‘পুরুষ পুলিশের কারণে থানায় অভিযোগ করেন না ৬০% নারী’
২৯ জানুয়ারি ২০২১ ১৬:৪৭
ঢাকা: নির্যাতনের কথা পুরুষ পুলিশকে জানাতে হয় বলে দেশে ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ ভুক্তভোগী নারীই থানায় যান না। এ কারণে প্রতিটি থানায় একজন করে নারী পুলিশ সদস্য রাখার বিষয়ে ভাবা হচ্ছে, যেন একজন নারীর কাছে তার অভিযোগ তুলে ধরতে সমস্যা না হয়।
শুক্রবার (২৯ জানুয়ারি) সকালে বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক (বিডিওএসএন) আয়োজিত অনলাইনে ‘অ্যাডা লাভলেস সেলিব্রেশন’ রাউন্ড টেবিল আলোচনায় এসব কথা বলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম ডিভিশনের সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার সৈয়দ নাসিরুল্লাহ।
বিডিওএসএনের সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসানের সঞ্চালনায় এতে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক অথরিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক নোভা আহমেদ, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি আমিনুল হাকিম ও বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির (বিসিএস) সভাপতি শাহিদ উল মুনির।
আলোচনায় পুলিশ কর্মকর্তা সৈয়দ নাসিরুল্লাহ বলেন, কিভাবে নারীদের সমস্যা বা অভিযোগ আরও নির্দিষ্ট করে বিচারের আওতায় আনা যায়, সেটি নিয়ে পুলিশ বিভাগে আলোচনা চলছে। তবে এ সংক্রান্ত প্রতিটি সরকারি সংস্থা বা বিভাগকে একসঙ্গে বসে কাজ শুরু করতে হবে। কারণ দীর্ঘদিন ধরে শুধু আলোচনাই হচ্ছে। এবার এসব আলোচনার বাস্তবায়ন শুরু করা উচিত।
দেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের জন্য কোনো ধরনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে কি না— আলোচনায় এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে আইএসপিএবি সভাপতি আমিনুল হাকিম বলেন, ২০০৬ সালে আইএসপিএবি থেকে একটি ইমার্জেন্সি সাইবার রেসপন্স টিম গঠন করা হয়। সেক্ষেত্রে গ্রাম পর্যায়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা আমাদের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। তখন সচেতনতা তৈরি করায় আমরা অল্প পরিসরে বেশকিছু কাজ করা হয়েছিল। যেমন— বুকলেটের মাধ্যমে সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধে করণীয় নিয়ে প্রচারণা চালানো হয়েছিল। এ বছর সেটি বড় পরিসরে করার পরিকল্পনা রয়েছে।
বিসিএস সভাপতি শাহিদ উল মুনির বলেন, সাইবার সিকিউরিটি আইন সম্পর্কে সবাইকে সচেতন করতে হবে। তবে রাতারাতি কোনো পরিবর্তন হবে না। অনেক সময় সাইবার বুলিংয়ের শিকার হলেও ভিকটিম তা বুঝতে পারে না। ভিকটিমকে এই আইন সম্পর্কে ভালোভাবে সচেতন করতে হবে, যেন সে নিজেই বিষয়টি মোকাবিলা করতে পারে। সবাই মিলে কাজ শুরু করে দিলে এ সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা করেন তিনি।
বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক অথরিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম বলেন, মেয়েদের সাহসী হতে হবে। আমাদের দেশের মেয়েরা অনেক সময় পরিস্থিতির শিকার হয়েও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারে না কেবল সাহস ও সাইবার আইন সম্পর্কে সঠিক তথ্য বা ধারণার অভাবে। এসব বিষয় নিয়ে হাইটেক পার্ক অথরিটিতে এলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ সময় দেশের নারী ভিকটিমদের সম্পর্কে কোনো রিসার্চ আছে কি না, সেটি নিয়ে কথা বলেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নোভা আহমেদ।
এ বছর থেকেই সাইবার আইনটি সম্পর্কে ভিকটিমদের সচেতন করা ও থানায় অভিযোগ করানোর বিষয়ে তাদের উদ্বুদ্ধ করতে সবার সমন্বয়ে কাজ শুরু করতে হবে জানিয়ে অনুষ্ঠান শেষ করেন বিডিওএসএনের সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান।
এর আগে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিদেশি অতিথিদের কি-নোট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে শুরু হয় বিডিওএসএন আয়োজিত দুই দিনব্যাপী অ্যাডা লাভলেস সেলিব্রেশন। সেলিব্রেশনে আইটি খাতের উদ্যোক্তা, এক্সপার্ট, নীতিনির্ধারক, চাকরিজীবীরা তাদের জীবনের গল্প বলেন ও শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেন।
প্রসঙ্গত, অ্যাডা লাভলেস বিশ্বের প্রথম নারী প্রোগ্রামার ও বিখ্যাত ব্রিটিশ কবি লর্ড বায়রনের মেয়ে। তাকে স্মরণ করতে তার নামে এই সেলিব্রেশন করে থাকে বিডিওএসএন।
সারাবাংলা/টিআর
অধ্যাপক নোভা আহমেদ অ্যাডা লাভলেস সেলিব্রেশন আইএসপিএবি সভাপতি আমিনুল হাকিম ডিএমপি কর্মকর্তা সৈয়দ নাসিরুল্লাহ থানায় অভিযোগ নারী নির্যাতন নির্যাতন পুরুষ পুলিশ বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক-বিডিওএসএন বিডিওএসএন বিসিএস সভাপতি শাহিদ উল মুনির হাইটেক পার্ক অথরিটি হোসনে আরা বেগম