নীতিমালায় সংশোধনী অনুমোদন, থাকছে অপরিশোধিত সোনা আমদানির সুযোগ
২৭ জানুয়ারি ২০২১ ২২:১৪
ঢাকা: দেশের সোনা ব্যবসায়ীদের অপরিশোধিত সোনা আমদানি ও সোনা পরিশোধনাগার স্থাপনের সুযোগ রেখে ‘স্বর্ণ নীতিমালা-২০১৮ (সংশোধিত)’-তে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এই অনুমোদনের ফলে ব্যবসায়ীরা সোনার বার ও সোনার অলংকার আমদানির পাশাপাশি অপরিশোধিত সোনাও আমদানি করতে পারবেন।
বুধবার (২৭ জানুয়ারি) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। সভা শেষে অনুমোদিত ক্রয়প্রস্তাবগুলোর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. আবু সালেহ মোস্তফা কামাল।
সোনা আমদানির নীতিমালায় কী সংশোধনী আনা হয়েছে— জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, সংশোধিত নীতিমালায় নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলেছিলেন, তারা দেশে সোনা পরিশোধনের অনুমতি চান। এজন্য যেসব প্রয়োজনীয় জিনিস লাগবে, তা বসানোর জন্য অনুমোদন চেয়েছেন। এটা কোনো খারাপ কিছু না, ভালোই। সে কারণে অপরিশোধিত সোনা এনে দেশেই পরিশোধনের সুযোগ রাখা হয়েছে।
সংশোধিত এই নীতিমালার আওতায় সোনার বার ও সোনার অলংকারের পাশাপাশি অপরিশোধিত সোনার আকরিক বা আংশিক পরিশোধিত সোনা আমদানি করা সম্ভব হবে। একইসঙ্গে অপরিশোধিত সোনা আকরিক বা আংশিক পরিশোধিত সোনা থেকে বিভিন্ন গ্রেডের সোনার বার ও কয়েন উৎপাদনে পরিশোধনাগার স্থাপনের পথ সুগম হবে। সোনার পরিশোধনাগার স্থাপন ও পরিচালনায় আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পদ্ধতি অনুসরণ করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় মানসম্মত পরিচালনা পদ্ধতি প্রণয়ন করবে বলে নতুন একটি অনুচ্ছেদ সংযোজন করা হয়েছে নীতিমালায়।
এছাড়া, সোনার মান ও বিশুদ্ধতা সনদ দেওয়ার ক্ষেত্রে বিএসটিআই অথবা বিএসটিআই স্বীকৃত অ্যাক্রেডিটেড সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে সুনির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। সোনার বার রফতানির ক্ষেত্রে রফতানিকারকের অবশ্যই সোনা পরিশোধনাগার থাকতে হবে বলেও নতুন অনুচ্ছেদ সংযোজন করা হয়েছে। বিশেষ প্রয়োজনে উপযুক্ত কারণ দেখিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কিছু ক্ষেত্রে নীতিমালায় প্রয়োজনীয় সংশোধন, সংযোজন বা পরিববর্তন আনতে পারবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশের অভ্যন্তরে সোনার বাণিজ্যিক ব্যবহার ও রফতানির উদ্দেশ্যে সোনার চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে সোনা আমদানি প্রক্রিয়া সহজ করা; সোনা আমদানি ও পরবর্তী বাণিজ্যিক প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা; সোনার অলংকার রফতানিতে নীতিগত সহায়তা দেওয়া; বিদ্যমান শুল্ক/বন্ড সুবিধা যৌক্তিক ও সহজ করা; ভোক্তা বা ক্রেতা ও সোনা ব্যবসায়ীসহ খাত সংশ্লিষ্টদের স্বার্থ সংরক্ষণ, অংশীদারিত্ব ও কার্যকর সমন্বয় নিশ্চিত করার মাধ্যমে এই খাতের সুষ্ঠু ও টেকসই বিকাশের লক্ষ্যে সহায়ক পরিবেশ তৈরির উদ্দেশ্যে এই নীতিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
এ উদ্দেশ্যে ২০১৮ সালের ১৭ মে ‘স্বর্ণ নীতিমালা-২০১৮’ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে উপস্থাপন করা হলে ২৩ মে অনুষ্ঠিত সভায় নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয় এবং চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভায় উপস্থাপনের নির্দেশনা দেওয়া হয়। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ৩ অক্টোবর অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের মাধ্যমে ‘স্বর্ণ নীতিমালা-২০১৮’ কার্যকর হয়।
জানা গেছে, এই নীতিমালা কার্যকর হওয়ার পর সোনার বার ও অলংকার আমদানির উদ্দেশ্যে অনুমোদিত গোল্ড ডিলার নির্ধারণে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি গাইডলাইন তৈরি করে। ওই গাইডলাইনের আলোকে সোনার বার ও অলংকার আমদানি করতে এই খাতের ১৮টি প্রতিষ্ঠান এবং একটি ব্যাংককে অনুমোদিত গোল্ড ডিলার হিসেবে লাইসেন্স দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
সারাবাংলা/জেআর/টিআর
অপরিশোধিত সোনা আমদানি অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি নীতিমালা সংশোধন সোনা আমদানি স্বর্ণ নীতিমালা স্বর্ণ নীতিমালা ২০১৮