‘২০৫০ সাল নাগাদ পানির চাহিদা বাড়বে ৫০ শতাংশ’
৩০ জানুয়ারি ২০২১ ১৭:১২
ঢাকা: পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছ্নে, পৃথিবীর ৪ বিলিয়ন মানুষ বছরের একটি নির্দিষ্ট সময় বিশুদ্ধ পানির সংকটে ভোগে। এ অবস্থায় ২০৫০ সালের মধ্যে পানির চাহিদা আরও ৫০ শতাংশ বেড়ে যাবে।
আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ আয়োজিত তিন দিনের আন্তর্জাতিক পানি সম্মেলন-২০২১-এর শেষ দিন শুক্রবার (২৯ জানুয়ারি) প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সম্মেলনের শেষ দিনে ‘পানি ও জলবায়ু: তৃণমূল উদ্ভাবন এবং সমাধান’ শীর্ষক আলোচনায় অংশ নিয়ে তৃণমূলের উদ্ভাবন এবং প্রযুক্তিগত সমাধানের ওপর জোর দেন নেপাল, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশের বিশেষজ্ঞরা। শনিবার (৩০ জানুয়ারি) সংগঠনটির পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, আগামী দিনের জন্য পানির উৎসগুলোর যথাযথ সংরক্ষণ করতে হবে। দুষ্প্রাপ্যতার কারণে ভবিষ্যতে পানি এবং পানির উৎসই রাষ্ট্রীয় সংঘাতের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। সেক্ষেত্রে মানুষের উন্নত জীবন নিশ্চিত করতে টেকসই পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা নীতিমালা প্রণয়ণ করতে হবে।
ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট-এর পরিচালক-আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ প্রফেসর সালেমুল হক বলেন, বদ্বীপ আকৃতির বাংলাদেশের বেশিরভাগ অংশজুড়েই রয়েছে পানি। তবে ধীরে ধীরে ভূপৃষ্ঠের ওপরে পানির উৎস কমে যাওয়ায় শুষ্ক মৌসুমে পানির তীব্র সংকট দেখা দিচ্ছে। খরাপ্রবণ রাজশাহীর বরেন্দ্র অঞ্চল কৃষিকাজের জন্য ভূগর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। বর্ষা মৌসুম এলেই ঢাকা ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় আর এজন্য অপরিকল্পিত পানি ব্যবস্থাপনাকে দায়ী।
কনফারেন্সে অংশ নিয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইজারল্যান্ড রাষ্ট্রদূত নাথালি শিউআখ বলেন, পানি মৌলিক প্রাকৃতিক সম্পদ যা দুটি দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। মহামারি করোনা থেকে শিক্ষা নিয়ে, বিভিন্ন দেশের মধ্যদিয়ে বয়ে যাওয়া অভিন্ন পানির উৎসগুলোর সঠিক ব্যবস্থাপনা নিতে হবে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে যুক্তরাজ্যে অনুষ্ঠেয় জাতিসংঘের আসন্ন জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনের এশিয়া প্যাসিফিক ও দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের আঞ্চলিক দূত কেন ও’ফ্লেহার্টি বলেন, টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে যুক্তরাজ্য সব দেশকে সহায়তা দিতে প্রস্তুত। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশসহ বিশ্বের অন্যান্যদেশের সমন্বিত উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন তিনি। যুক্তরাজ্য আগামী ৫ বছরের জন্য ১১.৪ বিলিয়ন পাউন্ড বরাদ্দ রেখে যার অর্ধেক পরিমান অর্থ ব্যয় হবে অভিযোজন খাতে বলেও জানান তিনি।
সমাপনী বক্তব্যে অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির বলেন, তিন দিনের সম্মেলনের আলোচনা একটি উপলদ্ধিতে উপনীত হয়েছে, তা হলো ভূমি কেন্দ্রিকতা থেকে বেরিয়ে আমাদের পানিকেন্দ্রিক চিন্তার প্রসারতা বাড়াতে হবে। আর নারীরা যেহেতু গৃহস্থালীর পানির উৎস ব্যবস্থাপনা করেন, তাই পানিসম্পদের ব্যবস্থাপনা ও নীতিমালা প্রণয়নের ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।
তিন দিনের এই সম্মলন শুরু হয় ২৭ জানুয়ারি বিকেল ৪টায়। শেষ হয়েছে শুক্রবার রাতে। সম্মেলনে পানি বিশেষজ্ঞসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।
সারাবাংলা/ইএইচটি/এমআই