Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

স্বাধীনতার ৫ দশকেও হাসপাতাল পায়নি বেনাপোল

লোকাল করেসপন্ডেন্ট
১০ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৮:২৫

বেনাপোল (যশোর): দেশের সবচেয়ে বড় স্থলবন্দর এলাকা বেনাপোলে স্বাধীনতার ৫০ বছরেও গড়ে ওঠেনি একটি হাসপাতাল। এতে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন পাসপোর্টযাত্রী, বন্দর ব্যবহারকারী ও এলাকাবাসী। বিশেষায়িত চিকিৎসা দূরের কথা, জরুরি চিকিৎসাসেবা পাওয়ারই কোনো ব্যবস্থা নেই এ অঞ্চলের মানুষের।

বেনাপোল স্থলবন্দর সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট বেনাপোল দিয়ে করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির আগে প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ হাজার পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত করতেন ভারতে। করোনা সংক্রমণ শুরু হলে এর পরিমাণ কিছুটা কমেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই ফের আগের পরিমাণেই যাত্রীরা যাতায়াত করবেন এই বন্দর দিয়ে। কিন্তু স্বাধীনতার পর পাঁচ দশক পেরিয়ে গেলেও এখানে কোনো হাসপাতাল গড়ে ওঠেনি। কাগজ-কলমে একটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থাকলেও বাস্তবে তার নেই অস্তিত্ব।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয়দের অভিযোগ, কোনো হাসপাতাল না থাকায় এ অঞ্চলের মানুষ সব ধরনের চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত। এককথায় এখানকার লক্ষাধিক পৌর নাগরিক তাদের অন্যতম একটি মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন দিনের পর দিন। অন্যদিকে কাস্টমস ও বন্দরে কর্মরত ১০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীকে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে থাকতে হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, বেনাপোল বন্দর ও পৌর এলাকায় প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। জরুরি সেবা দেওয়ার কোনো ব্যবস্থা না থাকায় দুর্ঘটনার শিকার ব্যক্তিদের নিয়ে যেতে হয় বেনাপোলের বাইরে। অনেক সময় দুর্ঘটনার শিকার হয়ে গুরুতর আহত ব্যক্তিদের প্রাণ চলে যায় পথেই। গত ছয় মাসে এই এলাকায় ৭৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১২ জন নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে ৯১ জন। গুরুত্বপূর্ণ এই বন্দর এলাকায় হাসপাতাল না থাকায় প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনায় চিকিৎসা না পেয়ে মারা যাচ্ছেন শ্রমিকরা। আর সাধারণ অসুস্থতা দেখা দিলেও সবাইকে ছুটতে হয় অন্য কোথাও। তাই বেনাপোলবাসীর জোরালো দাবি— অবিলম্বে বেনাপোল বন্দর এলাকায় একটি উন্নত মানের হাসপাতাল নির্মাণ করা হোক।

বিজ্ঞাপন

বেনাপোল বন্দরের হ্যান্ডলিং শ্রমিকরা বলছেন, শ্রমিকরা নাকি বন্দরের প্রাণ। কিন্তু বাস্তবে তার কোনো প্রমাণ নেই। শ্রমিক আঘাত পেলেও বন্দর কর্তৃপক্ষ দেখে না। একটি হাসপাতাল ও অ্যাম্বুলেন্সের কথা বন্দর পরিচালককে বার বার বলা হয়েছে। কিন্তু ‘দেখছি’ বলা ছাড়া আর কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

বেনাপোল ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি মালিক সমিতির সেক্রেটারি আজিম উদ্দিন বলেন, বন্দর এলাকায় একটি হাসপাতাল খুবই জরুরি। একটি হাসপাতাল থাকলে বন্দর ব্যবহারকারী প্রতিটি সংগঠন তাদের সেবার জায়গাটা খুঁজে পাবে। তাই দ্রুত একটি হাসপাতাল নির্মাণ করার জন্য সরকারপ্রধানের কাছে দাবি জানান তিনি।

কাস্টম ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়ার্ডিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, এটি দুঃখজনক যে দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থলবন্দর হলেও বেনাপোলে একটি হাসপাতাল নেই। এখানে দ্রুত একটি হাসপাতাল নির্মাণ করা জরুরি।

জানতে চাইলে যশোরের সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন সারাবাংলাকে বলেন, বেনাপোলে যদি বড় আকারের একটি হাসপাতাল স্থাপন করা যায়, তাহলে বন্দর ব্যবহারকারীসহ এ অঞ্চলের সব মানুষকে চিকিৎসাসেবা দেওয়া সম্ভব হবে। এরই মধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে এ বিষয়ে চিঠি পাঠিয়েছি।

সারাবাংলা/এনএস

বেনাপল স্বাধীনতার ৫ দশক হাসপাতাল

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর