পুলিশ ক্যাডার থেকে ওসি নিয়োগের সুপারিশ দুদকের
৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২২:৪৩
ঢাকা: থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পুলিশ ক্যাডার থেকে নিয়োগ দিতে রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সরাসরি পুলিশ ক্যাডার থেকে ওসি নিয়োগ দিলে দুর্নীতি অর্ধেক কমে যাবে বলেও মনে করছে সংস্থাটি।
সোমবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে বার্ষিক প্রতিবেদন-২০১৯ নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ এ কথা বলেছেন। কালো টাকা সাদা করার নামে ঘুষের টাকা বৈধ করা গ্রহণযোগ্য নয় বলেও এসময় মন্তব্য করেন তিনি।
দুদক চেয়ারম্যান জানান, থানা পর্যায়ে পুলিশের দুর্নীতি রোধে পুলিশ ক্যাডার থেকে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিয়োগের প্রস্তাব করেছে দুদক। পাশাপাশি সরকারি চাকরিতে সব পদোন্নতি পরীক্ষার মাধ্যমে দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পরিবেশসহ ১৪ খাতের দুর্নীতি রোধে মোট ৮৪টি সুপারিশ রয়েছে প্রতিবেদনে।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, কালো টাকা সাদার নামে ঘুষের টাকা বৈধ করা গ্রহণযোগ্য নয়। ঘুষের টাকা সাদা করবেন এটা অনৈতিক এবং বিব্রতকর। মাঠ পর্যায় থেকে উচ্চ পর্যায় পর্যন্ত দুর্নীতি বিদ্যমান, এতে কোনো সন্দেহ নেই। দেশের দুর্নীতির ব্যাপকতা রোধে আমরা কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছি। ২০১৯ সালে আমরা স্বাস্থ্য ও শিক্ষাখাতে ড্রাইভ শুরু করি। কারণ সাসটেইনেবল গোল পূরণে এই দুই খাতের দুর্নীতি রোধ করা দরকার ছিল।
ইকবাল মাহমুদ আরও বলেন, দুর্নীতির অন্যতম খাত রাজস্বখাত। এটা খুবই কঠিন এবং জটিল। এটা সহজ হলে সবাই ট্যাক্স দেবে। জাতীয় পরিচয়পত্র থাকলেই তার ট্যাক্স ফাইল থাকতে হবে। ২০১৯ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে স্বাস্থ্যখাত, নদী দখল, ওয়াসাসহ সরকারি ১৪টি প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি চিহ্নিত করে, তা বন্ধে সুপারিশ করেছে দুদক। রাষ্ট্রপতির কাছে পেশ করা বার্ষিক প্রতিবেদনে দুদকের পক্ষ থেকে সরকারি চাকরিতে সব পদোন্নতিতে পরীক্ষা প্রচলনের পাশাপাশি থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পুলিশ ক্যাডার থেকে নিয়োগের সুপারিশ করে দুদক।
দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, গত বছরের তুলনায় ২০১৯ সালে মামলা এবং চার্জশিটের পরিমাণ কিছুটা হলেও বেড়েছে। মামলা এবং চার্জশিটের গুণগত মান নিশ্চিত করার কারণেই কমিশনের মামলায় সাজার হার ৬৩ শতাংশ হয়েছে। আমরা চাই কমিশনের মামলায় সাজার হার হবে শতভাগ। তবে আশার কথা আমরা যতটা জেনেছি ২০২০ সালে শুধু কমিশনের মামলায় সাজার হার ৭৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সমন্বিত সামাজিক আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। দুদক এক্ষেত্রে প্লাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে।
মতবিনিময় সভায় দুদক কমিশনার ড. মো. মোজাম্মেল হক খান বলেন, দুদক বিগত বছরগুলোতে মূলত প্রশাসনিক সংস্কারের মাধ্যমে দুর্নীতি প্রতিরোধ কৌশল পরিচালনা করছে। প্রশাসনিক কৌশলে দুর্নীতি প্রতিরোধ করা সহজ।
দুদক কমিশনার এ এফ এম আমিনুল বলেন, আমরা দিবা-রাত্রি পরিশ্রম করেছি। মামলার অনুসন্ধান-তদন্তের নথি পর্যালোচনা করছি। তারপরেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। মামলায় সাজার হার বাড়ছে।
অন্যান্যের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন, দুদকের সচিব ড. মুহা. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, র্যাকের সভাপতি মহিউদ্দীন আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক আহমেদ ফয়েজ।
সারাবাংলা/এসজে/এমআই