Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মার্চে রায় হতে পারে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার হত্যার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১২:৪৪

ঢাকা: ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনাটি বেশ আলোচিত ছিল। প্রায় দেড় বছর পর রায় হতে চলেছে আলোচিত মামলাটির। চলতি বছরের মার্চ মাসের দিকে রায় ঘোষণা হতে পারে বলে আশা করছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা।

বর্তমানে মামলাটি ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান এর আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে। সর্বশেষ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পরিদর্শক ওয়াহেদুজ্জামান রোববার (৩১ জানুয়ারি) জবানবন্দি দেন। আজ সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) পরবর্তী জেরার জন্য দিন ধার্য রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবু আব্দুল্লাহ ভূঞা জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মামলাটির সুষ্ঠু বিচার হবে বলে প্রথম দিনই ঘোষণা দিয়েছিলেন। সেই আঙ্গিকে রাষ্ট্রপক্ষ মামলাটি পরিচালনা করে যাচ্ছে, যেন কেউ ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত না হয়। মামলাটি বর্তমানে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে। এই সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হলেই ১৮৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধির আইনের ৩৪২ ধারায় আসামির আত্মপক্ষ সমর্থন হবে। এরপর আসামিরা চাইলে সাফাইসাক্ষী দিতে পারেন। সাফাইসাক্ষী শেষ হওয়া মাত্রই যুক্তিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে। রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আদালত রায় ঘোষণার জন্য তারিখ নির্ধারণ করবেন।

তিনি বলেন, মামলার কার্যক্রম যেভাবে চলছে আশা করছি আগামী মার্চ মাসে রায় ঘোষণা করতে পারবেন ট্রাইব্যুনাল। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হবে তাদের সর্বোচ্চ সাজা হবে আশা করছি। আর যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হবে না, তারা অবশ্যই ন্যায়বিচার পাবেন।

বিজ্ঞাপন

এদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহমেদ বলেন, এটাকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলা যায় না। আসামিদের উদ্দেশ্য ছিল না আবরারকে হত্যা করার। এটা একটা এক্সিডেন্ট বলা চলে। রায় ঘোষণা হলে আশা করছি আসামিরা খালাস পাবেন।

নিহত আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বলেন, আমার ছেলেকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে, আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড আশা করছি। ভবিষ্যতে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আর কোনো বাবা-মায়ের বুক যেন খালি না হয় কর্তৃপক্ষের কাছে সেই আকুল আবেদন জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, ছেলের মৃত্যুর পরে তার মায়ের অবস্থা ভালো না। আমিও আদালতের রায়ের জন্য গত ৫ মাস ধরে ঢাকায় আছি। আশা করি সকল আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা দিবেন আদালত।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর ভোরে বুয়েটের শেরেবাংলা হলের সিঁড়ি থেকে আবরার ফাহাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরবর্তী সময়ে জানা যায়, শিবির সন্দেহে তাকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ প্রেক্ষিতে আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ চকবাজার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় ১৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়।

২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ২৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রটি আদালতে জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পরিদর্শক ওয়াহেদুজ্জামান। অভিযুক্ত ২৫ জনের মধ্যে এজাহারনামীয় ১৯ জন এবং তদন্তে প্রাপ্ত এজাহার বহির্ভূত ৬ জন। এর মধ্যে এজাহারভূক্ত ১৯ জনের মধ্যে ১৬ জন ও এজাহার বহির্ভূত ৬ জনের মধ্যে ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ৮ জন বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন, মেহেদী হাসান রাসেল, মো. অনিক সরকার, ইফতি মোশাররফ সকাল, মো. মেহেদী হাসান রবিন, মো. মেফতাহুল ইসলাম জিওন, মুনতাসির আলম জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির, মো. মুজাহিদুর রহমান, মুহতাসিম ফুয়াদ, মো. মনিরুজ্জামান মনির, মো. আকাশ হোসেন, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মাজেদুর রহমান, শামীম বিল্লাহ, মোয়াজ আবু হুরায়রা, এ এস এম নাজমুস সাদাত, ইসতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, অমিত সাহা, মো. মিজানুর রহমান ওরফে মিজান, শামসুল আরেফিন রাফাত, মোর্শেদ অমত্য ইসলাম ও এস এম মাহমুদ সেতু।

চার্জশিটভুক্ত পলাতক তিন আসামিরা হলেন, মোর্শেদুজ্জামান জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম ও মোস্তবা রাফিদ ।

২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর একই আদালত আসামিদের অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে চার্জ গঠনের আদেশ দেন। গত ১৩ জানুয়ারি আবরার হত্যা মামলার নথিটি বিচারের জন্য প্রস্তুত হওয়ায় মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালত। এরপর মহানগর দায়রা জজ আদালত দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ পাঠানোর আদেশ দেন।

সারাবাংলা/এআই/এসএসএ

আবরার হত্যা বুয়েট শিক্ষার্থী মামলা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর