Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘সাংবাদিকরা বিরাগভাজন হয়ে এনআইডি নিয়ে অসত্য প্রতিবেদন করেন’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৮ জানুয়ারি ২০২১ ১৭:৪৫

ঢাকা: গণমাধ্যকর্মীরা অনেক সময় বিরাগভাজন হয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিয়ে অসত্য প্রতিবেদন প্রকাশ করে থাকেন বলে জাতীয় সংসদে বলেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

তিনি বলেন, অনেক ক্ষেত্রে সংশোধনের আবেদনে যেসব দাবি করা হয়, সেগুলো অযৌক্তিক ও বাস্তবতা বিবর্জিত। ফলে ওইসব আবেদন নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে যথাযথ প্রমাণপত্র দাখিল ও ক্ষেত্রবিশেষে নতুন করে তদন্তের প্রয়োজন পড়ে। এগুলোর ক্ষেত্রে জটিলতা তৈরি হয় এবং অনেক সময় দীর্ঘসূত্রিতা দেখা দেয়। এসব কারণে বিশেষ করে সাংবাদিক মহল বিরাগভাজন হয় এবং এ সংক্রান্ত সেবা সম্পর্কে বিভিন্ন প্রতিবেদন প্রকাশ করে থাকে, যা সম্পূর্ণ সত্য নয়।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) সংসদ অধিবেশনে জামালপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য মোজাফ্ফর হোসেনের লিখিত এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

অধিবেশনে সংসদ সদস্য মোজাফ্ফর হোসেন লিখিত প্রশ্নে বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র ইস্যু করতে গিয়ে বাবার নামের জায়গায় মায়ের নাম, প্রকৃত নামের জায়গায় অন্য কারও জনের নাম, নামের বানান ভুল বা এরকম কোনো ভুল হলে তা সংশোধন করতে গেলে হয়রানি হতে হয়। নাগরিকদের জন্য নির্ভুল পরিচয়পত্র পাওয়ার ব্যবস্থা করা হবে কি না— প্রশ্ন রাখেন মোজাফফর হোসেন। এ প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, সাংবাদিকরা বিরাগভাজন হয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) সেবা সম্পর্কে অসত্য প্রতিবেদন প্রকাশ করে থাকেন, যা সম্পূর্ণ সত্য নয়।

তিনি বলেন, চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় দক্ষ টেকনিক্যাল জনবল না থাকায় এবং সময় স্বল্পতার কারণে প্রাথমিক পর্যায়ে কিছু ভুল রয়ে যায়। এর অধিকাংশই বানানজনিত ভুল। জাতীয় পরিচয়পত্রের ওপর আস্থা ও বিশ্বাসযোগ্যতার কারণে সরকারি, বেসরকারি বিভিন্ন পর্যায়ে এ পর্যন্ত ১৪৪টি সংস্থা নাগরিকদের জাতীয় পরিচিতি নিশ্চিতকরণের জন্য চুক্তি করে এনআইডি সার্ভারের মাধ্যমে এনআইডি যাচাই সেবা গ্রহণ করেছে।

বিজ্ঞাপন

মন্ত্রী আরও বলেন, বিভিন্ন পর্যায়ের ভুলগুলোর বিষয়ে আইন ও বিধি অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন সংশোধনের সুযোগ দিলেও অজ্ঞতা ও অসচেতনতার কারণে অনেকেই যথাসময়ে সেই সেবা গ্রহণ করেননি। ফলে জাতীয় পরিচয়পত্রে লিপিবদ্ধ তথ্যে এখনো ভুল রয়ে গেছে।

আনিসুল হক জানান, এনআইডি সংশোধন বা পরিবর্তনের আবেদন সাধারণভাবে ৩০ কার্যদিবসে নিষ্পত্তির কথা। তবে সঠিক দলিলপত্র যুক্ত করে যৌক্তিক সংশোধনের আবেদন করলে তা ৫/৬ দিনেই নিষ্পত্তি হয়ে যায়। এনআইডি করার সময় জমা দেওয়া কাগজপত্রে উল্লেখ করা জন্মতারিখ মুদ্রণে ভুল হলে এ সংক্রান্ত আবেদনও দ্রুত নিষ্পত্তি করা হয়। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে কেউ কেউ উদ্দেশ্যমূলকভাবে জন্মতারিখ পরিবর্তন করতে আবেদন করেন বরে উল্লেখ করেন মন্ত্রী।

তিনি বলেন, একই ব্যক্তি নিবন্ধনের সময় একটি জন্মতারিখ দেন, আবার সংশোধনের জন্য ভিন্ন জন্ম তারিখ উল্লেখ করা জন্ম সনদ বা শিক্ষা বোর্ডের সনদ জমা দিয়ে জন্ম তারিখ পরিবর্তন চান। এসব ক্ষেত্রে জটিলতা দেখা দেয়। ওই সনদে উল্লেখ করা বয়সের সঙ্গে ব্যক্তির বাস্তব বয়সের মিলও থাকে না। এসব ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা তো হয়ই।

আইনমন্ত্রী বলেন, চাকরি বেতন ও ভাতা আদেশ অনুযায়ী সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন নির্ধারণ বা বেতন পাওয়ার ক্ষেত্রে এনআইডি’র তথ্য ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কিন্তু এ সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে কিছু প্রতিষ্ঠান জাতীয় পরিচয়পত্র আমলে না নিয়ে কেবল জন্ম সনদের ভিত্তিতে নিয়োগ দিচ্ছে।

বর্তমানে জাতীয় পরিচয়পত্রের সংশোধন আবেদন ঘরে বসে অনলাইনে করার পাশাপাশি ঘরে বসেই প্রিন্ট দিয়ে পরিচয়পত্র গ্রহণ করার সুযোগ রয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।

অধিবেশনে আরেক সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী জানান, সবশেষ ভোটার তালিকা হালনাগাদের পর দেশে ভোটার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ কোটি ১২ লাখ ৮৪ হাজার ১৫৮ জনে। আগামী ২ মার্চ জাতীয় ভোটার দিবসে এই খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এনআইডি জাতীয় পরিচয়পত্র টপ নিউজ সংসদ অধিবেশন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর