Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

২৬ মার্চের আগে ‘পাহাড়তলী বধ্যভূমি’ উদ্ধার না হলে লাগাতার আন্দোলন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৯:০০

চট্টগ্রাম ব্যুরো: একাত্তরের গণহত্যার স্মৃতি সংরক্ষণে চট্টগ্রামের পাহাড়তলি বধ্যভূমির পৌনে দুই একর জমি পুরোপুরি অধিগ্রহণের জন্য ২৬ মার্চ পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ‘পাহাড়তলি বধ্যভূমি রক্ষা পরিষদ’। অন্যথায় লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

শনিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বধ্যভূমি প্রাঙ্গনে আয়োজিত মানববন্ধন ও উন্মুক্ত সাংবাদিক সম্মেলন থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম নগরীর ফয়’স লেক এলাকায় এ বধ্যভূমির অবস্থান। সেখানে গড়ে তোলা একটি স্মৃতিস্থাপনা সংলগ্ন এলাকায় বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইউএসটিসি’র নির্মাণ করা ‘জিয়া ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ নামে একটি ভবন আছে। আন্দোলনকারীদের দাবি, বধ্যভূমির জায়গায় গড়ে তোলা হয়েছে এই ভবন। সেজন্য ভবনসহ বধ্যভূমির পুরো জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। গত ৩১ জানুয়ারি পাহাড়তলী বধ্যভূমি রক্ষা পরিষদ চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের কাছে এক দশমিক ৭৫ একর ভূমি অধিগ্রহণ করে সেখানে একটি জাদুঘর স্থাপনের দাবিতে স্মারকলিপি দিয়েছে।

মানববন্ধনে বধ্যভূমি সংরক্ষণে উচ্চ আদালতে রিট আবেদনকারী প্রফেসর ড. গাজী সালেহ উদ্দিন বলেন, ‘চট্টগ্রামে মোট ১১১টি বধ্যভূমি থাকলেও একটি বধ্যভূমিও রক্ষা করা এখন পর্যন্ত সম্ভব হয়নি। এই পাহাড়তলি বধ্যভূমি শুধু টিকে আছে আমাদের মামলার কারণে। ১৯৯৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রায়েরবাজার ও পাহাড়তলি বধ্যভূমি রক্ষার নির্দেশ দিলেও তা হয়নি। এই বধ্যভূমি রক্ষার জন্য লড়াই করায় আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। টাকার প্রস্তাব দেওয়া হয়, জমির প্রস্তাবও দেওয়া হয়। আমাদের দাবি, বধ্যভূমির পুরো জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। ২৬ মার্চের আগেই অধিগ্রহণ করতে হবে। এখানে হাজার হাজার বাঙালিকে হত্যা করা হয়েছে। তা না হলে আমরা কঠোর আন্দোলনে যাব।’

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ডিন প্রফেসর এ বি এম আবু নোমান বলেন, ‘সর্বোচ্চ আদালতের রায় এবং আপিলে এক দশমিক ৭৫ একর জমি রক্ষার কথা বলা আছে। মাঝখানে সরকারি এক আদেশে জমি অধিগ্রহণ বন্ধ ছিল। আবার সরকারি আদেশেই জমি অধিগ্রহণ শুরু হয়েছে। আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যারা বিশ্বাস করি তারা আজ দাঁড়িয়েছি। ভবিষ্যত প্রজন্ম দেখবে কিভাবে এখানে আমাদের শহীদরা রক্ত দিয়েছেন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধে মানবতার বিরুদ্ধে যে অপরাধ হয়েছে এটি তারই স্মারক। অথচ ধীরে ধীরে এখানে অবকাঠামো নির্মাণ হয়ে গেছে। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে প্রধানমন্ত্রী ও জেলা প্রশাসনের কাছে অনুরোধ আমাদের দায়মুক্ত করুন।’

মানববন্ধনে চারদফা দাবি তুলে ধরেন গণজাগরণ মঞ্চ, চট্টগ্রামের সমন্বয়ক শরীফ চৌহান। এগুলো হলো- স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ, সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুসারে ২৬ মার্চের মধ্যে জমি অধিগ্রহণ, অনতিবিলম্বে বধ্যভূমির জন্য প্রাক্কলিত অর্থ ছাড় করা এবং লাইট এন্ড সাউন্ড শোর মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধরা।

নাট্যজন প্রদীপ দেওয়ানজী বলেন, ‘২৬ মার্চের মধ্যে দাবি মেনে নেওয়া না হলে লাগাতার আন্দোলন করে তা আদায় করব।’

প্রমা আবৃত্তি সংগঠনের সভাপতি রাশেদ হাসানের সঞ্চালনায় মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ডিন অধ্যাপক হোসাইন কবির, সাংস্কৃতিক সংগঠক সুনীল ধর, শহীদ পরিবারের সদস্য মো শাহাবুদ্দিন আঙ্গুর, রাউফুল হোসেন সুজা ও আনোয়ার হায়দার, ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটির চট্টগ্রাম জেলার কার্যকরী সাধারণ সম্পাদক অনিক চৌধুরী, বিজয় একাত্তর সভাপতি আর কে রুবেল।

উপস্থিত ছিলেন নাট্যকার আহমদ কবীর, নাট্যজন মোস্তফা কামাল যাত্রা, অধ্যক্ষ সুকুমার দত্ত, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কাজল বরণ চৌধুরী, প্রতিকৃত সাংস্কৃতিক সংসদ চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক ডা. আলাউদ্দিন ভুঁইয়া, জোবায়দুর রশিদ, মাসরুর জামান মুকুট, সাজ্জাদ হোসেন, লোক থিয়েটারের খোকন মিয়া প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনের আগে প্রদীপ দেওয়ানজী রচিত গীতি নকশা ‘বধ্যভূমি’ পরিবেশন করে নাট্যাধার। সংহতি জানিয়ে কর্মসূচিতে অংশ নেয় শোভন থিয়েটারসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন।

সারাবাংলা/আরডি/এমআই

পাহাড়তলী বধ্যভূমি

বিজ্ঞাপন

নতুন ইসির শপথ রোববার দুপুরে
২২ নভেম্বর ২০২৪ ১৪:২৩

আরো

সম্পর্কিত খবর