Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

উত্তরাখণ্ডে হিমবাহ ধস: ২৬ মরদেহ উদ্ধার, নিখোঁজ ১৭১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২১:৩০

ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যের চামলি জেলার জোশিমঠে হিমবাহ ধসের ঘটনায় ২৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এখনও নিখোঁজ রয়েছেন ১৭১ জনেরও বেশি মানুষ। খবর দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

রোববারের (৭ ফেব্রুয়ারি) এ ঘটনায় অলকনন্দা ও ধউলিগঙ্গা নদীতে হঠাৎ বন্যা দেখা দিয়েছে। প্রবল পানির তোড়ে পাঁচটি ঝুলন্ত সেতু ভেসে গেছে। ঘরবাড়ি এবং নিকটবর্তী এনটিপিসি বিদ্যুৎ কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঋষিগঙ্গার কাছে একটি ছোট জলবিদ্যুৎকেন্দ্রও ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম।

বিজ্ঞাপন

ঘটনাস্থলে জাতীয় ও রাজ্য দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী কাজ করছে। একইসঙ্গে, ভারত-তিব্বত সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কয়েকটি দলও ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয়েছে। উদ্ধার কাজে অংশ নিতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ৬০০ সদস্য এবং দেশটির নৌবাহিনী সাতটি ডুবুরি দল পাঠিয়েছে।

যে ১৭১ জন নিখোঁজ রয়েছেন তাদের মধ্যে এনটিপিসি এবং ঋষিগঙ্গার শতাধিক কর্মী, আরেকটি সুড়ঙ্গে আরও প্রায় ৩০ জন আটকা পড়ে রয়েছেন বলে এনডিটিভি জানিয়েছে।

এ ব্যাপারে কলকাতা থেকে প্রকাশিত আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, চামলি জেলার তপোবনের কাছে একটি বিদ্যুৎপ্রকল্পের সুড়ঙ্গের মধ্যে কাজ করছিলেন ১৬ শ্রমিক, বন্যার সঙ্গে আসা কাদা ও পাথরে ওই সুড়ঙ্গের মুখ বন্ধ হয়ে যায়। তাদের বেঁচে থাকার সম্ভবনা নিয়ে প্রবল আশঙ্কার মধ্যেই তল্লাশি অভিযান শুরু করেন ভারত-তিব্বত সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর সদস্যরা। কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় তাদের সবাইকেই উদ্ধার করা সম্ভব হয়। প্রায় আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ ওই সুড়ঙ্গ থেকে তাদের উদ্ধারে রাতভর কাজ করে উদ্ধারকারী দলগুলো।

নিকটবর্তী আরেকটি সুড়ঙ্গে আরও প্রায় ৩০ শ্রমিক আটকা পড়ে আছেন। তাদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। তবে শেষ খবর পর্যন্ত তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি উদ্ধারকারীরা। এ পর্যন্ত ২৬ মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আহত অন্তত ছয় জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় রাতে ভারতের জাতীয় সংকট ব্যবস্থাপনা কমিটি (এনসিএমসি) এক বৈঠকের পর জানায়, কেন্দ্রীয় পানি কমিশন থেকে পাওয়া তথ্যে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে এই মূহুর্তে নদীর নিম্নপ্রবাহে বন্যার কোনো আশঙ্কা নেই। নদীর বেড়ে যাওয়া পানির উচ্চতাও স্বাভাবিক হয়ে এসেছে বলে জানিয়েছেন তারা। আশপাশের গ্রামগুলোও আর বিপদের ঝুঁকিতে নেই বলে বৈঠকের পর জানিয়েছে এনসিএমসি।

ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে মেডিকেল টিম পাঠানো হয়েছে। জোশিমঠে ৩০ শয্যার একটি হাসপাতাল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এর পাশাপাশি শ্রীনগর, ঋষিকেশ, জলিগ্রান্ট ও দেরাদুনের হাসপাতালগুলোকে তৈরি থাকতে বলা হয়েছে। ঋষিকেশ ও হরিদ্বারে লোকজনকে গঙ্গা নদীর তীরে যাওয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

এর আগে, ২০১৩ সালে উত্তরাখণ্ডের কেদারনাথে কয়েকদিনের প্রবল বৃষ্টির পর হঠাৎ বন্যা এবং ভূমিধসের ঘটনায় পাঁচ হাজার ৭০০ লোকের মৃত্যু ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। ২০০৪ সালের প্রলয়ংকরী সুনামির পর এটি ছিল ভারতের অন্যতম ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এ ঘটনায় তিন হাজার ৫৮১ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত বিখ্যাত কেদারনাথ মন্দিরে একটি অংশ ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।

২০১৯ সালে করা এক গবেষণায় দেখা গেছে, বৈশ্বিক উষ্ণায়ণের কারণে ২১ শতক শুরু হওয়ার পর থেকে হিমালয়ের হিমবাহগুলো দ্বিগুণ গতিতে গলছে। জলবায়ু পরিবর্তন হিমালয়ের হিমবাহগুলোকে দ্রুত সঙ্কুচিত করে তুলছে, ফলে সংলগ্ন দেশগুলোর শত শত কোটি মানুষের পানি সরবরাহ হুমকির মধ্যে পড়তে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা।

সারাবাংলা/একেএম

উত্তরাখণ্ড নিখোঁজ মরদেহ উদ্ধার হিমবাহ ধস

বিজ্ঞাপন

নতুন বার্সেলোনায় মুগ্ধ মেসি
২৩ নভেম্বর ২০২৪ ১০:৫৫

মাদকের টাকার জন্য মা'কে খুন
২৩ নভেম্বর ২০২৪ ০৮:৫৭

আরো

সম্পর্কিত খবর