জমি নিয়ে বিরোধে আগাছানাশক দিয়ে সরিষা ক্ষেত ধ্বংস
৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৯:৩৬
পঞ্চগড়: তেঁতুলিয়া উপজেলার আতমাগছ এলাকায় তিন কৃষকের প্রায় এক একর জমির সরিষা ক্ষেত আগাছানাশক দিয়ে ধ্বংস করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের লোকজন ফলন্ত সরিষা গাছগুলো ধ্বংস করেছে ।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা হলেন, দেবনগর ইউনিয়নের আতমাগছ এলাকার মৃত মজির উদ্দিনের ছেলে সকিন আলী, বাচ্চামদ্দীনের ছেলে আমিনার রহমান ও আফিজ উদ্দিনের ছেলে নুর ইসলাম।
কৃষকরা অভিযোগ করে জানান, তারা পৈতৃকসূত্রে ৩ একর ৮৯ শতক জমি প্রায় ৫০ বছর ধরে চাষাবাদ করে আসছিলেন। ওই জমির মধ্যে ১ একর ১৫ শতক জমিতে এবার তারা সরিষা চাষ করেছেন। সরষে গাছগুলো বেশ মোটাতাজা হয়ে উঠেছে। ফুল ফুটে এখন ফল ধরা শুরু করেছে। ঠিক এই সময়ে গত ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে তাদের সরিষা ক্ষেতে আগাছানাশক ছিটিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। পুরো ক্ষেতের সরিষা আগাছানাশকে ঝলসে গেছে। এতে তাদের প্রায় দেড় লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।
তাদের দাবি, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে একই এলাকার মৃত বশির উদ্দিনের ছেলে রহুল আমিন, এরশাদ আলী, আব্দুল জব্বার, আব্দুস সাত্তার ও চাঁন মিয়া রাতের আঁধারে আগাছানাশক ছিটিয়ে সরিষা ক্ষেত ধ্বংস করেছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আমিনার রহমান বলেন, আমরা ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে জমিগুলো চাষাবাদ করে আসছি। এসব জমি আমরা পৈতৃক সূত্রে পেয়েছি। এসএ রেকর্ডেও আমাদের নামে রয়েছে। কিন্তু কয়েক বছর আগে রহুল আমিন ও তার ভাইয়েরা জমিটি তাদের বলে দাবি করে আদালতে মামলা করে। মামলার রায়ের আগ মুহুর্তে তারা নিজেদের পরাজয় বুঝতে পেরে জরিমানা দিয়ে মামলা প্রত্যাহার করে নেয়। তারপরও বিভিন্নভাবে আমাদের হুমকি দিতে থাকে ও হয়রানি করতে থাকে। গত মাসের ২৩ তারিখে আমরা ইউনিয়ন পরিষদে বিচার দিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে রহুল আমিন তাদের স্বপক্ষে কোনো কাগজ দেখাতে পারেনি। আইনগতভাবে না পেরে আমাদের সরিষা ক্ষেত আগাছানাশক ছিটিয়ে ধ্বংস করে দিয়েছে। আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেছি। যারা এভাবে ফসল নষ্ট করেছে আমরা তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
প্রতিপক্ষ রহুল আমিন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তারা মিথ্যে অভিযোগ করছে। জমিটির মালিক আমরা।
দেবনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মহসিন উল হক বলেন, জমিটি পৈতৃক সূত্রে সকিন, আমিনার ও হাফিজ ভোগ করে আসছে। তারা ওই জমিতে সরিষাসহ বিভিন্ন ফসলও চাষ করেছে। গত মাসে অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুই পক্ষকে নিয়ে আমরা বসেছিলাম। কিন্তু রহুল আমিনরা তাদের পক্ষে জমির কোনো কাগজ উপস্থাপন করতে পারেনি।
তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহাগ চন্দ্র সাহা বলেন, তারা আমার কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করেছে। যেহেতু এটি অপরাধমূলক ঘটনা, তাই আমি তাদের আদালতের আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। তবে তাদের ফসলের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে আবেদন দিতে বলেছি। আবেদন পেলে আমরা তাদের কিছু সহযোগিতার চেষ্টা করবো।
সারাবাংলা/এসএসএ