‘কোনো দল করোনা সংকটে আ.লীগের মতো মানুষের পাশে দাঁড়ায়নি’
৩১ জানুয়ারি ২০২১ ১৭:৪৭
ঢাকা: তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, করোনা মহামারি নিয়ে অনেকে বড় বড় কথা বলেন। অনেকে নয়াপল্টন অফিসে বসে সংবাদ সম্মেলন করেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের মতো কোন রাজনৈতিক দল এই করোনার সংকটে মানুষের পাশে দাঁড়ায়নি।
রোববার (৩১ জানুয়ারি) সকালে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনিত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘জনগণের পাশে দাঁড়ানোর কারণে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। কয়েকজন সংসদ সদস্যও করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন দলের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য। করোনায় আওয়ামী লীগের প্রায় এক হাজারের কাছাকাছি নেতাকর্মী মৃত্যুবরণ করেছেন। অনেক সংসদ সদস্য এবং মন্ত্রিসভার এক তৃতীংশ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়ে সেরে উঠে আবার কাজে নেমে পড়েছেন। এটি জননেত্রী শেখ হাসিনার কারণে সম্ভব হয়েছে। তার সঠিক নেতৃত্বের কারণেই সম্ভব হয়েছে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘অনেকে এটি স্বীকার করতে না চাইলেও বিএনপি এবং তার মিত্ররা আর রাত ১২টার পর যারা টিভির পর্দা গরম করে তাদের কেউ কেউ তা স্বীকার না করলেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছে। জাতিসংঘের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানানো হয়েছে। এই করোনা মহামারির মধ্যে পৃথিবীর সবদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক। পৃথিবীর মাত্র ২০টি দেশে জিডিপি গ্রোথ পজিটিভ। আর তার মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থা তৃতীয়।’
তিনি বলেন, ‘এই করোনার মহামারির মধ্যে জিডিপি গ্রোথ ধরে রাখার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পৃথিবীর মধ্যে এক নম্বরে রয়েছে। আশপাশের দেশের তুলনা করলে দেখা যায়, ভারতে জিডিপি গ্রোথ মাইনাস ১০, পাকিস্তানে মাইনাস শূন্য দশমিক ৩৮, শ্রীলংকা মাইনাস ৪ দশমিক ৫৫, ভুটানে প্লাস শূন্য দশমিক ৫৭, নেপাল শূন্য দশমিক শূন্য ২, আফগানিস্তান মাইনাস ৫। বাংলাদেশ সেখানে জিডিপি ধরে রেখেছে ২৪ শতাংশ। যেটা পৃথিবীতে তৃতীয় এবং কার্যত প্রথম।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২১ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে মধ্য আয়ের দেশে উন্নীত করার ঘোষণা দিয়েছেন। বাংলাদেশ আজকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। বাংলাদেশ ছিল স্বল্পোন্নত দেশের তালিকাভুক্ত একটি দেশ। ২০২১ সাল আসার আগেই বাংলাদেশ মধ্য আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে তিনি একটি উন্নত রাষ্ট্রে রূপান্তর করবেন। প্রধানমন্ত্রী শুধু অবকাঠামোগত উন্নয়ন চান না, একটি নতুন প্রজন্ম তৈরি করতে চান। যে প্রজন্ম হবে মেধা, মূল্যবোধ ও দেশাত্মবোধে সমৃদ্ধ একটি নতুন প্রজন্ম।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দৃশ্যপট আবার উল্টে দিতে চাই। আমরা ২০৪১ সাল নাগাদ আবার উন্নত দেশে রূপান্তরিত হব, আমরা ধনী দেশে রূপান্তরিত হব। আমরা শুধু বস্তুগত উন্নয়নের মাধ্যমে ধনী হব তা নয়। আমরা আত্মিক উন্নয়নের মাধ্যমে একটি নতুন প্রজন্ম তৈরি করব। আমরা একটি মানবিক রাষ্ট্র গঠন করতে চাই।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘করোনাভাইরাস মোকাবিলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ হচ্ছে উদাহরণ সৃষ্টিকারী দেশ। পৃথিবীর সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। এই ঘনবসতিপূর্ণ দেশের রাজধানী ঢাকা হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ শহরের মধ্যে একটি। প্রধানমন্ত্রীর সঠিক ও দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে বাংলাদেশ করোনা মহামারি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছে। ব্লুমবার্গের মতে, করোনা মহামারি মোকাবিলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান এই উপমহাদেশে তৃতীয় এবং পুরো পৃথিবীতে ২০তম।’
সারাবাংলা/এএইচএইচ/পিটিএম
আওয়ামী লীগ করোনা ড. হাছান মাহমুদ মহামারি মানুষের পাশে সংসদ অধিবেশন