ঢাকা: স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, দেশে যখন ভ্যাকসিন আসেনি তখন কিছু সমালোচনাকারী আমরা ভ্যাকসিন আনতে পারবো কিনা সেগুলি নিয়ে সমালোচনা করেছে। অথচ এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ৭০ লাখ ভ্যাকসিন ইতোমধ্যেই নিয়ে এসেছে। আগামীকাল ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন তিনি। এই অবস্থায় কিছু সমালোচনাকারী এই ভ্যাকসিনের বিরুদ্ধে মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে দিচ্ছে যাতে মানুষ দেহে ভ্যাকসিন না গ্রহন করে। ভ্যাকসিন নিয়ে এই গুজব সৃষ্টিকারীদের কোন দেশপ্রেম নেই।
মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর শাহবাগের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) করোনার ভ্যাকসিন সংরক্ষণাগার ও প্রস্তুতি দেখতে এসে এ সব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
জাহিদ মালেক বলেন, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন যুক্তরাজ্য, ভারতসহ অনেক দেশেই পরীক্ষিত হয়েছে। কোভিড-১৯ এর সকল ভ্যাকসিনের তুলনায় অক্সফোর্ডের এই ভ্যাকসিন বেশি নিরাপদ। দেশ থেকে ভাইরাস মুক্ত করতে হলে ভ্যাকসিন তো প্রয়োগ করতে হবে।সেখানে যদি এভাবে বাধা দেয়া হয়,গুজব ছড়িয়ে দিয়ে মানুষদের ভুল বুঝানো হয় তাহলে এই মহামারি দেশ থেকে চলে যেতে আরও বেশি সময় নিবে। কাজেই এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ নিয়ে রাজনীতি না করাই ভালো হবে।
দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা কখন ভ্যাকসিন নেবেন এমন প্রশ্নের উত্তরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান,ভ্যাকসিন প্রদান প্রক্রিয়াটির সবকিছুই করা হচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা বা গাইডলাইন অনুযায়ী। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্যসেবায় যুক্তদের আগে ভ্যাকসিন দিতে হবে বলা আছে। সরকার সেভাবেই কাজ করে যাচ্ছে। সঠিক সময়ে ভি.আই.পি সহ অন্যান্য ব্যক্তিরাও ভ্যাকসিন পাবেন।
তিনি বলেন, ভ্যাকসিন নেয়াটা যার যার ব্যক্তিগত স্বাধীনতা। জোর করে আমরা কাউকে ভ্যাকসিন দেব না। আমরা আহ্বান জানাব ভ্যাকসিন নেয়ার জন্য। কারণ করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ভ্যাকসিন কার্যকর ব্যবস্থা। ভ্যাকসিনের জন্য তো আমরা উদগ্রীব ছিলাম। কাজেই আমি আহ্বান করবো, আপনারা যারা আগ্রহী তারা ভ্যাকসিন নিতে আসবেন।
তিনি আরও বলেন, আইসিটি মন্ত্রণালয় থেকে অ্যাপস তৈরি করা হয়েছে। অ্যাপসের মাধ্যমে কারা ভ্যাকসিন নিতে পারবে আর কারা ভ্যাকসিন নিতে পারবে না তা জানা যাবে। যাদের আমরা ভ্যাকসিন দিতে চাচ্ছি অর্থাৎ বয়স যদি আমরা হিসাব করি, ৫৫ বছর বয়সের ওপর যারা আছেন তারা নিবন্ধন করতে পারবেন। যারা ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ বাহিনীর সদস্য ও গণমাধ্যমকর্মী তারাও নিবন্ধন করতে পারবেন। গর্ভবতী মা ও অনেক অসুস্থ ব্যক্তি সেখানে নিবন্ধন করতে পারবেন না।
এ সময় অ্যাপস বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, যদিও অ্যাপসের টেকনিক্যাল বিষয়ে আমার পুরোপুরি এখনো জানা নেই। যতটুকু জানি, যারা অ্যাপসের গাইডলাইন মেনে ভ্যাকসিন নিতে নিবন্ধন করবে বা নিবন্ধন করতে সক্ষম হবে তারা সবাই ভ্যাকসিন পাবে।
করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে বিরূপ প্রচার-প্রচারণা না করে সবাইকে ভ্যাকসিন নেয়ার অনুরোধ জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
পরিদর্শনকালে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশিদ আলম , বিএসএমএমইউ’র উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া ও অন্যান্যরা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন।
এর আগে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বেলা সাড়ে তিনটায় রাজধানী কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল পরিদর্শন করেন।
উল্লেখ্য, ২৭ জানুয়ারি বেলা ৩টা ৩০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধন শেষে তিনি পাঁচ জনের ভ্যাকসিন প্রয়োগ দেখবেন। ২৮ জানুয়ারি থেকে রাজধানীর আরও চারটি হাসপাতালে পর্যবেক্ষণমূলক ভাবে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।