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউনের মাঝেও আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী। এ প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের মধ্যে হতাশা ও অন্যান্য মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার ব্যাপারটি বেশ উদ্বেগজনক। ’
২০১৭ সালের আগস্ট থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কাজ করছে এই কেন্দ্রটি। এরই মধ্যে আত্মহত্যাপ্রবণ শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফেরাতে পেরেছেন বলেও জানান তারা।
অধ্যাপক সুফী বলেন, ‘সেন্টার থেকে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা নেওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকে ছিলেন আত্মহত্যাপ্রবণ। বেশ কয়েকটি সেশনের পর তাদের প্রায় সবাই ফিরে এসেছেন স্বাভাবিক জীবনযাত্রায়। এমন পরিস্থিতিতে দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য রোল মডেল হিসেবে দাঁড়াতে পারে আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি।’
এদিকে পরিসংখ্যান বলছে, সেবা নেওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৮৪ জন পুরুষ ও নারী শিক্ষার্থী ছিলেন ১২৭ জন। নারী শিক্ষার্থীদের সেবা নেওয়ার পরিমাণ বেশি থাকার কারণ সম্পর্কে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আর্থ সামাজিক অবস্থানের কারণে বিভিন্ন শোষণ ও বঞ্চনার শিকার হন। সংখ্যা বেশি হওয়ার পেছনে এ কারণটির ভূমিকা থাকতে পারে।
শুধু শিক্ষার্থীরা নন, সেবা নেওয়ার জন্য মানসিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে উপস্থিত হচ্ছেন শিক্ষকরাও। সেবা গ্রহীতাদের মধ্যে সংখ্যা কম হলেও শিক্ষক ছিলেন ১৭ জন। সাধারণত পারিবারিক সমস্যা, নিদ্রাহীনতা ও হতাশাজনিত বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে শিক্ষকরা উপস্থিত হন বলে জানায় সেবা কেন্দ্রটিতে কর্মরতরা।
এছাড়া ১২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীও মানসিক স্বাস্থ্যসেবা নিয়েছেন।
মানসিক স্বাস্থ্য সেবা নেওয়ার ধরণ ও সময় সম্পর্কে জানা গেছে, আলাদাভাবে ২১১ জন ব্যক্তি ৩২৫ বার ব্যক্তিগত মানসিক স্বাস্থ্য সেবা নিয়েছেন। যার মধ্যে সর্বোচ্চ এক ঘণ্টা ১৫ মিনিট ও সর্বনিম্ন ৩০-৪০ মিনিট সেবা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ৭৮টি গ্রুপ সেশনে ১৮০ জন এ সংক্রান্ত সেবা নেন। যার সর্বোচ্চ ব্যপ্তি ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট ও সর্বনিম্ন এক ঘণ্টা ৩০ মিনিট।
সারাবাংলা/এমও