কাজলায় কিশোরীর মৃত্যু, পরিবারের অভিযোগ— গণধর্ষণের শিকার
১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০১:১৯
ঢাকা: রাজধানীর যাত্রাবাড়ী কাজলা এলাকায় আজমেরী আক্তার মিম নামে ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরী মারা গেছে। মেয়েটির পরিবারের অভিযোগ, একদিন আগেই গণধর্ষণের শিকার হয়েছিল সে। এরপর আপাতদৃষ্টিতে মেয়েটি সুস্থ থাকলেও একদিন পর হঠাৎ করেই তার মৃত্যু হয়েছে।
রোববার (৩১ জানুয়ারী) রাত ৯টার দিকে মিমকে অচেতন অবস্থায় তার মা-বাবা ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মিম তার মা-বাবার সঙ্গে যাত্রাবাড়ী কাজলা এলাকায় থাকত। মিমের বাবা ওয়ার্কশপ ব্যবসায়ী। মা গৃহিণী। মিমের ছোট একটি বোন আছে।
হাসপাতালে মিমের মা পুতুল সাংবাদিকদের জানান, গত শুক্রবার (২৯ জানুয়ারি) রাতে মিম ও তার ছোট বোন মিথীলা বাসার ময়লা ডাস্টবিনে ফেলে আসতে যায়। এরপর দুই বোন আর রাতে বাসায় ফেরেনি। সেদিন রাতে অনেক খোজাখুঁজি করেও তাদের না পেয়ে থানায় বিষয়টি জানানো হয়। তবে পরদিন শনিবার (৩০ জানুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে ধনিয়া বাজার এলাকায় তাদের দেখা যায়। পরে তাদের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। এসময় মিম জানায়, ওই এলাকা থেকে পাঁচ জন ছেলে তাদের জুরাইন ভাঙ্গাবাড়ি এলাকার একটি বাড়িতে আটকে রেখেছিল। সেখানে দু’জন মিলে মিমকে ধর্ষণ করেছে।
মেয়ে ধর্ষণের শিকার হওয়ার কথা বললেও চক্ষুলজ্জার ভয়ে কাউকে কিছুই বলেনি তার পরিবার। মিমের মা পুতুল বলেন, গতকাল (শনিবার) ও আজ (রোববার) সারাদিন সুস্থই ছিল মিম। সন্ধ্যার দিকে সে হঠাৎ অচেতন হয়ে পড়ে যায়। পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
পুতুল আরও বলেন, আজ (রোববার) দুপুরে মিম একই এলাকায় রকি নামে এক ছেলের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিল। রকির সঙ্গে মিমের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। রকির সঙ্গে দেখা করে মিম ধর্ষণের শিকার হওয়ার কথা জানালে রকি তাকে আর যোগাযোগ না করতে বলে। এরপর বাসায় চলে আসে মিম। সন্ধ্যায় মিম দুইটি চিঠি লিখে ওর বোনের কাছে দিয়েছে। একটি চিঠি ওর বাবাকে, আরেকটি চিঠি রকিকে দিতে বলেছে। এর কিছুক্ষণ পরই বাসায় অচেতন হয়ে পড়ে মিম। তবে চিঠিতে মিম কী লিখেছে, তা এখনো জানতে পারেননি বলে জানান তার মা।
মিমের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ বক্সের সহকারী পরিদর্শক (এএসআই) আব্দুল খান। ময়নাতদন্তের জন্য তার মরদেহটি ঢামেক মর্গে রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।
জানতে চাইলে কদমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জামাল উদ্দিন মীর বলেন, ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া এক কিশোরীর মৃত্যুর তথ্য জেনেছি। বিস্তারিত জানার জন্য হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
ওসি আরও বলেন, শুনেছি কিশোরীটি ধর্ষণের শিকার হয়ছিল। ঘটনাটি আসলে কী ঘটেছিল, তদন্তের পরই তা জানা যাবে।
সারাবাংলা/এসএসআর/টিআর