Tuesday 26 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পশ্চিমবঙ্গে ভোট, এবারও তিস্তা হচ্ছে না!

এমএকে জিলানী, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৩১ জানুয়ারি ২০২১ ২১:৩৩

ঢাকা: ২০১১ সালে তিস্তা চুক্তির সবকিছু ঠিক করা হলেও ভারতের অনাগ্রহের কারণে তা সই হয়নি। ঢাকা চাচ্ছে, আগামী মার্চে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরে এই চুক্তি সই হোক। তবে কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানাচ্ছে, যেহেতু আগামী এপ্রিলে পশ্চিমবঙ্গে ভোট অনুষ্ঠিত হবে সেহেতু মোদির ঢাকা সফরে চুক্তিটি সইয়ের আপাতত কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।

গত ২৯ জানুয়ারি নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ-ভারত দ্বিতীয় ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আগামী ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র পৌঁছে দেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। সব ঠিক থাকলে আগামী ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং পরদিন ২৭ মার্চ দুই দেশের শীর্ষ নেতার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হওয়ার কথা।

বিজ্ঞাপন

শীর্ষ বৈঠকে দুই দেশের কোন কোন বিষয়ে নতুন করে সমাঝোতা বা সহযোগিতা বিনিময় বা উভয়ের স্বার্থে চুক্তি সই হবে তা ঠিক করতে আগে দুই দেশের স্বরাষ্ট্র, পানি, নৌ-পরিবহন, বাণিজ্য সচিবের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া কাস্টমসসহ দুই দেশের মধ্যে গঠন করা আরও কয়েকটি যৌথ ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকও অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, এফওসি বৈঠকেও ঢাকার পক্ষে তিস্তা চুক্তির বিষয়ে বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে বলে পররাষ্ট্র সচিব জানিয়েছেন। পাশাপাশি বৈঠক শেষে ঢাকার পক্ষে প্রচার করা বিবৃতিতেও তিস্তা চুক্তির বিষয়ে আশা প্রকাশ করা হয়। কিন্তু একই বৈঠক শেষে ভারতের পক্ষ থেকে প্রচার করা বিবৃতিতে তিস্তার বিষয়ে কিছুই উল্লেখ করা হয়নি। ভারত যে ছয়টি নদী নিয়ে কাজ করার কথা বলছে, সেই নদীগুলোর মধ্যে তিস্তা নেই। এছাড়া আগামী এপ্রিলে পশ্চিমবঙ্গের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। তাই মার্চে তিস্তা চুক্তির বাস্তবায়নের কোনো আলো দেখা যাচ্ছে না।

বিজ্ঞাপন

পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন সোমবার (৩১ জানুয়ারি) বলেন, ‘ভারতের কাছে পানির বিষয়ে আমাদের আগ্রহ পুনর্ব্যক্ত করেছি। বিশেষ করে তিস্তা চুক্তির বিষয়টি এক পর্যায়ে গিয়ে যে এগুচ্ছে না সে বিষয়ে আমরা আমাদের আকাঙ্ক্ষা বা ইচ্ছা ব্যক্ত করেছি। এবং চুক্তির বিষয়টি দ্রুত করার জন্য আমরা ভারতকে বলেছি।‘

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘ভারত বলেছে যে, বিষয়টি দ্রুত সুরাহা করতে তারা বিভিন্ন পর্যায়ের স্টেক-হোল্ডারদের সঙ্গে আলাপ করবেন। তিস্তা ইস্যুতে এর আগেও ভারত এমন আশা দিয়েছে। তবে আমরা বলেছি যে, এই চুক্তি যখন হবে তখন আমাদের আরও যে ছয়টি নদী নিয়ে কাঠামোগত চুক্তি অপেক্ষায় আছে সেগুলো যেন একইসঙ্গে এগিয়ে নিতে পারি। এ জন্য সেদিকেও খেয়াল রাখতে বলেছি তাদের।’

সচিব বলেন, ‘কুশিয়ারা নদীর পানি আমরা সেচ কাজে ব্যবহার করব, এ বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই বাকি আছে। সেজন্য রহিমপুর খাল খননের একটা বিষয় আছে। এ বিষয়ে আমরা ভারতের সক্রিয় সহযোগিতা (গুডউইল অ্যান্ড অ্যাকশন) কামনা করেছি।’

পশ্চিমবঙ্গের ভোট তিস্তা চুক্তিতে কোনো প্রভাব ফেলবে কিনা?- এমন প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের ভোট আছে আগামী এপ্রিলে। এছাড়া আরও কয়েকটি রাজ্যের ভোটও আছে। আমরা জানি যে, ভোটের সময় যেকোনো বিষয়ে কাজ করা খুব জটিল। আমাদের অনুষ্ঠান যেহেতু মার্চে আর তাদের ভোট এপ্রিলে, সেদিক দিয়ে তিস্তা চুক্তির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ থেকে যায়।’

সারাবাংলা/জেআইএল/পিটিএম

ঢাকা সফর তিস্তা চুক্তি নরেন্দ্র মোদি পশ্চিমবঙ্গে ভোট

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর