চীন বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী: রাষ্ট্রদূত
২৬ জানুয়ারি ২০২১ ২২:৫৬
ঢাকা: ‘গত বছর চীনের বার্ষিক আয়ের অগ্রগতির হার ছিল দুই দশমিক তিন শতাংশ এবং একই সময়ে বাংলাদেশের আয়ের অগ্রগতির হারও তুলনামূলক বেশি ছিল। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত অর্থনীতির দেশে পরিণত হওয়ার যে স্বপ্ন বাংলাদেশ দেখছে, তা চীনকে বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী করে তুলেছে।’
‘শোকেস বাংলাদেশ: চায়না-বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট’ শীর্ষক সেমিনারে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং এমন মন্তব্য করেছেন।
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ও বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)-এর যৌথ উদ্যোগে সম্প্রতিকালে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যকার সম্ভব্য অংশীদারিত্বের সুযোগ ও পরিবর্তনশীল ভৌগোলিক পটভূমিতে কৌশলগত সুযোগ সৃষ্টির বিষয়টি তুলে ধরা হয়।
চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কের প্রশংসা করে বাংলাদেশকে বিনিয়োগের সর্বোত্তম পটভূমি হিসেবে উল্লেখ করে চীনা বিনিয়োগকারীদের এদেশে বিনিয়োগ প্রবণতা বিশ্লেষণ করেন এবং দ্বিপার্শ্বিক বিনিয়োগ বর্ধনের পরামর্শ দেন।
ওয়েবিনারের মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বিডা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম। তিনি আরএমজি, চামড়া, ঔষধ প্রস্তুতকারক খাত-এপিআই ও মেডিকেল সরঞ্জাম, সফটওয়্যার ও আইটি, অ্যাগ্রো ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, অ্যাগ্রো সরঞ্জামাদি, ইলেক্ট্রনিকস, মটরযান এবং জাহাজ নির্মাণ খাতগুলোকে চীনা বিনিয়োগকারীদের জন্য বিনিয়োগের সুযোগের বিষয়টি উল্লেখ করেন।
বিডা চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশ খুব দ্রুতই অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশটি মহামারীর এই অস্থিতিশীল অবস্থায়ও প্রবৃদ্ধির হার ৫.২৪ শতাংশ পর্যন্ত ধরে রেখেছে। বিডা তার বিনিয়োগকারীদের সুবিধার্থে আরও উন্নত বিনিয়োগ পরিবেশ তৈরিতেও কাজ করে যাচ্ছে।
এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, এ ধরনের সম্ভাবনাময় বিনিয়োগ সুবিধা উভয় দেশের অর্থনীতির টেকসই অগ্রগতি নিশ্চিত করতে জ্ঞানের সর্বোচ্চ ব্যবহারে সক্ষম করে তুলবে। তিনি আরও বলেন, সমৃদ্ধ যোগাযোগের জন্য মাল্টিমোডাল সংযোগ এবং শক্তিশালী বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ বাংলাদেশ ও চীন উভয় দেশকেই লাভবান করবে।
বাংলাদেশ ইকোনোমিক জোনস অথোরিটির (বিইজেডএ) চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন, ইতোমধ্যে আমরা বাংলাদেশে ২৮টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি সর্ববৃহৎ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। জমি ও শিল্প কাঠামোগত সহজলভ্যতা নিশ্চিতের পাশাপাশি, বিনিয়োগকারীরা যেন বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ বজায় রাখে তার জন্য ওয়ান-স্টপ সার্ভিস সেবার উন্নয়ন চলমান রয়েছে।
চীনে নিযুক্ত বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত মাহবুব উজ জামান বলেন, ৯৭ পার্সেন্ট শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার ও অন্যান্য সুবিধার কারণে চীনের উদ্যোক্তাদের মধ্যে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আগ্রহ লক্ষ্য করেছি। আশা করছি, চীনের সমর্থন ও সহযোগিতা আমাদের আত্ম-নির্ভশীল হয়ে ওঠার পথে সহায়ক হবে।
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুল রহমান (এমপি) বলেন, আমাদের সরকার বাংলাদেশ ও চীন উভয় দেশের জন্য বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সুযোগ প্রদানে উৎসাহী। বাংলাদেশের উদার বিনিয়োগ নীতিমালা ও ছাড়, বৈদেশিক বিনিয়োগ উৎসাহিত করে। আমরা চীনকে একটি শক্তিধর সহযোগী বিনিয়োগকারী দেশ হিসেবে মনে করি। আমরা আশা করি মুজিববর্ষ (জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতক) চলাকালীন সময়েই চীন ও বাংলাদেশের মধ্যকার এই বিনিয়োগ সহযোগিতা এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে।
সারাবাংলা/জেআইএল/এমআই