ভ্যাকসিন গ্রহীতাদের খোঁজ রাখছে ঢামেক কর্তৃপক্ষ
২৯ জানুয়ারি ২০২১ ১৪:৩৯
ঢাকা: দেশে দ্বিতীয় দিন ও প্রতিষ্ঠানটিতে প্রথম দিনে যে ১২০ জনকে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে, তাদের সবার খোঁজখবর রাখছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত তাদের কারও কোনো সমস্যার খবর পাওয়া যায়নি।
বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯টায় ঢামেক হাসপাতালে ভ্যাকসিন প্রয়োগ কর্মসূচি শুরু হয়। দুপুর পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে এই ভ্যাকসিন দেওয়া হয় ১২০ জনকে। এর মধ্যে সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদও এখানেই ভ্যাকসিন নেন।
ভ্যাকসিন গ্রহীতাদের খোঁজ রাখা হচ্ছে জানিয়ে ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক বলেন, হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (অর্থ) ডা. আশরাফুল আলম ও তার স্ত্রী সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. হালিমা সুলতানা হক দু’জনেই ভ্যাকসিন নিয়েছেন। তারপর থেকে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের এখন পর্যন্ত কোনো সমস্যা হয়নি। আমরা বাকি সবারও শারীরিক অবস্থার খোঁজ রাখছি। তাদের কারও কোনো সমস্যার খবর এখনো পাইনি।
তিনি বলেন, আমাদের পরিকল্পনা ছিল বৃহস্পতিবার ১০০ জনকে ভ্যাকসিন দেওয়া। তবে সবাই উৎসাহিত হওয়ায় দুপুরের মধ্যেই ১২০ জনকে ভ্যাকসিন দিয়ে দিয়েছি। এর মধ্যে ২০ জন নারী ও ১০০ জন পুরুষ। ১২০ জনের মধ্যে ৫৪ চিকিৎসক, হাসপাতালের কর্মচারী-কর্মকর্তা ৪৩ জন, নার্স ৭ জন ও ১৫ জন আনসার সদস্যকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক জানান, যারা প্রথম ডোজ দিয়েছেন তাদের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি নাও হতে পারে। দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার পর তাদের শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। ৮ থেকে ১২ সপ্তাহ পর তাদেরকেই আবার দ্বিতীয় ডোজ নিতে হবে। একইসঙ্গে তাদের সবাইকে স্বাস্থ্যবিধিও মেনে চলতে বলা হয়েছে।
ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, যেকোনো ভ্যাকসিনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকতে পারে। যেমন এলার্জি, মৃদু জ্বর, শরীর ব্যথা হতে পারে। সেজন্য চিকিৎসকরাও প্রস্তুত রয়েছেন। দেশের জনগণ সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানতে পারছে কীভাবে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভ্যাকসিন গ্রহণ করা হচ্ছে।
এর আগে বেলা ১১টার দিকে হাসপাতালে আসেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তার উপস্থিতিতে ভ্যাকসিন নিতে আসেন সাংস্কৃতিক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। ভ্যাকসিন নেওয়ার পর প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভ্যাকসিন দেওয়ার আগে যেমন ছিলাম, এখনো তেমনই আছি।
বৃহস্পতিবার বিএসএমএমইউ হাসপাতালে করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে ঢামেকে আসেন স্বাস্থ্য সচিব আব্দুল মান্নান ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক এ বি এম খুরশীদ আলম। স্বাস্থ্য সচিব আব্দুল মান্নান বলেন, বিএসএমএমইউ হাসপাতাল থেকে করোনা ভ্যাকসিন নিয়েছি। ভ্যাকসিন নেওয়ার পর অস্বাভাবিকতা অনুভব করছি না। আগে যেমন ছিলাম, এখনো তেমনই আছি। কোনো অসুস্থতা বোধ করছি না।
পরে দুপুরের দিকে ঢামেক হাসপাতালে করোনা ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রম পরিদর্শন করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা উন্নয়ন) ডা. মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা। তিনি বলেন, এটি একটা নিরাপদ ভ্যাকসিন। যারা এই ভ্যাকসিন নিয়েছেন, তাদের কিন্তু এখনই প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়নি। দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পর বোঝা যাবে। দেশের ৮০ শতাংশ মানুষকে করোনা ভ্যাকসিন দিতে পারলে একটা আশানুরূপ ফল পাওয়া যাবে। যারা ভ্যাকসিন নিয়েছেন তাদেরও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে এবং মাস্ক পরতে হবে।
সারাবাংলা/এসএসআর/এসএসএ