Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘মেয়রের চেয়ারে বসে একচুলও বিচ্যুত হবো না’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৩১ জানুয়ারি ২০২১ ১৪:৪১

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, চিরজীবন মানুষের কল্যাণে রাজনীতি করেছি। লোভ, মোহ আমাকে আমার নীতি-আদর্শ থেকে বিচ্যুত করতে পারেনি। কথা দিতে পারি, মেয়রের চেয়ারে বসে আমি আমার নীতি-আদর্শ থেকে একচুলও বিচ্যুত হবো না। আমি চাই মানুষের সেবা করতে।’

রোববার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় রেজাউল করিম চৌধুরী এসব কথা বলেন। এ সময় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলও উপস্থিত ছিলেন।

চট্টগ্রামকে বিপন্ন শহর উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা এই চট্টগ্রামকে নিয়ে গর্ব করি। চট্টগ্রামকে অনেক বিশেষণে ভূষিত করি। কিন্তু আমাদের অবহেলা-গাফেলতির কারণে, সমন্বয়ের অভাবে চট্টগ্রাম আজ বিপন্ন হতে বসেছে। অথচ চট্টগ্রামকে সুন্দর করে সাজানো অসম্ভব ব্যাপার নয়। খাল দখল, খালের পাড়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদসহ যত সমস্যা আছে, সমাধানে আমি কঠোর পদক্ষেপ নেব। সোজা কথায় বলতে চাই- কারও মুখের দিকে তাকিয়ে আমি দায়িত্ব পালন করব না।

চট্টগ্রামকে গড়তে সবার সহযোগিতা প্রত্যাশা করে রেজাউল বলেন, আমার ইশতেহারে যা তুলে ধরেছি সেখানে অবাস্তব কিছুই বলিনি। আমি যতটুকু সম্ভব পুরনো ধারা পরিবর্তন করে নতুন ধারার সূচনা করতে চাই। সবাইকে নিয়ে এ শহর গড়তে চাই। এ শহর যেমন একজন মেয়রের, এ শহর আপনারও, এ শহর সবার। আমার লক্ষ্য, আমার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হলে সব শ্রেণিপেশার মানুষের সহযোগিতা প্রয়োজন। আমি চট্টগ্রামকে সুন্দরভাবে, পরিকল্পিতভাবে গড়তে চাই।

‘মেয়রের চেয়ারে আমি বসেছি, তাই সব দায়িত্ব আমার, এটা ভাবলে ভুল হবে। সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে, না হলে কিভাবে এগিয়ে যাব? আমি সবজান্তা না। অনেকে চেয়ারে বসে নিজেকে সবজান্তা ভাবে, আমি সেটা ভাবী না। একটা বিল্ডিং বানাতে গেলে ইঞ্জিনিয়ার লাগে, শ্রমিক লাগে, ইলেকট্রিশিয়ান লাগে। আমি যদি নিজেকে ইঞ্জিনিয়ার-ইলেকট্রিশিয়ান-শ্রমিক সবকিছু ভাবি, তাহলে তো হবে না।’ যোগ করেন তিনি।

সব নাগরিকের মতামত প্রত্যাশা করে তিনি বলেন, প্রত্যেকের মতামত আমি গ্রহণ করতে চাই। সবার মতামত নিয়ে চট্টগ্রামকে পরিকল্পিতভাবে গড়তে চাই। না হলে যত কথার ফুলঝুড়ি ছড়াই না কেন, চট্টগ্রাম সেই আগের তিমিরেই রয়ে যাবে। প্রত্যেকের দায়িত্ব আছে। প্রত্যেককে দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।

কিশোর অপরাধকে চট্টগ্রামে অনেক বড় সমস্যা উল্লেখ করে তিনি বলেন, কিশোর গ্যাং একটা সমস্যা। কিন্তু এজন্য কিশোরদের দোষ দিয়ে তো কোনো লাভ নেই। চট্টগ্রাম শহরে এখন সংস্কৃতি চর্চা বলতে কিছু নেই। একসময় এই শহরে যাত্রা, থিয়েটার, নাটক, পালাগান হত। পাড়ায়-পাড়ায় হত। এখন তো সেসবের কিছুই নেই। সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স করতে হবে। খেলার মাঠ নেই। শিশু-কিশোরদের তো মোবাইল টিপাটিপি ছাড়া আর কিছু করার নেই। ছোট করে হলেও খেলার মাঠ করতে চাই। সরকারি অনেক পরিত্যক্ত জায়গা আছে, সেখানে যাতে আমাদের ছেলেরা খেলতে পারে সেই ব্যবস্থা করতে চাই।

গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে রেজাউল বলেন, ‘আপনারা সমাজের আয়না। আপনাদের আয়নায় আমরা দেশকে দেখি, সমাজকে দেখি। আপনারা অবশ্যই ভুলত্রুটি ধরিয়ে দেবেন। অবশ্যই সমালোচনা করবেন, তবে সমাধানের পথও দেখিয়ে দিতে হবে। সমাধনের পথ না দেখিয়ে শুধু সমালোচনা করলে কোনো ফল আসবে না।’

চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাসের সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম সম্পাদক নজরুল ইসলামের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, নগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন বাবুল, কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালাম, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, সিনিয়র সহ-সভাপতি সালাহউদ্দিন মো. রেজা, সাবেক সভাপতি কলিম সরওয়ার এবং চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম।

সারাবাংলা/আরডি/এএম

নবনির্বাচিত মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর