পোল্যান্ডের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে প্রয়োজন বিনিয়োগে সক্ষমতা
৩০ জানুয়ারি ২০২১ ১৯:০০
ঢাকা: বাংলাদেশ-পোল্যান্ডের সম্পর্ক উন্নয়নে বিনিয়োগের দিকে আরও বেশি করে নজর দিতে হবে বলে মনে করেন পোল্যান্ডে বাংলাদেশের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত মাহফুজুর রহমান। এ ক্ষেত্রে দেশের পোশাক, পাট ও চা শিল্পের সক্ষমতা বাড়াতে পারলে সেখানে বিনিয়োগ বাড়ানো সম্ভব বলেও জানান তিনি।
বুধবার (২৭ জানুয়ারি) সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সারাবাংলা.নেটের নিয়মিত আয়োজন ‘সারাবাংলা ফোকাসে’ যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানের এ পর্বের বিষয় ছিল ‘বাংলাদেশ-পোল্যান্ড সম্পর্ক’।
অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন সারাবাংলা.নেটের স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট এম এ কে জিলানী।
পোল্যান্ড তথা মধ্য ইউরোপের সঙ্গে বর্তমানে বাংলাদেশের ভালো সম্পর্ক রয়েছে উল্লেখ করে মাহফুজুর রহমান বলেন, দুদেশের সম্পর্ক আরও ভালো হতে পারে। তবে খুব বেশি নিবিড় হওয়ার সুযোগ নেই। কারণ দুদেশের নীতি দুরকম, আবার প্রাধান্যও ভিন্ন।
২০০২ সালে পোল্যান্ডে এবং ২০০৫ সালে বাংলাদেশে দুদেশের দূতাবাস বন্ধ হয়ে যায়। সেসময়ই দুদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের অনেক সুযোগ ছিল বলেও জানান তিনি। তবে পরবর্তীকালে ২০১৫ সালে পোল্যান্ডে বাংলাদেশের দূতাবাস আবারও শুরু করা অগ্রগামী সিদ্ধান্ত ছিল বলে মনে করেন মাহফুজুর রহমান।
বাংলাদেশে পোল্যান্ডের দূতাবাস পুনরায় শুরু করার বিষয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে পোল্যান্ডের নীতিগত কোনো বাধা নেই। তবে সেদেশের বর্তমান সরকার অনেক বেশি রক্ষণশীল বলেই বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশে দূতাবাস হচ্ছে না।
পোল্যান্ডের রক্ষণশীল মনোভাবের বিষয়ে মাহফুজুর রহমান বলেন, ১২৫ বছর পৃথিবীতে পোল্যান্ডের মানচিত্র ছিল না। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধেও তারা অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তাই শুধু বিশ্ব নয়, প্রতিবেশী দেশ সম্পর্কেও তারা রক্ষণশীল মনোভাব দেখিয়ে আসছে।
মাহফুজুর রহমান বলেন, জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য তারা প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ককে প্রাধান্য দিচ্ছে। আবার যেসব দেশের সঙ্গে রাজনৈতিক সম্পর্ক ভালো না, সেসব দেশ থেকে অর্থনৈতিক নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনারও চেষ্টা করছে। এ কারণে নতুন বাজার সৃষ্টিতে চীন ও ভারতকে প্রাধান্য দিচ্ছে পোল্যান্ড।
এ বিষয়ে তিনি আরও জানান, ২০১৮ সালে বাংলাদেশের সঙ্গে কৃষি ও খাদ্যসহ বিভিন্ন খাতে বাণিজ্য সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। কিন্তু তাদের আগ্রহের জায়গা ছিল কয়লা ও সমরাস্ত্র। তাই বিষয়টি আর এগোয়নি।
বর্তমানে পোল্যান্ডে রফতানি এক বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশের সক্ষমতা বাড়াতে পারলে সেটা আরও বহুগুণ বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে বলে মনে করেন মাহফুজুর রহমান। এছাড়া পোশাক, পাট ও চা শিল্পে বাংলাদেশের সক্ষমতা অনেক বেশি বাড়ানোর সুযোগ আছে বলেও জানান তিনি।
তবে গত পাঁচ বছরে দুদেশের বাণিজ্য বেড়েছে এবং নতুন পণ্য সংযুক্ত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি জানান, পোল্যান্ডের অর্থনীতিতে কর্মসংস্থান তৈরি হওয়ায় বাংলাদেশের সুযোগ বেড়েছে। সেখানে বাংলাদেশের শ্রমিকদের প্রতারিত হওয়ার সুযোগও কম।
তিনি আরও জানান, পোল্যান্ডে গ্রিন হাউজ, ফুড প্রসেসিং ও টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিতে বাংলাদেশের শ্রমিকদের ভালো চাহিদা আছে। এছাড়া বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্যেও সেখানে কম খরচে পড়াশুনার অনেক সুযোগ আছে।
[প্রসঙ্গত, সপ্তাহের শনি, সোম ও বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় সারাবাংলা ফোকাস অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। সারাবাংলা.নেটের ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেলে অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করা হয় ]
সারাবাংলা/এসএসএস
পোল্যান্ড পোল্যান্ডে বিনিয়োগ বাংলাদেশ-পোল্যান্ড সম্পর্ক বিনিয়োগ সারাবাংলা ফোকাস