ভালোর জন্যই ভ্যাকসিন প্রয়োগে ধীর গতি: মেরকেল
২ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৬:৫৭
ইউরোপে করোনা ভ্যাকসিন প্রয়োগের ক্ষেত্রে বিলম্ব এবং জটিলতার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল বলেছেন, এমন ধীর গতির পেছনে যথেষ্ট কারণ রয়েছে। খবর ডয়চে ভেলে।
সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) জার্মান সরকার ও ভ্যাকসিন সংশ্লিষ্ট বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ভ্যাকসিন সামিট এ যোগ দিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
ইসরায়েল, যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশগুলো করোনা ভ্যাকসিন প্রয়োগের ক্ষেত্রে যথেষ্ট অগ্রগতি দেখালেও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বাকি দেশগুলোর মানুষকে অনেক অপেক্ষা করতে হচ্ছে। ফলে, জনমনে বিভ্রান্তি ও ক্ষোভ বাড়ছে। এই ইস্যুতে মেরকেল ইইউ’র পক্ষ নিয়ে ভ্যাকসিন প্রয়োগে ধীরগতির কারণ তুলে ধরেন।
মেরকেল বলেন, অন্যদেশগুলো যেভাবে তড়িঘড়ি করে জরুরি ভিত্তিতে একাধিক ভ্যাকসিন প্রয়োগের ছাড়পত্র দিয়েছে, ইইউ সেই পথে যায়নি। সাধারণ মানুষের মনে যথেষ্ট আস্থা সঞ্চার করতে প্রত্যেকটি ভ্যাকসিনের আবেদন ভালো করে খতিয়ে দেখে তবেই প্রয়োগের ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।
তাছাড়া, কোম্পানিগুলির সঙ্গে দীর্ঘ দরকষাকষির পর এমন চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে যার মাধ্যমে দায়বদ্ধতা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। সেইসঙ্গে তথ্য সংরক্ষণের ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া হয়নি।
প্রসঙ্গত, ইসরায়েল টিকাদান কর্মসূচি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সরবরাহের প্রস্তাব দিয়ে ফাইজার-বায়োএনটেক কোম্পানির কাছ থেকে ভ্যাকসিন আদায় করেছে।
সোমবারের ভ্যাকসিন সামিট’র প্রেক্ষাপটে একাধিক কোম্পানি প্রাথমিক বিলম্ব কাটিয়ে ভবিষ্যতে আরও বেশি ভ্যাকসিন সরবরাহের অঙ্গীকার করেছে। এর মধ্যে, বায়োএনটেক কোম্পানি বাড়তি সাড়ে সাত কোটি ডোজ ভ্যাকসিন জোগান দেবে বলে জানিয়েছে। চলতি বছরে ২০০ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
অ্যাস্ট্রাজেনেকাও বছরের প্রথম তিন মাসের মধ্যে চার কোটি ডোজ ভ্যাকসিন ইইউকে সরবরাহ করবে। তাছাড়া, জনসন অ্যান্ড জনসন ফেব্রুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে এবং জার্মানির কিয়োরভ্যাক মে মাসে ইইউ’র কাছে ছাড়পত্রের আবেদন করবে। মেরকেল মনে করছেন, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের মধ্যে জার্মানির সব ইচ্ছুক মানুষ করোনা ভ্যাকসিন পেয়ে যাবেন।
প্রবল সমালোচনা সত্ত্বেও, জাতীয় স্তরে করোনা ভ্যাকসিন সংগ্রহের বদলে ইইউ কমিশনের মাধ্যমে কোম্পানিগুলির সঙ্গে বোঝাপড়ার সার্থকতাও তুলে ধরেন মেরকেল। তার মতে, এ ক্ষেত্রে ‘একলা চলো’ নীতি গ্রহণ করলে ভ্যাকসিনের ন্যায্য দাম পাওয়া যেত না এবং ইউরোপের কিছু অঞ্চল বঞ্চিত হতো। তাছাড়া ইউরোপের রাজনৈতিক ঐক্যও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারতো।
বাহ্যিক জটিলতার পাশাপাশি জার্মানির ফেডারেল কাঠামোর কারণে ভ্যাকসিন প্রয়োগের ক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনার অভাব নিয়েও অভিযোগ উঠেছে। কয়েকটি অঙ্গরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ক্ষেত্রে জাতীয় নীতির পক্ষ নিয়েছেন। সোমবারের আলোচনায় সে বিষয়ে ঐকমত তৈরি হয়েছে। ১০ ফেব্রুয়ারি মেরকেল এবং মুখ্যমন্ত্রীরা চলমান লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
সারাবাংলা/একেএম
অ্যাঙ্গেলা মেরকেল জার্মানি ফাইজার-বায়োএনটেকের করোনা ভ্যাকসিন ভ্যাকসিন সামিট