Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দেশে খেলাপি ঋণ ৮৮ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা

গোলাম সামদানী,স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১০ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৮:০২

ঢাকা: করোনার কারণে পুরো বছরজুড়ে কোনো গ্রাহক ঋণ পরিশোধ না করলেও বছর শেষে দেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমেছে। গত বছরের ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমে দাঁড়িয়েছে ৮৮ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা। এটি মোট ঋণের ৮ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ এবং যা আগের নয় বছরে সর্বনিম্ন। সর্বশেষে তিন মাসে দেশে খেলাপি ঋণ কমেছে ৫ হাজার ৭০৬ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, গত সেপ্টেম্বর শেষে দেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৯৪ হাজার ৪৪০ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। এটি ছিল বিতরণকৃত মোট ঋণের ৮ দশমিক ৮৮ শতাংশ। এর আগে গত বছরের জুন পর্যন্ত  সময়ে দেশের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৯৬ হাজার ১১৬ কোটি টাকা। যা বিতরণকৃত ঋণের ৯ দশমিক ১৬ শতাংশ।

বিজ্ঞাপন

সূত্র জানায়, ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়। এতে করে সারাবিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও অর্থনৈতিক সংকট দেখা দেয়। এই সংকট মোকাবিলায় ঋণখেলাপিদের বেশকিছু সুবিধা দেয় সরকার। এসব সুবিধার মধ্যে ছিল ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋণের কিস্তি না দিলেও খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত করা যাবে না। বিশেষ করে গত ২৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করা হয়।

সার্কুলারে বলা হয়, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ের কোনো কিস্তি পরিশোধ না করলেও ঋণ গ্রহীতা খেলাপি হিসেবে বিবেচিত হবেন না। এই সময়ের মধ্যে ঋণ/বিনিয়োগের ওপর কোনোরকম দণ্ড, সুদ বা অতিরিক্ত ফি (যে নামেই অভিহিত করা হোক না কেন) আরোপ করা যাবে না। এসব কারণে গত বছর দেশে খেলাপি ঋণ বাড়েনি।

বিজ্ঞাপন

এছাড়াও প্রায় ৭০০ জন ঋণগ্রহীতা আদালত থেকে স্থগিতাদেশ নিয়ে রেখেছেন। এই ধরনের ঋণের পরিমাণ প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকা। ফলে তাদের ঋণ খেলাপি হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণ তথ্য ব্যুরোতে (সিআইবি) উল্লেখ করা যাচ্ছে না। এসব কারণে দেশে খেলাপি ঋণ কিছুটা কমেছে।

এ ব্যাপারে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘ব্যাংক ঋণ আদায় না হলেও করোনার কারণে কাগজে কলমে খেলাপি ঋণ কম দেখাতে পারছে ব্যাংকগুলো। এসব কারণে ব্যাংকের খেলাপি ঋণ কাগজে কলমে কিছুটা কমেছে। কিন্তু বাস্তবে দেশের খেলাপি ঋণের প্রকৃত চিত্র ভয়াবহ হতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘খেলাপি ঋণ কমছে- এটি নিয়ে কথা বলার সুযোগ নেই। কারণ করোনার কারণে গত বছর ঋণের কোনো কিস্তি পরিশোধ করতে হয়নি। প্রকৃত খেলাপি ঋণ কত তা বাস্তবে উপলব্ধি করতে সময় লাগবে।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, গত ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকগুলোর মোট ঋণ স্থিতি ১০ লাখ ৯৫ হাজার ৭৭২ কোটি টাকা। যার মধ্যে খেলাপি হয়েছে ৮৮ হাজার ২৮৩ কোটি টাকা। মোট খেলাপির ৭৬ হাজার ৭৫৬ কোটি টাকাই ক্ষতিজনক শ্রেণিকৃত। এছাড়া সন্দেহজনক শ্রেণিকৃত খেলাপি চার হাজার ৭৩০ কোটি টাকা। অবশিষ্ট ৬ হাজার ৭৯৫ কোটি টাকা সাব স্ট্যান্ডার্ড বা নিম্নমানে শ্রেণিকৃত।

গত ডিসেম্বর শেষে রাষ্ট্রীয় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ ৪২ হাজার ২৭৪ কোটি টাকা দাঁড়িয়েছে। এটি তাদের মোট ঋণের ২১ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ ৩৯ হাজার ৯১৬ কোটি টাকা। এটি তাদের মোট ঋণের ৪ দশমিক ৮২ শতাংশ। বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ ২ হাজার ৩২ কোটি টাকা। এটি তাদের মোট ঋণের ৫ দশমিক ৬৮ শতাংশ। এছাড়া বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ ৪ হাজার ৬২ কোটি টাকা বা ১৩ দশমিক ৩২ শতাংশ।

সারাবাংলা/জিএস/পিটিএম

২০২০ সাল করোনা খেলাপি ঋণ বাংলাদেশ ব্যাংক

বিজ্ঞাপন

খুলনায় যুবকের পেটে মিলল ইয়াবা
২২ নভেম্বর ২০২৪ ১২:০২

আরো

সম্পর্কিত খবর