Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন: মোদির হাতে ‘রামকার্ড’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২২:০৫

পশ্চিমবঙ্গে আসন্ন নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে ভোটাররা ‘রামকার্ড’ দেখাবেন বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। খবর ডয়চে ভেলে।

রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) হলদিয়ার জনসভায় মোদি বলেন, পশ্চিমবঙ্গ এবার মমতাকে রামকার্ড দেখাবে। তিনি বলেছেন, বাংলার মানুষ ফুটবল ভালোবাসেন। তাই ফুটবলের পরিভাষায় বললে, তৃণমূল একের পর এক ফাউল করছে। অপশাসন, দুর্নীতি, চাঁদাবাজির ফাউল। মানুষ সব দেখতে পাচ্ছে। বাংলার মানুষ তৃণমূলকে রামকার্ড দেখাতে চলেছে।

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্য থেকে স্পষ্ট, পশ্চিমবঙ্গে তার তুরুপের তাস হবে, শ্রীরাম। এমনকি, মোদির জনসভা থেকেও বারবার ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি উঠেছে। মোদির মুখেও বারবার উঠে এসেছে রাম নাম।

বক্তব্যের এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পিসি-ভাইপোর জন্য যারা তৃণমূলে থাকতে পারছেন না, তারা দলকে রাম রাম করে এখানে জয় শ্রীরাম করতে চলে এসেছেন। এরপর অনেক বিশেষজ্ঞই মনে করছেন, পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভার আসন্ন নির্বাচন রামময় হয়ে উঠবে।

এ ব্যাপারে প্রবীণ সাংবাদিক সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায় ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, বিজেপি এবার অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনিকে হাতিয়ার করবে। তারা গ্রামে গ্রামে এ ধ্বনি ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে।

তিনি স্মৃতি থেকে বলেন, ১৯৮৪ সালে দিল্লি গিয়ে দেখেছেন, ‘জয় শ্রীরাম’ ছিল সেখানকার সম্ভাষণের ভাষা। কিন্তু রামজন্মভূমি আন্দোলনের সময় ‘জয় শ্রীরাম’ হয়ে যায় রণ হুংকার। পশ্চিমবঙ্গেও বিজেপি’র মুখে এটা রণহুংকারই। নরেন্দ্র মোদির ভাবমূর্তি এবং রামনামকে নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ জয় করতে চাইছে বিজেপি।

বিজ্ঞাপন

এরা আগে, ২৩ জানুয়ারি নেতাজির ১৫০ তম জন্মবার্ষিকীতে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বক্তৃতা শুরু করার সঙ্গেসঙ্গেই ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি ওঠে। মুখ্যমন্ত্রী তখন প্রতিবাদ জানিয়ে খুব সংক্ষিপ্ত ভাষণ দিয়ে বসে পড়েন।

তার যুক্তি ছিল, ভিক্টোরিয়ার অনুষ্ঠান সরকারি বা কোনো রাজনৈতিক দলের অনুষ্ঠান নয়। সেখানে কেন এই স্লোগান উঠবে? তারপর এ নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি। কিন্তু বিজেপি’র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষসহ অন্য নেতারা প্রশ্ন তুলেছেন, রামনামে কী আপত্তি থাকতে পারে?

এছাড়াও, লোকসভা নির্বাচনের সময় বিজেপি কর্মীরা মমতার উদ্দেশে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দেওয়ায় স্লোগানদাতাদের মুখোমুখি হওয়ার জন্য ক্রুদ্ধ মুখ্যমন্ত্রী গাড়ি থেকে নেমে পড়েছিলেন। ওই ঘটনাকে সামনে রেখে সে সময় প্রচারে নেমেছিল বিজেপি। দলীয় সূত্র জানাচ্ছে, তার সুফলও তারা ঘরে তুলতে পেরেছিলেন। এবার কি সেই ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি বাংলায় বিজেপি’কে এগিয়ে রাখবে বা রাজনৈতিক সুবিধা করে দেবে?

এমন প্রশ্নের জবাবে বিজেপি নেতা সৌরভ সিকদার ডয়চে ভেলেকে বলেন, রাম হলেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রতীক। যখনই রাবণ অন্যায়ের শাসন তৈরি করে তখন রামই পারেন, তা ভেঙে দিয়ে ন্যায়ের শাসন তৈরি করতে। পশ্চিমবঙ্গে রাম ছিলেন, আছেন, থাকবেন। পশ্চিমবঙ্গে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে রামই প্রতীক হিসাবে থাকবেন।

তবে সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করছেন, পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচনের ক্ষেত্রে দলের সংগঠন একটা বড় বিষয়। কোনো সন্দেহ নেই, রামকে হাতিয়ার করে এবং লোকবল, অর্থবল, ক্ষমতাবল ব্যবহার করে একটা হাওয়া তুলে দিতে পেরেছে বিজেপি। কিন্তু, নির্বাচনে শ্রীরামের বাইরে আরও অনেকগুলি প্রাসঙ্গিক বিষয় থাকবে। সেখানে যে দল ভালো করতে পারবে, তারাই এগিয়ে থাকবে।

সারাবাংলা/একেএম

তৃণমূল নরেন্দ্র মোদি পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন বিজেপি মমতা ব্যানার্জি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর