‘জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবো, এটাই আমাদের অঙ্গীকার’
২৮ জানুয়ারি ২০২১ ১২:১৮
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমাদের স্বাধীনতার সুফল প্রতিটি মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছাবে। বাংলাদেশ হবে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ। সোনার বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন জাতির পিতা দেখেছিলেন, আমরা তা বাস্তবায়ন করবো। সেটাই আমাদের ২০২১ সালের অঙ্গীকার।’
বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) সকালে ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ (ডিএসসিএসসি) ২০২০-২০২১ কোর্সের গ্রাজুয়েশন সেরিমনিতে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি ডিএসসিএসসি মিরপুর সেনানিবাসের শেখ হাসিনা কমপ্লেক্সে যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন।
প্রধানমন্ত্রী গ্রাজুয়েশন কোর্স সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য অংশগ্রহণকারীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি ধন্যবাদ জানান এবং করোনার কারণে সরাসরি উপস্থিত থাকতে না পারার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ‘আমি আশাবাদী—সামরিক বাহিনীর কমান্ড এবং স্টাফ কলেজ তাদের শিক্ষামানের উচ্চ ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখবে। এ প্রতিষ্ঠানের গ্র্যাজুয়েটগণরা তাদের অর্জিত জ্ঞান, ইচ্ছাশক্তি ও অঙ্গীকারের মাধ্যমে দেশকে একটি স্থিতিশীল, টেকসই আত্মনির্ভরশীল সর্বোপরি গৌরবময় অবস্থানের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।’
‘মনে রাখতে হবে, এই দেশ লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীন করেছি। এই দেশকে আমরা উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসাবে গড়ে তুলতে চাই’—বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘জাতির পিতা যুদ্ধবিধস্ত দেশ গড়ে তুলে বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ হিসাবে প্রতিষ্ঠা করে গিয়েছিলেন। আমাদের দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টার ফসল আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হবার সক্ষমতা অর্জন করেছি। কিন্তু আমাদের লক্ষ্য আরও অনেক দূর যাওয়া।’
প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের মেয়াদে প্রেক্ষিত পরিকল্পনা গ্রহণ করে দেশকে এগিয়ে নিতে পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘২০০৯ সালে সরকার গঠন করে ২০১০ থেকে ২০২০ আমরা প্রেক্ষিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করে তারই ভিত্তিতে পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে গিয়েছি। বর্তমানে আমরা ২০২১ থেকে ২০৪১ প্রেক্ষিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছি।’
২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের পাশাপাশি জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘২০৪১ সালে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। সেই লক্ষ্য নিয়ে আমি কাজ করে যাচ্ছি। আজকে যারা গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করবেন, তারা আমার সেই ২০৪১-এর সৈনিক হিসাবেই কাজ করবেন এবং দেশকে যেন সামনের দিকে যেন এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি এবং দেশের ভাবমূর্তি যেন উজ্জ্বল হয়, সেদিকেই লক্ষ্য রাখবেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মুজিববর্ষে আমাদের অঙ্গীকার, বাংলাদেশে একটি মানুষও গৃহহারা ভূমিহীন থাকবে না। প্রতিটি মানুষের একটা ঠিকানা হবে। প্রতি ঘরে ঘরে আলো জ্বলবে। প্রতিটি মানুষ শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য সেবা পাবে। উন্নত জীবন পাবে, সুন্দরভাবে বাঁচবে এবং প্রতিটি গ্রামেই শহরে রূপান্তর হবে। প্রত্যেকে একেবারে নাগরিক সুবিধা গ্রামে বসে পাবে। সেইভাবেই আমরা বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে চাই এবং ইনশাল্লাহ আমি বিশ্বাস করি, এটা করা খুব কঠিন কাজ না। এটা করা সম্ভব।’
‘হয়তো চিরদিন থাকবো না, কিন্তু পরিকল্পনাটা দিয়ে যাচ্ছি। এখানেই আমরা থেমে থাকিনি। ২১০০ সালের বাংলাদেশ কেমন হবে? অর্থাৎ বাংলাদেশ একটি বদ্বীপ এই বদ্বীপের মানুষগুলি, যেমন জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত থেকে রক্ষা পাবে পাশাপাশি এদেশ আরও সুন্দরভাবে গড়ে উঠবে। সেদিকে লক্ষ্য রেখে ডেল্টা প্ল্যান তৈরি করে দিয়ে সেটা আমরা বাস্তবায়নের কাজও শুরু করেছি। যাতে করে এই দেশটি আরও উন্নত-সমৃদ্ধশালী হয়। প্রজন্মের পর প্রজন্ম যেন উন্নত জীবন পায়, সুন্দর জীবন পায়’—বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আমাদের স্বাধীনতা অর্থবহ হবে; এর সুফল প্রতিটি মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছাবে। বাংলাদেশ হবে ক্ষুধামুক্ত দারিদ্র্যমুক্ত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ। সোনার বাংলাদেশ গড়ার যে স্বপ্ন জাতির পিতা দেখেছিলেন আমরা তা বাস্তবায়ন করবো। সেটাই আমাদের এই ২০২১ সালের অঙ্গীকার।’
আমরা করোনাভাইরাস মোকাবিলা করছি উল্লেখ করে তিনি বলে, ‘ইতোমধ্যে আমাদের ভ্যাকসিন এসে গেছে। ভ্যাকসিন দেওয়ার কার্যক্রমও শুরু করেছি। বাংলাদেশের সবাই সুরক্ষিত থাকুক, সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হোক, সুন্দর জীবন পাক, সেটাই কামনা করি।’
সারাবাংলা/এনআর/এমআই