Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রাপা প্লাজার সোনার দোকানে চুরি: চোর ছিল ৪ জন, সবার মুখে মাস্ক

উজ্জল জিসান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৯:৫৮

ঢাকা: রাজধানীর ধানমন্ডিতে অবস্থিত রাপা প্লাজার রাজলক্ষ্মী জুয়েলার্সে চুরির ঘটনায় পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ দেখে চোরদের শনাক্তের চেষ্টা করছে। পুলিশ বলছে, সিসিটিভি ফুটেজে চার জন চোরের উপস্থিতি দেখা গেছে। তাদের প্রত্যেকের মুখে ছিল মাস্ক। সিসিটিভি ফুটেজ থেকে তাদের চেহারা সরাসরি দেখা না গেলেও তাদের শনাক্ত করতে কাজ করছে পুলিশ। থানা পুলিশের পাশাপাশি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশও এ ঘটনার তদন্তে নেমেছে।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (রমনা জোন) উপকমিশনার আজিমুল হক সারাবাংলাকে বলেন, ঘটনার পর আমরা একটি সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধার করেছি। তাতে দেখা গেছে, রাপা প্লাজার দ্বিতীয় তলার বাথরুমের পাশের জানালার গ্রিল কেটে চার চোর ভেতরে প্রবেশ করে। এরপর তারা চাবি জাতীয় কিছু দিয়ে তালা খুলে ফেলে। এরপর রাজলক্ষ্মী জুয়েলার্সের ভেতরে ঢুকে বাইরে থাকা সোনার অলংকারগুলো নিয়ে যায়।

উপকমিশনার বলেন, চোরেরা কিছু ক্যাশ টাকাও নিয়ে গেছে ওই দোকান থেকে। এছাড়া পাশের দুই-তিনটি দোকান থেকেও নগদ টাকা নিয়ে গেছে বলে ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন। আমরা তদন্ত শুরু করেছি। আশা করছি চুরির ঘটনায় জড়িত সবাই ধরা পড়বে।

আরও পড়ুন- রাপা প্লাজার দোকান থেকে ৫০০ ভরি সোনা চুরি

রমনা জোনের এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা আরও বলেন, চোর ছিল মোট চার জন। তাদের প্রত্যেকের মুখে মাস্ক ছিল। পরনে ছিল প্যান্ট-শার্ট ও জ্যাকেট। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি জায়গায় অভিযান চালানো হয়েছে। কিছু তথ্য-উপাত্ত পাওয়া গেছে। সেগুলো নিয়ে কাজ করা হচ্ছে।

গোয়েন্দা পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, চুরির সময় ওই এলাকায় কোন কোন মোবাইল নম্বর সক্রিয় ছিল, কারা কারা কার কার সঙ্গে কথা বলেছেন— সব তথ্য নিয়ে বিশ্লেষণ চলছে। সিসিটিভি ফুটেজ থেকে পাওয়া চোরের ছবির সঙ্গে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের মেলানোর কাজও চলছে। মার্কেটের নৈশ প্রহরীসহ বেশ কয়েকজনকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, রাজলক্ষ্মী জুয়েলার্সের মালিকের দাবি— তাদের ৫০০ ভরি সোনা চুরি গেছে। এই বিপুল পরিমাণ সোনা বা সোনার অলংকার কোথায় বিক্রি হতে পারে বা কার কাছে যেতে পারে— এসব তথ্য জানতেও এরই মধ্যে পুলিশ সদর দফতর থেকে সারাদেশের পুলিশ কর্মকর্তাদের বার্তা দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

রাজলক্ষ্মী জুয়েলার্সের মালিক মহাদেব কর্মকার সারাবাংলাকে বলেন, শনিবার (৬ ফেব্রুয়ারি, ঘটনার দিন) রাত ১০টার দিকে দোকান বন্ধ করে বাসায় যাই। পরদিন সকাল ৯টার দিকে দোকান খুলতে এসে দেখি দোকানে চুরি হয়েছে। কোনো তালা কাটা বা ভাঙা হয়নি। দোকানের ভেতরের ড্রয়ারের তালাও খোলা হয়নি। দোকান থেকে আমাদের নিজেদের এবং গ্রাহকদের মিলিয়ে প্রায় ৫০০ ভরির মতো সোনা চুরি হয়েছে। এর সঙ্গে নিশ্চয় মার্কেটের কেউ জড়িত রয়েছে বলে মনে করছি।

জানতে চাইলে রাপা প্লাজা দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মোতাহার হোসেন বলেন, মার্কেটের বাইরে তিন জন নৈশ প্রহরী দায়িত্ব পালন করেন। কেউ ভেতরে দায়িত্বে থাকেন না। প্রত্যেক গলিতে মার্কেটের ব্যবস্থাপনায় সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। দুই তলার গ্রিল কেটে ভেতরে প্রবেশ করেছে। নৈশ প্রহরীদের এরই মধ্যে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। এ ঘটনায় কারা জড়িত, তাকে খুঁজে বের করার জন্য পুলিশকে বলা হয়েছে।

এর আগে, রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) চুরির ঘটনা টের পাওয়ার পর রাজলক্ষ্মী জুয়েলার্সের মালিকের ছোট ভাই অমিত কুমার সাহা সারাবাংলাকে বলেন, সকাল ৯টার দিকে দোকান খুলতে এসে বুঝতে পারি দোকানের তালায় সমস্যা। কোনো তালা কাটা নেই, অথচ কিছু তালা খোলা আবার কিছু লাগানো। কিছু হালকা লাগানো।

তিনি বলেন, ভেতরে গিয়ে দেখি সোনা ও সোনার অলংকার সব এলেমেলো পড়ে রয়েছে। অনেক বাক্স ফাঁকা। আমরা হিসাব মেলানোর আগেই পুলিশকে খবর দেই। পরে হিসাব করে জানতে পারি, সব মিলিয়ে কমপক্ষে ৫০০ ভরি সোনা ও নগদ দুই লাখ টাকা খোয়া গেছে।

মার্কেটেরই কোনো অভিজ্ঞ লোক এ ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে বলে সন্দেহ করছেন অমিত কুমার সাহা। তিনি বলেন, সামনে কেচিগেট ছিল। সেখানকার তালা চাবি দিয়ে খোলা হয়েছে বলেই মনে হচ্ছে। ভেতরের তালাও কোনোটিই কাটা বা ভাঙা হয়নি। আমরা সন্দেহ করছি, মার্কেটের কোনো অভিজ্ঞ লোকের হাত রয়েছে এখানে। নৈশ প্রহরী বাইরে যারা ছিলেন, তারাও তো কিছু বলতে পারছেন না।

সারাবাংলা/ইউজে/টিআর

রাজলক্ষ্মী জুয়েলার্স সোনা চুরি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর