ডিআইজি-এমপি পরিচয়ে প্রতারণার ফাঁদ, পরে র্যাবের হাতে ধরা
২৮ জানুয়ারি ২০২১ ১৯:১৭
ঢাকা: তিনি নিজেকে কখনও এমপি নজরুল ইসলাম বাবু, আবার কখনও অ্যাডিশনাল ডিআইজি হাফিজ নামে পরিচয় দিয়ে থাকেন। আবার সুযোগ বুঝে কখনও নিজেকে পরিচয় দেন শেখ হেলাল নামে। এসব পরিচয়ের পেছনে তার একটাই উদ্দেশ্য- বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ডিজিসহ চাকুরি প্রত্যাশীদের চাকুরি দেওয়া, পদোন্নতি ও বদলির তদবির বাণিজ্য করা। আর এসব পরিচয়ে বিভিন্ন ধরনের তদবির বাণিজ্য প্রতারণার ফাঁদ পেতে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করে আসছিলেন তিনি। তিনি আর কেউ নন, মূলত পেশাদার প্রতারক ইবনে মিজান রনি (৫০)।
প্রতারণার দায়ে বছর তিনেক আগেও একবার গ্রেফতার করা হয় তাকে। কিন্তু জামিনে বেরিয়ে ফের আনসার সদর দফতরে ভুয়া তদবিরপত্র পাঠিয়ে ফাঁদে পড়ে রনি। তার ওই ভুয়া তদবিরপত্রটি সন্দেহজনক হলে আনসার কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরে দেয়। পরে তার এসব অপকর্মের অভিযোগ তদন্ত শেষে প্রমাণ সাপেক্ষে রনিকে গ্রেফতার করে র্যাব-৩। গ্রেফতারের পর তার কাছ থেকে বেশ কয়েকটি মোবাইল নম্বর উদ্ধার করা হয়েছে। এসব মোবাইল নম্বরে রয়েছে তার প্রতারণার বিভিন্ন ধরনের এসএমএস।
মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) রাতে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) ও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব-৩) যৌথ অভিযানে রাজধানীর গোপীবাগ এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় রনিকে। এ সময় তার কাছ থেকে তিনটি মোবাইল, প্রতারণামূলক এসএমএস ও আট পাতা স্কিনশট উদ্ধার করা হয়।
র্যাব-৩ মিডিয়ার সহকারী পরিচালক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বীনা রাণী দাস তথ্যগুলো নিশ্চিত করে জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত রনি স্বীকার করেছে যে, সে নিজেকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পরিচয়ে চাকুরিতে নিয়োগ, পদোন্নতি এবং বদলির তদবির বাণিজ্য করে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করেছে। তার সিডিএমএস রেকর্ড পর্যালোচনা করে দেখা গেছে সে একজন পেশাদার প্রতারক। আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া প্রতারণা ও অন্যান্য অপরাধের দায়ে তার বিরুদ্ধে সাতটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে বলে জানান তিনি।
র্যাব সূত্রে জানা যায়, গত ২২ নভেম্বর আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদর দফতরে একটি জনপ্রিয় অ্যাপসের মাধ্যমে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর সই করা আনসার পদে চাকুরি দেওয়ার জন্য সুপারিশ পত্র পাঠানো হয়। বিষয়টি সন্দেহ হওয়াতে প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষ জানতে পারে আবেদনপত্রটি প্রতারক রনির। ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়।
র্যাব সূত্রে আরও জানা যায়, ইবনে মিজান রনি চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জের বাচ্চু মিয়ার ছেলে। পৌরসভার ট্রকি রোডের বারেক হাজীর বাড়ির পাশে তার পাঁচতলা বাড়ি রয়েছে। তার একাধিক স্ত্রী আছে। রনি ফরিদপুর ও রাজবাড়িতে বেশিরভাগ সময় থাকে বলে জানা গেছে। এর আগে ২০১৭ সালে মন্ত্রী-এমপির পরিচয় দিয়ে প্রতারণার অভিযোগে রনি গ্রেফতার করা হয়।
সারাবাংলা/এসএইচ/পিটিএম