ভারতের ১২ রাজ্যে রোহিঙ্গা
৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৭:১১
ভারতের ১২ রাজ্যে বেআইনিভাবে বসবাস করছেন রোহিঙ্গা শরণার্থীরা। এ তথ্য জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই। খবর ডয়চে ভেলে।
রাজ্যসভা সদস্য অনিল দেশাইয়ের প্রশ্ন ছিল, রোহিঙ্গাদের কবে ফেরত পাঠানো হবে? মন্ত্রী অবশ্য তার কোনো জবাব দেননি। লিখিত জবাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, জম্মু-কাশ্মির, তেলেঙ্গানা, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, দিল্লি, রাজস্থান, তামিলনাড়ু, আসাম, কর্ণাটক, কেরালা ও পশ্চিমবঙ্গে রোহিঙ্গারা বসবাস করছেন। তাদের কাছে কোনো বৈধ কাগজপত্র নেই।
তবে, মোট কতজন রোহিঙ্গা ওই সব রাজ্যে বসবাস করছেন, সে ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ে কোনো তথ্য নেই।
নিত্যানন্দ রাইয়ের জবাব থেকে বোঝা যাচ্ছে, রোহিঙ্গারা উত্তর, দক্ষিণ ও পূর্ব ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্যে বসবাস করছেন। এর মধ্যে বিজেপিশাসিত হরিয়ানা, কর্ণাটক, আসাম ও উত্তর প্রদেশ রয়েছে। জম্মু-কাশ্মিরে কেন্দ্রের অধীনে লেফটন্যান্ট গভর্নরের শাসন চলছে। এছাড়াও, বিরোধীশাসিত পশ্চিমবঙ্গ, কেরালা, তেলেঙ্গানা, পাঞ্জাব, তামিলনাড়ু, দিল্লিতেও রোহিঙ্গারা বাস করছেন।
ফলে এটা বলা যাবে না, বিজেপিশাসিত রাজ্যে রোহিঙ্গা নেই। সব চেয়ে বড় কথা, কতজন রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢুকেছেন, মোদি সরকারের কাছে তার কোনো তথ্য নেই। তার মানে কোন রাজ্যে কত রোহিঙ্গা আছে, তার কোনো হিসাবও সরকারের কাছে নেই।
রাজধানী দিল্লিতে রোহিঙ্গারা রয়েছেন মদনপুর-খাদাড় এলাকায়। কিছুদিন আগেও, হায়দরাবাদের পৌরসভা নির্বাচনের সময় দেখা যাচ্ছিল, রোহিঙ্গাদের বিষয়টি প্রচার করা হচ্ছে। তাছাড়া, পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনকে সামনে রেখে এখন প্রতিদিনই বিজেপি নেতারা রোহিঙ্গাদের নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। অর্থাৎ, রাজনীতির সঙ্গে রোহিঙ্গা ইস্যু জড়িয়ে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে প্রবীণ সাংবাদিক শুভাশিস মৈত্র ডয়চে ভেলেকে বলেন, এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক বিষয়। রোহিঙ্গাদের সমস্যা মানবিক। কিছু মানুষের খারাপ কাজের জন্য লাখ লাখ মানুষ পালাতে বাধ্য হয়েছেন। তাদের কোনো দেশ নেই। কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত, বিষয়টি নিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে কথা বলা। তাদের পরিচয়পত্র দেওয়া। তাদের ফেরত পাঠানোর পথ প্রশস্ত করা। শুভাশিস মনে করেন, রোহিঙ্গাদের নিয়ে রাজনীতি একেবারেই কাম্য নয়।
অসমিয়া প্রতিদিনের দিল্লি ব্যুরো চিফ আশিস গুপ্ত মনে করেন, রোহিঙ্গাদের শরণার্থীর মর্যাদা দেওয়া উচিত। ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা কম-বেশি অনেক রাজ্যেই আছে। কিন্তু তাদের শরণার্থী মর্যাদা দেওয়া হয়নি। বিশ্ব এখন বুঝে গেছে, রোহিঙ্গা মানবিক সমস্যা। অনেক দেশই তাদের সাহায্য করছে। বাংলাদেশ তো খুব ভালো কাজ করেছে। রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করছে। আর ভারতে তাদের নিয়ে রাজনীতি হচ্ছে।
সারাবাংলা/একেএম