Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ভিওআইপি’তে টেলিটকের ৩ হাজার ৪০০ সিম, বছরে ক্ষতি ১১ কোটি টাকা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২৩:৫৭

ঢাকা: রাষ্ট্রয়ত্ব প্রতিষ্ঠান টেলিটকের প্রায় ৩ হাজার ৪০০ সিম ব্যবহার করে ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রটোকল (ভিওআইপি) ব্যবসা চালিয়ে আসছিলেন একটি চক্র। চক্রটি অবৈধ টেলিযোগাযোগ স্থাপনার মাধ্যমে প্রতিদিন আনুমানিক প্রায় ৬ লাখ আন্তর্জাতিক কল মিনিট অবৈধভাবে বাংলাদেশে ট্রান্সমিট করছে। সংঘবদ্ধ চক্রটির অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার কারণে সরকার বর্তমান আন্তর্জাতিক কল টার্মিনেশন রেট অনুযায়ী দৈনিক প্রায় তিন লাখ টাকা এবং বছরে প্রায় ১০ কোটি ৯৫ লাখ টাকা সরকারের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৪টায় রাজধানীর কারওয়ার বাজারের র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-১০ এর অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি মাহফুজুর রহমান।

এর আগে, গতকাল বুধবার দুপুর ২টা থেকে বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টা পর্যন্ত র‍্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল রাজধানীর নিউমার্কেট, তুরাগ ও শাহ আলী থানা এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। রাজধানীর নিউ মার্কেট, তুরাগ ও শাহ আলী এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে প্রায় ৫ কোটি টাকার বিপুল পরিমাণ অবৈধ ভিওআইপি সরঞ্জামাদিসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- ভিওআইপি ব্যবসা চক্রের মূলহোতা মো. কাজী এম এম মাহামুদ ওরফে ছোটন (৩২), রাকিব হাসান (৩০) ও বাবর উদ্দিন(৩০)।

এসময় তাদের কাছ থেকে ভিওআইপি ব্যবসায় ব্যবহৃত ১৯টি সিম বক্স ডিভাইস, ৪১৬টি জিএসএম এন্টেনা, ৩ হাজার ৪০০ পিস টেলিটক সিম, ৭টি মিনি কম্পিউটার, ৩টি ওয়ারলেস রাউটার, ৫টি বাংলালায়ন মডেম ও রাউটার, ৩টি ল্যাপটপ, ১টি ল্যাপটপ কুলার, ১০টি বিভিন্ন চার্জার, ৬টি ইউ এস বি মডেম, ১২টি পাওয়ার ক্যাবল, ২৪ টি কনসেল ক্যাবল, ৩টি থ্রি-প্ল্যাগ, ৪টি মাল্টিপ্ল্যাগ, ১টি মাউস, ৪টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাব-১০ এর অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘গত ৩ ফেব্রুয়ারি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-১০ এর আভিযানিক দলটি জানতে পারে যে, রাজধানী ঢাকার নিউ মার্কেট থানাধীন কাটান এলিফ্যান্ট রোডের ২৭৮/৩ সরদার ভিলার ২য় তলার তালহা এন্টারপ্রাইজ অবৈধ ভিওআইপির যন্ত্রাংশ বিক্রয় করছে। ওই সংবাদের ভিত্তিতে বিটিআরসি’র কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় ৪টি সিম বক্স ডিভাইস ও ২টি মোবাইল ফোনসহ রাকিব হাসান (৩০) এবং বাবর উদ্দিনকে (৩০) গ্রেফতার করে র‌্যাব-১০ এর একটি দল। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর তুরাগ থানার রমজান মার্কেট ভাবনারটেক শামসুল আলমের বাড়িতে ভিওআইপি কন্ট্রোলরুমের সন্ধান মেলে। সেখান থেকে অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার চক্রের মূলহোতা কাজী এম এম মাহামুদ ছোটনকে (৩২) গ্রেফতার করা হয়।

বিজ্ঞাপন

র‌্যাব-১০ এর সিও বলেন, ‘বিটিআরসি কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্যমতে অবৈধ টেলিযোগাযোগ স্থাপনার মাধ্যমে চক্রটি প্রতিদিন আনুমানিক প্রায় ৬ লাখ আন্তর্জাতিক কল মিনিট অবৈধভাবে দেশে টার্মিনেট করছিল। এর ফলে সরকার দৈনিক প্রায় তিন লাখ টাকা এবং বছরে প্রায় ১১ কোটি টাকা সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে।’

একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ ১৫টি সিম নিবন্ধন করে ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু চক্রটি কিভাবে সরকারি প্রতিষ্ঠান টেলিটকের ৩ হাজার ৪০০ সিম ক্রয় ও ব্যবহার করে আসছিল জানতে চাইলে র‌্যাব-১০ প্রধান বলেন, ‘বিষয়টি র‌্যাব ও বিটিআরসির নজরে এসেছে। এটা নিয়ে গভীর তদন্ত করা হবে।’

এই চক্রের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত কিনা এবং ভিওআইপি কল কোনো অপরাধ কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করে আসছিল কিনা জানতে চাইলে অতিরিক্ত ডিআইজি মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘অবৈধভাবে যেহেতু তারা ভিওআইপি ব্যবসা ও সরকারকে কর ফাঁকি দিয়ে আসছিলেন। তাদের এই ভিওআইপিকলে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করা হচ্ছিল কিনা তাও খতিয়ে দেখা হবে।’

সারাবাংলা/এসএইচ/এমও

টেলিটক ভিওআইপি ভিওআইপি ব্যবসা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর