শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের প্রতি প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত বাংলাদেশের
২৭ জানুয়ারি ২০২১ ২১:০৪
ঢাকা: জাতিসংঘের শান্তিবিনির্মাণ ও টেকসই শান্তি প্রচেষ্টার প্রতি বাংলাদেশের গভীর প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা।
মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) জাতিসংঘ শান্তিবিনির্মাণ তহবিলে আর্থিক অবদান বৃদ্ধির প্রয়াসে ভার্চুয়ালভাবে আয়োজিত উচ্চ পর্যায়ের পুনর্ভরণ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে বাংলাদেশের এই প্রতিশ্রুতির কথা তুলে ধরেন তিনি।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেজ এবং কানাডা, জার্মানি, সিয়েরালিওন ও সুদান সরকার যৌথভাবে সম্মেলনটি আয়োজন করে।
সম্মেলনে বাংলাদেশ জাতিসংঘের শান্তিবিনির্মাণ তহবিলে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ দেওয়ার ঘোষণা দেয়। এসময় রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, কোভিড-১৯-এর কঠিনতম সময়েও শান্তিবিনির্মাণ তহবিলে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান বিশ্বশান্তির প্রতি বাংলাদেশের সুদৃঢ় রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতিরই বহিঃপ্রকাশ। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রম ও শান্তিবিনির্মাণ পদক্ষেপে বাংলাদেশের অমূল্য অবদানের পাশাপাশি বাড়তি হিসেবে আর্থিক এই সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি প্রদান করা হলো।
শান্তিবিনির্মাণ পদক্ষেপে বহুবছর ধরে তহবিল ঘাটতির বিষয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের উদ্বেগ পুনর্ব্যক্ত করে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি শান্তিবিনির্মাণ অর্থায়নে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জরুরিভাবে দৃষ্টি দেওয়ার আহ্বান জানান।
শান্তিবিনির্মাণ ও টেকসই শান্তি বিষয়ে সাম্প্রতিক সময়ে গৃহীত দুটি রেজুলেশনের উদাহরণ টেনে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, বাংলাদেশ শান্তিবিনির্মাণ তহবিলের জরুরি সম্পদ সংগ্রহের সকল আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টায় সমর্থন জুগিয়ে যাবে। উল্লেখ্য সাম্প্রতিক সময়ে গৃহীত দুটি রেজুলেশন অনুযায়ী আগামী ৭৬তম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে এ বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের একটি সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
রাষ্ট্রদূত ফাতিমা জোর দিয়ে বলেন, বাংলাদেশসহ অনেক দেশের অর্থনীতিতে কোভিড-১৯-এর নেতিবাচক প্রভাব সত্ত্বেও সংঘাতপূর্ণ দেশগুলির শান্তিবিনির্মাণ প্রচেষ্টায় সহযোগিতা অব্যাহত রাখা অত্যন্ত জরুরি, কারণ এটি তাদের জাতীয় অগ্রাধিকার। সংঘাতপ্রবণ দেশগুলো যাতে শান্তিবিনির্মাণের ইতিবাচক ফলাফল ঘরে তুলতে পারে সেজন্য তাদের জাতীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের সক্ষমতা বিনির্মাণ বিষয়টিতে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করেন বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি।
অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ বিনির্মাণের জন্য শান্তিবিনির্মাণ তহবিলের আবশ্যকতার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, জাতি, ধর্ম, বর্ণ ও লিঙ্গ নির্বিশেষে সমাজের সকল অংশ সমানভাবে যাতে এই তহবিলের সুফল ভোগ করতে পারে অবশ্যই তা নিশ্চিত হতে হবে।
শান্তিবিনির্মাণ তহবিলের ২০২০-২০২৪ বিনিয়োগ কৌশলে স্বেচ্ছা-অবদানকে উৎসাহিত করতে উচ্চ পর্যায়ের এই পূনর্ভরণ সম্মেলন আয়োজন করা হয়। জাতিসংঘ মহাসচিব, সিয়েরালিওনের রাষ্ট্রপতি, সুদানের প্রধানমন্ত্রী এবং কানাডা ও জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সম্মেলনটির উদ্বোধন করেন। এছাড়া বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রায় অর্ধশতাধিক পররাষ্ট্রমন্ত্রী অনুষ্ঠানটিতে অংশগ্রহণ করেন।
জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা সম্মেলনটিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিত্ব করেন।
সারাবাংলা/জেআইএল/এমআই