টেকনাফে খুন করে ডেমরায় আত্মগোপন, বিদেশে পালাতে চেয়েছিলেন কালাম
১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৯:২১
ঢাকা: জমি নিয়ে বিরোধের জেরে কক্সবাজারের টেকনাফে মা ও মেয়েকে হত্যার ঘটনায় মূল হোতা আবুল কালাম (৩৬) আত্মগোপন করেছিলেন রাজধানীর ডেমরা এলাকায়। সেখান থেকে তিনি বিদেশে পালাতে চেয়েছিলেন। তবে সে সুযোগ আর পাননি কালাম। এর আগেই তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
রোববার (৩১ জানুয়ারি) ডেমরা এলাকা থেকে আবুল কালামকে গ্রেফতার করা হয়। সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগ সিআইডি প্রধান কার্যালয় সংবাদ সম্মেলনে ডিআইজি (চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগ) হাবিবুর রহমান এসব তথ্য জানান।
ডিআইজি হাবিবুর রহমান বলেন, ঘটনার পর থেকেই সিআইডি প্রধান কার্যালয়ের তত্ত্বাবধানে এ বিষয়ে ছায়া তদন্ত শুরু হয়। তদন্তে জানা যায়, কক্সবাজার জেলার ঈদগাহ থানার ৩ নম্বর ইসলামাবাদ ইউনিয়নের চরপাড়াস্থ রাবার ড্যাম এলাকায় নিজেদের বাড়ির পাশের রাস্তা নিয়ে বিরোধ চলছিল চাচি রাশেদা বেগমের সঙ্গে ভাতিজা আবুল কালামের। ঘটনার দিন (১৯ জানুয়ারি) চাচি রাশেদা বেগম চলাচলের জায়গায় বেড়া দিয়ে রাস্তা আটকে দেন। সন্ধ্যার পর এ নিয়ে চাচি-ভাতিজার বাগবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে আবুল কালাম ধারালো দা দিয়ে চাচি রাশেদা বেগম ও চাচাতো বোন জান্নাতুল ফেরদৌসের ওপর হামলা চালায়। পরে তাদের হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। এরপর থেকেই আবুল কালাম ও তার পরিবারের অন্য সদস্যরা পলাতক ছিলেন।
ডিআইজি বলেন, ঘটনার তিন দিন পর ২২ জানুয়ারি কক্সবাজার জেলার ঈদগাঁহ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। আসামি করা হয় চার জনকে। আবুল কালামকে প্রধান আসামি করে তার ভাই আবু তাহের, স্ত্রী হামিদা বেগম ও বোন মনোয়ারা বেগমকে আসামি করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সিআইডি জানায়, অভিযান পরিচালনার সময় বারবার স্থান পরিবর্তন করছিল আবুল কালাম। কক্সবাজার টেকনাফ উখিয়া পেরিয়ে রাজধানীর আসলে ডেমরায় আত্মগোপনে যায় কালাম। পরে সেখান থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
ডিআইজি হাবিবুর রহমান বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আবুল কালাম হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি নিজেই কুপিয়েছেন চাচি রাশেদা বেগম ও চাচাতো বোন জান্নাতুল ফেরদৌসকে। মামলায় এজাহারভুক্ত অন্যান্য আসামিরা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে কিভাবে জড়িত ছিল, সে বিষয়ে তদন্ত চলছে।
তিনি বলেন, আবুল কালাম ২০১৩ সালে সাগর পথে অবৈধভাবে মলয়েশিয়া যান। এরপর সাত মাস আগে তিনি দেশে ফিরে আসেন। ঘটনার পর তিনি আবারও বিদেশ পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, এ ঘটনায় মূল আসামি আবুল কালাম নিজের দায় স্বীকার করেছেন। মামলায় এজাহারভুক্ত অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। এ ঘটনার পেছনে অন্য কোনও ঘটনা আছে কি না— তাদের গ্রেফতার করলে পরবর্তী সময়ে সে বিষয়টিও জানা যাবে।
সারাবাংলা/এসএইচ/টিআর
গ্রেফতার চাচি ও চাচাতো বোনকে খুন ডেমরায় আত্মগোপন বিদেশে পালানোর পরিকল্পনা সিআইডি