শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা, সাবেক এমপিসহ ৫০ জনের কারাদণ্ড
৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৬:৫১
সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলায় ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার মামলায় সব আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে সাতক্ষীরার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. হুমায়ুন কবীর এ মামলায় রায় ঘোষণা করেন।
আদালত সাবেক সাংসদ হাবিবুল ইসলাম হাবিব, বিএনপি নেতা আরিফুর রহমান ও রিপনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড, সাবেক যুবদল নেতা আব্দুল কাদের বাচ্চুসহ তিনজনের ৯ বছর ও বাকি আসামিদের সর্বনিম্ন ৪ থেকে বিভিন্ন মেয়াাদে সাজা প্রদান করেছে আদালত।
এর আগে সকালে এ মামলায় জেলহাজতে থাকা সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবসহ ৩৪ জন আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। আসামিদের উপস্থিতিতে আদালত রায় ঘোষণা করেন।
৫০ জন আসামির মধ্যে বাকি ১৬ জন পলাতক রয়েছেন।
রাষ্ট্রপক্ষে এ মামলা পরিচালনা করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এসএম মুনীর, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জী, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শাহীন মৃধা ও সাতক্ষীরার পিপি আব্দুল লতিফ।
অপরদিকে আসামীপক্ষে ছিলেন আইনজীবী শাহানারা আক্তার বকুল, আব্দুল মজিদ, মিজানুর রহমান পিন্টু ও তোজাম্মেল হোসেন প্রমুখ।
কারাগারে থাকা দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন সাবেক সাংসদ হাবিবুল ইসলাম হাবিব, আশরাফ হোসেন, সাবেক পৌর মেয়র আক্তারুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম, আব্দুর রাজ্জাক, শেখ তামিম আজাদ মেরিন, আব্দুর রকিব মোল্লা, আব্দুল মজিদ, হাসান আলী, ময়না, আব্দুস সাত্তার, তোফাজ্জেল হোসেন সেন্টু, জহুরুল ইসলাম, গোলাম রসুল, অ্যাড. আব্দুস সাত্তার, আব্দুস সামাদ, আলতাফ হোসেন, শাহাবুদ্দিন, সাহেব আলী, সিরাজুল ইসলাম, রকিব, ট্রলি শহীদুল, মনিরুল ইসলাম, শেখ কামরুল ইসলাম, ইয়াছিন আলী, শেলী, শাহিনুর রহমান, দিদার মোড়ল, সোহাগ হোসেন, মাহাফুজুর মোল্লা, আব্দুল গফফার গাজী, রিঙ্কু, অ্যাড. আব্দুস সামাদ, টাইগার খোকন ওরফে বেড়ে খোকন।
পলাতক আসামিরা হলেন, সাবেক যুবদল নেতা আব্দুল কাদের বাচ্চু, মফিজুল ইসলাম, আলাউদ্দিন, খালেদ মঞ্জুর রোমেল, আরিফুর রহমান, রিপন, ইয়াছিন আলী, রবিউল ইসলাম, মাজাহারুল ইসলাম, আব্দুল খালেক, আব্দুর রব, সঞ্জু , নাজমুল হোসেন, জাবিদ রায়হান লাকী, কণক, মাহাফুজুর রহমানসহ ১৬ জন।
২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা সাতক্ষীরায় ধর্ষণের শিকার এক গৃহবধূকে হাসপাতালে দেখে মাগুরা ফিরে যাওয়ার পথে কলারোয়ায় সন্ত্রাসীদের হামলা শিকার হন। এতে শেখ হাসিনা অক্ষত থাকলেও তার সফরসঙ্গী ফাতেমা জাহান সাথী, জোবায়দুল হক রাসেল, ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবর রহমান, শহিদুল হক জীবন, আবদুল মতিনসহ অনেকেই আহত হন। এ সময় বেশ কয়েকজন সাংবাদিকও হামলার শিকার হন।
এ ঘটনায় কলারোয়া মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. মোসলেমউদ্দিন একটি মামলা করেন। এ মামলা থানায় রেকর্ড না হওয়ায় তিনি নালিশী আদালত সাতক্ষীরায় মামলাটি করেন। পরবর্তীতে এ মামলা খারিজ হয়ে গেলে ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর ফের মামলাটি পুনরুজ্জীবিত হয়। এ সময় তদন্তকারী কর্মকর্তা সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেন।
গত ২৭ জানুয়ারি যুক্তিতর্ক শেষে কাঠগোড়ায় থাকা সাবেক এমপি হাবিবসহ ৩৪ জনকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
সাতক্ষীরা আদালতের পুলিশ পরিদর্শক অমল কুমার রায় বলেন, ‘২০০২ সালের ২ সেপ্টেম্বর কলারোয়া মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোসলেমউদ্দিন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছিলেন। মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক শফিকুর রহমান ৫০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। ২০১৭ সালে আসামিপক্ষ মামলার কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে হাইকোর্ট বিভাগে আবেদন করেন। এর তিন বছর পর আসামিপক্ষের আবেদন খারিজ করে ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তির জন্য নিম্ন আদালতকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট বিভাগ।’
সারাবাংলা/একে