৩৮ জেলা ভ্যাকসিন পাচ্ছে আজ, বেশি যাচ্ছে চট্টগ্রাম বিভাগে
২৯ জানুয়ারি ২০২১ ১৪:০৬
ঢাকা: নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে দেশের ৩৮টি জেলায় আজ শুক্রবার (২৯ জানুয়ারি) পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ৫০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন। রোববারের (৩১ জানুয়ারি) মধ্যে দেশের সব জেলায় পৌঁছে দেওয়া হবে এই ভ্যাকসিন। সারাদেশে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় এই ভ্যাকসিন পৌঁছে দিতে কাজ করছে দেশে সিরাম ইনস্টিটিউটের একমাত্র প্রতিনিধি বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস।
স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বেক্সিমকোর একাধিক সূত্র বলছে, সংক্রমণের মাত্রা বেশি হওয়ার সবচেয়ে বেশি পরিমাণ ভ্যাকসিন যাচ্ছে চট্টগ্রাম বিভাগে। আর সংক্রমণের মাত্রা কম হওয়ায় আপাতত সবচেয়ে কম ভ্যাকসিন পাচ্ছে বরিশাল বিভাগ। এরই মধ্যে বেশকিছু জেলাতে ভ্যাকসিন পৌঁছেও গেছে।
বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) রাব্বুর রেজা সারাবাংলাকে বলেন, নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ সরকারের আনা ৫০ লাখ ভ্যাকসিন বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ওয়্যারহাউজে রাখা আছে। এরই মধ্যে সেগুলোর ল্যাব টেস্টিং রিপোর্ট পাওয়া গেছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশনা অনুযায়ী সারাদেশের জেলা শহরগুলোতে আমরা নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ভ্যাকসিন পাঠিয়ে দেবো। এর জন্য ব্যবহার করা হবে বিশেষ ফ্রিজার ভ্যান। সেখান থেকে বিভিন্ন কেন্দ্রে ভ্যাকসিন পাঠাবে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ।
স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, দেশে করোনা সংক্রমণের হার বেশি হওয়ার কারণে চট্টগ্রাম বিভাগে ভ্যাকসিন যাচ্ছে বেশি। এই বিভাগে ১২ লাখ ৬০ হাজার ডোজ (১০৫ বাক্স) ভ্যাকসিন যাচ্ছে। রাজশাহী বিভাগে যাচ্ছে ছয় লাখ ৭২ হাজার ডোজ (৫৬ বাক্স) ভ্যাকসিন। এর বাইরে রংপুর বিভাগ ছয় লাখ ডোজ (৫০ বাক্স) এবং ঢাকা ও খুলনা বিভাগ পাচ্ছে পাঁচ লাখ ৮৮ হাজার ডোজ (৪৯ বাক্স) করে ভ্যাকসিন। এছাড়া ৫ লাখ ময়মনসিংহে ৪২ বাক্সে ৫ লাখ ৪ হাজার ডোজ ও সিলেটে যাচ্ছে ৩৭ বাক্সে চার লাখ ৪৪ হাজার ডোজ ভ্যাকসি যাচ্ছে। সবচেয়ে কম ২৯ বাক্সে তিন লাখ ৪৮ হাজার ডোজ ভ্যাকসিন যাচ্ছে বরিশালে।
অন্যদিকে জেলাভিত্তিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সংক্রমণ মাত্রা কম হওয়ায় কম ভ্যাকসিন পাঠানো হবে বান্দরবন, খাগড়াছড়ি, মেহেরপুর ও ঝালকাঠি জেলায়। এসব জেলায় যাবে ১২ হাজার ডোজ করে ভ্যাকসিন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও গবেষণা) অধ্যাপক ডা. মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, সারাদেশে পর্যায়ক্রমে ভ্যাকসিন পাঠানো হবে। ভ্যাকসিন সংরক্ষণ করা হবে সারাদেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের ইপিআই স্টোরে। এরই মধ্যে ভ্যাকসিন প্রয়োগ বিষয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে কমিটি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ঢাকা বাইরে সংক্রমণের মাত্রায় বেশি পাওয়া গেছে চট্টগ্রামে। মৃত্যুহারও এই বিভাগে বেশি। তাই সবচেয়ে বেশি ভ্যাকসিন পাঠানোর হচ্ছে সেখানেই।
স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, সরকারের কিনে আনা ৫০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিনই যাচ্ছে রাজধানীর বাইরে। এছাড়া ভারত সরকারের উপহার হিসেবে পাঠানো অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ২০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন রাজধানীর জন্য রাখা হচ্ছে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলায় ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে অক্সফোর্ডের কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনের তিন কোটি ডোজ কেনার চুক্তি করেছিল সরকার। ত্রিপাক্ষিক এই চুক্তির আওতায় বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস ভ্যাকসিনগুলো দেশে আনছে। এর মধ্যে গত ২৫ জানুয়ারি প্রথম চালানে ৫০ লাখ ভ্যাকসিন দেশে পৌঁছেছে। এর আগে ভারত সরকারের উপহারের ২০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন দেশে আগে ২১ জানুয়ারি।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা অনুযায়ী, এই ৭০ লাখ ভ্যাকসিনের ভেতরে ৬০ লাখ ভ্যাকসিন দেওয়া হবে প্রথম মাসে। দ্বিতীয় মাসে দেওয়া হবে ৫০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন। তৃতীয় মাসে দেওয়া হবে আবার ৬০ লাখ। প্রথম মাসে ভ্যাকসিন পাওয়াদের দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হবে তৃতীয় মাসে। আর এই হিসাব অনুযায়ী ভ্যাকসিন বিতরণ পরিকল্পনাও করা হয়েছে।
সারাবাংলা/এসবি/টিআর
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রেজেনেকা করোনার ভ্যাকসিন কোভিশিল্ড বেক্সিমকো ভ্যাকসিন