গায়ে র্যাবের জ্যাকেট, হাতে ওয়াকিটকি। যে কেউ দেখলেই ভাববেন তিনি কোনো র্যাব কর্মকর্তা। আর এ সুযোগেই গ্রামের সহজ-সরল ব্যক্তিদেরকে বিদেশ পাঠানো বা চাকরিতে নিয়োগ পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিতেন মো. আজিম উদ্দিন (৫১)।
চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির আজালী বাজারস্থ ধর্মপুর সাকিনস্থ মুন্দার বাড়ির মৃত গোলাম রহমানের ছেলে আজিম উদ্দিন। মঙ্গলবার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে র্যাব-১ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সহকারী পুলিশ সুপার মুশফিকুর রহমান তুষার এ তথ্য জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে মুশফিকুর রহমান জানান, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণার ঘটনা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতারকচক্রের সদস্যরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বেকার যুবকদের চাকরি দেওয়ার নামে অভিনব কায়দায় তাদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে জনজীবন অতিষ্ঠ করে তুলছে। এ সকল প্রতারকরা ফাঁদ হিসেবে নিজেদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য হিসেবে পরিচয় দিয়ে আসছেন। র্যাব-১’র একটি দল দীর্ঘদিন যাবৎ এ চক্রকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনা করেছে।
এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে র্যাব-১’র একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে, রাজধানীর বিমানবন্দর থানাধীন উত্তরা ১ নম্বর সেক্টর এলাকায় সাধারণ মানুষকে বিভিন্ন পদে চাকরি দেওয়ার নামে কতিপয় ব্যক্তি অবস্থান করছে। পরে র্যাবের দল রাজধানীর বিমানবন্দর থানার উত্তরার ফুড ডিলেজ এন্ড বিরিয়ানি হাউজ নামক রেস্টুরেন্টের সামনে থেকে প্রতারক আজিম উদ্দিনকে গ্রেফতার করে।
এ সময় আজিমের কাছ থেকে ১টি ওয়াকিটকি সেট, ১টি ভুয়া র্যাবের জ্যাকেট, ১ জোড়া হাতকড়া, ৩টি বাংলাদেশি পাসপোর্ট, ২টি মোবাইল ফোন, ১টি ব্যাগ, ১টি চাবি, ৪টি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে সিল এবং প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত কাগজপত্রসহ ২টি ফাইল উদ্ধার করা হয়।
র্যাব কর্মকর্তা আরও জানান, গ্রেফতারকৃত আসামি জিজ্ঞাসাবাদে জানান- তিনি একটি সংঘবদ্ধ প্রতারকচক্রের সক্রিয় সদস্য। তিনি সহযোগীদের সঙ্গে একে অপরের যোগসাজশে দীর্ঘদিন যাবৎ রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার সাধারণ মানুষকে চাকরি দেওয়ার নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এছাড়াও আসামি নিজেকে র্যাব ও পুলিশের কর্মকর্তা পরিচয়ে গ্রামের বিদেশ গমনেচ্ছু সহজ-সরল লোকজনের পাসপোর্ট আটক রেখে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেন এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে লোক নিয়োগসহ প্রতারণার সিন্ডিকেট করে আসছিলেন।
গ্রেফতারকৃত আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান র্যাব-১’র কর্মকর্তা মুশফিকুর রহমান তুষার।