করোনা ভ্যাকসিন: চট্টগ্রামে শুরু হচ্ছে ১৬ কেন্দ্রে, প্রথমে নওফেল
৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২০:০৩
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য নগরী এবং জেলায় ২৯টি টিকাদানকেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৬টিতে রোববার ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হবে। তবে প্রস্তুতি থাকলেও বহুল আলোচিত ভ্যাকসিন দেওয়া নিয়ে চট্টগ্রামে প্রচারণা তেমন দৃশ্যমান নয়।
নগরীতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টায় এবং চট্টগ্রাম সরকারি জেনারেল হাসপাতালে সকাল ১০টায় টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। এদিন চমেক হাসপাতালে উপমন্ত্রী নওফেল প্রথমে নিজেও টিকা নেবেন। এরপরই শুরু হবে আনুষ্ঠানিকভাবে টিকাদান কার্যক্রম।
চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। কাল (রোববার) সকাল ৯টা থেকে টিকাদান কার্যক্রম আমরা শুরু করব। প্রথমে মাননীয় উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল টিকা নেবেন। ধারাবহিকভাবে আমরা আরও ১০০ জনকে টিকা দেব। এদের মধ্যে করোনায় সম্মুখসারির যোদ্ধা হিসেবে যারা বিবেচিত হয়েছেন, তারাই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা পাবেন।’
জানা গেছে, চমেক হাসপাতালে উপমন্ত্রী নওফেলের পর চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ুন কবীর, চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির ও চসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী টিকা নেবেন।
চমেক হাসপাতালের চতুর্থ তলায় আইসিইউ ওয়ার্ডের পাশে চারটি বুথে টিকাদান হবে। এর মধ্যে দুটি পুরুষদের জন্য এবং দুটি নারীদের জন্য। সেখানে তৈরি করা হয়েছে অবজারভেশন কক্ষ। টিকা পরবর্তী জটিলতা পর্যবেক্ষণের জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নেতৃত্বে একটি টিমও থাকবে। এছাড়া টিকাদান কার্যক্রমে যুক্ত থাকবে ১০টিম।
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. আব্দুর রব সারাবাংলাকে বলেন, ‘জেনারেল হাসপাতালেও উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল মহোদয় টিকা কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন। প্রথমদিনে আমরা সম্মুখসারির ২০ জন যোদ্ধাকে টিকা দেব।’
জানা গেছে, নগরীতে চমেক হাসপাতাল ও জেনারেল হাসপাতালসহ মোট টিকাদান কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে ১৫টি। এর মধ্যে বাকি ১৩টি কেন্দ্রে ধারাবাহিকভাবে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হবে। বিভিন্ন উপজেলায় টিকাদান কেন্দ্র প্রস্তুত আছে আরও ১৪টি। সেখানেও রোববার থেকে কার্যক্রম শুরু হবে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী জানিয়েছেন, নগরীর ১৫ কেন্দ্রের জন্য ১৭০ জন নার্স, মিডওয়াইফসহ অন্যান্য কর্মীদের দুইদিনের প্রশিক্ষণ শেষ হয়েছে।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি মিয়া সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, রোববার ১৪ উপজেলার ১৪ কেন্দ্রেও সম্মুখসারির যোদ্ধাদের টিকা দেওয়া হবে। প্রতিটি কেন্দ্রে থাকবে দুই টিম। প্রতি টিমে দুইজন ভ্যাকসিনেটর এবং চারজন স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালন করবেন। টিকাদান পরবর্তী জটিলতা পর্যবেক্ষণের জন্য উপজেলায় একটি পর্যবেক্ষণ কক্ষ প্রস্তুত করা হয়েছে। টিকা নেওয়ার পর কারো জটিলতা দেখা দিলে তাদের চিকিৎসার জন্য শয্যা প্রস্তুত করা হয়েছে।
গত ৩১ জানুয়ারি করোনার ৪ লাখ ৫৬ হাজার ডোজ ভ্যাকসিন চট্টগ্রামে এসে পৌঁছে। সিভিল সার্জন জানিয়েছেন, প্রায় ৩ লাখ ভ্যাকসিন উপজেলাগুলোতে পাঠানো হয়েছে। বাকিগুলো নগরীর বিভিন্ন কেন্দ্রের জন্য রাখা হয়েছে।
করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে দুর্বল প্রচারণার বিষয়ে জানতে চাইলে সিভিল সার্জন বলেন, ‘অনলাইনে নিবন্ধন হচ্ছে। যারা কেন্দ্রে আসবেন, সেখানেও নিবন্ধনের সুযোগ আছে। গণমাধ্যমে প্রচারণা চলছে। অপপ্রচারের মাধ্যমে কেউ যাতে বিভ্রান্ত না হয়, সেদিকেও আমরা খেয়াল রাখছি।’
সারাবাংলা/আরডি/এমআই