প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে করোনা: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

ঢাকা: স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, পৃথিবীর অনেক দেশ যেখানে করোনার ভ্যাকসিন আনতে পারেনি, সেখানে আমরা প্রথমেই আনতে পেরেছি। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে করোনা। ভ্যাকসিন নিয়ে এসেছি, আপনারা করোনার ভ্যাকসিন নেবেন, তাহলে করোনা প্রতিরোধ করতে পারব।

বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মহাখালীর জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ক্যানসার দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

জাহিদ মালেক বলেন, ‘দেশে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন নিতে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেড় লাখ মানুষ নিবন্ধন করেছে। ভ্যাকসিন পেতে সবাইকে নিবন্ধন করতে হবে। যারা নিবন্ধন করতে পারবে না তাদের স্বাস্থ্যকর্মীরা সহযোগিতা করবে।’

তিনি বলেন, ‘সারাদেশের গ্রামে-গঞ্জে ভ্যাকসিন প্রয়োগের নিবন্ধনের জন্য মাইকিং, জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে উদ্বুদ্ধকরণ, গণমাধ্যমে বিজ্ঞাপনসহ জোরেশোরে প্রচার হচ্ছে। দেশের সব মানুষকে করোনার ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। এ জন্য সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। নিবন্ধন এখন দ্রুত বাড়ছে। দেশে ৭০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন আসছে পর্যায়ক্রমে। সব দেওয়া হবে।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ক্রয়কৃত তিন কোটি ভ্যাকসিন এ বছর দেয়া হবে। এ ছাড়া কোভ্যাক্স থেকে ছয় কোটি ভ্যাকসিন আসছে। আজ ভ্যাকসিন নিয়ে অনেকে আজেবাজে কথা বলে। যারা গুজব ছড়ায় তারা দেশের মানুষের ভালো চায় না। এটা আমরা করতেও দেবো না। আমরা সারাবছর ভ্যাকসিন নেব; করোনা নিয়ন্ত্রণে আসবে।’

যারা দেশের মঙ্গল চায় না তারা বিদেশে বসে ষড়যন্ত্র করছে অভিযোগ করে মন্ত্রী বলেন, ‘ষড়যন্ত্রকারীরা বিদেশে বসে আন্তর্জাতিক মিডিয়ার মাধ্যমে ষড়যন্ত্র করছে। আমরা সজাগ আছি, কোনো ষড়যন্ত্রে কাজ হবে না। দেশের মানুষ সচেতন, মানুষ উন্নয়ন চায়। এ ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ক্যানসার সারাবিশ্বের জন্য দূরারোগ্য ব্যাধি। সারাবিশ্বে প্রতি বছর এক কোটি মানুষ মারা যায়। বাংলাদেশেও তার চিত্র ভালো নয়। প্রতিবছর এক লাখ মানুষ মারা যায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাস্থ্যসেবায় পুরস্কৃত হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী ভ্যাকসিন হিরো। ছোঁয়াচে নয় এমন রোগকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘আট বিভাগে ক্যানসার হাসপাতাল হচ্ছে। যার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এসব হাসপাতাল নির্মাণে আড়াই হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে। হাসপাতাল তৈরি হলে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় আসতে হবে না। এখন সংক্রমক রোগ কমছে, কিন্তু অসংক্রামক রোগ বাড়ছে। প্রতিটি জেলা হাসপাতালে ১০টি আইসিউ বেড চালু হচ্ছে। স্বাস্থ্যখাতে বাজেট কম। জিডিপির এক শতাংশ স্বাস্থ্যসেবায় ব্যয় হচ্ছে। পঞ্চম পরিকল্পনা বার্ষিকীতে দুই শতাংশ বাড়ানো হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সময়মতো চিকিৎসা নিলে বা রোগ নির্ণয় করলে সেরে ওঠা যায়। আদিকাল থেকে ক্যানসার ছিল। আজ থেকে চার হাজার বছর আগেও ক্যানসারের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। খাবারে রং মেশালে, মেদ বাড়লে, বাতাস দূষিত করলে ও ধূমপান করলেও চিকিৎসা হয়। যথাসময়ে রোগ নির্ণয় হলে নিরাময় লাভ করা যায়।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আব্দুল মান্নান বলেন, ‘ক্যানসার পৃথিবীতে সবচেয়ে মারাত্মক ব্যাধি। প্রতি বছর এক কোটি ৯০ লাখ মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হয়। এক কোটিরও বেশি মানুষ মৃত্যুবরণ করে। ক্যানসার রোগী বাড়ছে, বিদেশ গিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। ওষুধ রফতানি করে যে আয় হয়, এর চেয়ে বেশি অর্থ ক্যানসার চিকিৎসায় বিদেশে চলে যাচ্ছে।’

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার খুরশীদ আলম বলেন, ‘ক্যানসার নির্ণয়ে স্ক্রিনিং মেশিন বাড়ানো দরকার। ক্যানসার সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে হবে। খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে। সচেতনতা বাড়াতে গণমাধ্যমকে জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে।’

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের রেডিওথেরাপি বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক ডা. কাজী মুশতাক হোসেন। এতে বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. শাহ আলম, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. এম ইকবাল আর্সলান, মহাসচিব ডা. এমএ আজিজ ও আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা প্রমুখ।

সারাবাংলা/এসবি/পিটিএম

করোনা নিয়ন্ত্রণে জাহিদ মালেক টপ নিউজ প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী