পদ্মা সেতু প্রকল্পে সততার জয় হয়েছে: সংসদে এমপিরা
২৭ জানুয়ারি ২০২১ ২১:০৮
ঢাকা: পদ্মা সেতু প্রকল্পের সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে সততার জয় হয়েছে বলে দাবি করেছেন সরকারি দলের সংসদ সদস্যরা। রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনাকালে তারা বলেন, ‘দেশের কিছু সুশীল, একজন এনজিও কর্মকর্তা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া পদ্মা সেতু নিয়ে চরম অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছিলেন। তারা নানাভাবে বঙ্গবন্ধু পরিবারকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা চালিয়েছিলেন। সততার ও সাহসের সাথে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে প্রধানমন্ত্রী তাদের সকল অপচেষ্টা নসাৎ করেছেন।’
বুধবার (২৭ জানুয়ারি) প্রথমে স্পিকার ও পরে ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়ার সভাপতিত্বে এ আলোচনা হয়। আলোচনায় অংশ নেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান, সরকারি দলের সদস্য মুজিবুল হক, এনামুল হক, বেনজির আহমেদ, জহিরুল হক ভূঁইয়া মোহন, নুরুল আমিন ও শেখ এ্যানি রহমান এবং বিরোধীদল জাতীয় পার্টির রানা মো. সোহেল ও নাজমা আখতার।
আলোচনায় অংশ নিয়ে মন্ত্রী রেজাউল করিম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের অসংখ্য সাফল্যের মধ্যে সব চেয়ে বড় সাফল্য হচ্ছে দেশকে বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বের করে এনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ সু-প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তার নেতৃত্বে দেশে অসাংবিধানিক ধারায় ক্ষমতা দখলের পথ বন্ধ হয়েছে। দেশের সর্বোচ্চ আদালত সংবিধানের ৫ম সংশোধনী বাতিল করায় সে অনুযায়ী সংবিধান সংশোধন করে অবৈধ পন্থায় ক্ষমতা দখলের পথ বন্ধ করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর খুনিসহ জেল হত্যার খুনিদের বিচার নিশ্চিত করেছেন। সঙ্গে সঙ্গে দীর্ঘদিন পর যুধাপরাধীদের বিচার ও তা কার্যকর করে দেশ ও জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করেছেন। বিচার হয়েছে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার। এভাবে তিনি আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সুশাসন নিশ্চিত করেছেন।’
মন্ত্রী বলেন, ‘এ সরকারের অসংখ্য অর্জনের মধ্যে বর্তমান সময় সবচেয়ে বড় অর্জন নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ। এ সেতু শুধু উন্নয়নের মেলবন্ধ নয়। দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে এ সেতু নির্মাণ করে শেখ হাসিনা তার সততা, সাহস, দৃঢ়তা, দক্ষতা, আত্মবিশ্বাস এবং দেশপ্রেমের প্রমাণ দিয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘২০১৭ সালে ৬ ফেব্রুয়ারি কানাডার টরেন্টো সুপ্রিম কোর্ট অব জাস্টিস পদ্মা সেতু সংক্রান্ত মামলার রায় দিয়েছেন। সেই রায়েও বলা হয়েছে, পদ্মা সেতুর বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্রমূলক অভিযোগ আনা হয়েছিল। সেটি ছিল সম্পূর্ণ কল্পনাপ্রসূত, বানোয়াট ও অসত্য।’
স্কুল খুলে দেওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘করোনার কারণে মার্চ মাস থেকে সকল প্রাথমিক বিদ্যালয় সাময়িক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে ধাপে ধাপে স্কুল খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কোভিড-১৯ চলাকালে পোস্টার লিফলেট প্রচার করছি। কোভিড-১৯ এর কারণে অনেকটা পিছিয়ে গেছি সত্য তারপরেও অনলাইনের মাধ্যমে পাঠদানের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।’
প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেন, ‘দেশের সব সম্প্রদায়ের মানুষ যেন স্ব স্ব ধর্ম চর্চা করতে পারে সে ব্যাপারে সরকার বদ্ধপরিকর। দেশে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ সব সম্প্রদায় ধর্মীয় উৎসবসমূহ উৎসবমুখর পরিবেশেন করতে পারছে।’
মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর হজযাত্রীর সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে উল্লেখ করে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৯ সালে হজ যাত্রীর সংখ্যা ছিল ৫৮ হাজার ৬২৮ জন। ২০১৯ সালে তা বেড়ে হজ যাত্রীর সংখ্যা ১ লাখ ২৭ হাজার ১৫২ জনে উন্নীত হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল ব্যবস্থাপনায় হজে শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে। আমরা চেষ্টা করব হজ যাত্রীদের সমস্ত লাগেজ হজযাত্রী পৌঁছার আগেই যেন তার সৌদি আরবের বাসায় পৌঁছাতে সক্ষম হই। তার জন্য বৃহৎ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিটি উপজেলায় একটি করে মডেল মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছেন। এ জন্য ৯ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।’
সাবেক মন্ত্রী মুজিবুল হক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সংবিধানে উল্লেখিত অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা- জনগণের এ পাঁচটি মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করেছেন। এর অংশ হিসেবে মুজিববর্ষে দেশের প্রায় ৯ লাখ গৃহহীনকে গৃহ প্রদান করা হচ্ছে। এরমধ্যে ৭০ হাজার গৃহহীন পরিবারকে এরইমধ্যে গৃহ দেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তার নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশে এখন বাস্তব। এর সুফল দেশের জনগণ ভোগ করছে। দেশ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত হচ্ছে।’
সারাবাংলা/এএইচএইচ/একে